Advertisement
E-Paper

তালিকায় নেই অর্জুনের বহু পড়শি

বাংলাদেশের তখনও জন্ম হয়নি। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ভিটেমাটি ছেড়ে যাঁরা ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাঁদের জন্য সেদিন শিবির খুলেছিল দিল্লির সরকার।

উত্তম সাহা

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৮ ০৫:২৫
ডি-ভোটার সংক্রান্ত এক অনুষ্ঠানে অর্জুনের মা আকলদেবী। শিলচরে। নিজস্ব চিত্র

ডি-ভোটার সংক্রান্ত এক অনুষ্ঠানে অর্জুনের মা আকলদেবী। শিলচরে। নিজস্ব চিত্র

বাংলাদেশের তখনও জন্ম হয়নি। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ভিটেমাটি ছেড়ে যাঁরা ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাঁদের জন্য সেদিন শিবির খুলেছিল দিল্লির সরকার। দু’বেলা খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল সেখানে। ১৯৫০-৫১ সালে তাঁদের জন্য জমিরও বন্দোবস্ত হয়। কাছাড় জেলার হরিটিকরে বিনা অর্থে বণ্টন করা ওই সব জমিতে গড়ে ওঠে বসতি। ডি ভোটার মামলায় সর্বস্ব হারিয়ে আত্মঘাতী অর্জুন নমঃশূদ্রও হরিটিকরে ১৯৫০ সালে বণ্টিত জমিতেই থাকতেন।

এ বার নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি)-র খসড়া প্রকাশ হতেই অর্জুনের পাড়ার মানুষ আশঙ্কিত, নতুন করে দেশ হারানোর আশঙ্কায়। ১৯৭১ সালকে ভিত্তিবর্ষ ধরে নাগরিকত্ব নির্ধারণের প্রক্রিয়া চলছে। অথচ ১৯৫০-এ প্রাপ্ত সরকারি জমির নথিপত্র দিয়েও হরিটিকরের বহু মানুষের নাম ওঠেনি। রতীশ দাস ও তাঁর দুই ভাই, নান্টু দাসেরা তিন ভাই, মনতোষ দাস, উষা দাস, রাখু দাস—পঞ্জিভুক্ত হতে পারেননি এমন অনেকেই।

রতীশবাবু জানিয়েছেন, শুধু জমি দেওয়া নয়, ১৯৫৬ সালে নাগরিকত্বের শংসাপত্র (সিটিজেনশিপ সার্টিফিকেট)-ও দেওয়া হয় তাঁদের। ১৯ বছরের মনোতোষ তাঁর ঠাকুর্দার শংসাপত্রটিই ‘লিগ্যাসি’ হিসেবে জমা করেছিলেন। লাভ হয়নি। রতীশবাবুর হাতেও রয়েছে তাঁর বাবার ‘সিটিজেনশিপ সার্টিফিকেট’। আর রাখু দাসের ‘লিগ্যাসি’ এলাকায় ঢুকলেই স্পষ্ট হয়ে যায়। বড় বড় হরফে সাইনবোর্ড— ১৯৫২ সালে এই জমি দান করেছেন অমূল্যকুমার দাস। রাখুবাবু সেই অমূল্যকুমারের নাতি হলে কী হবে, এনআরসি-কর্তাদের কাছে তার কোনও গুরুত্বই নেই। তবে ওই সব নথিপত্র একেবারে গৃহীত হয়নি, সব ক্ষেত্রে তাও বলা যায় না। মনতোষের বাবা মানিকের নাম উঠেছে ওই সার্টিফিকেটের জোরেই। একই ভাবে পঞ্জিভুক্ত হয়েছেন রতীশবাবুর পাঁচ সন্তান। নান্টু দাস, মন্টু দাস ও পিন্টু দাসের নাম নেই বটে, তালিকায় আছে তিন ভাইয়ের ছেলেমেয়েরা। রাখু দাসের নাম না উঠলেও ভারতীয় বলে স্বীকৃতি পেয়েছেন তাঁর মা, ভাই, সন্তানেরা।

কাছাড়ের জেলাশাসক এস লক্ষ্মণন অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, ১৯৭১ সালের আগের নথিপত্র থাকা কারও নাম এনআরসি থেকে বাদ পড়বে না। তাঁদের ফর্ম সংগ্রহ করে নতুন করে প্রয়োজনীয় নথি জমা দিতে হবে।

কিন্তু ঘরপোড়া মানুষের ভয় কি এত সহজে যায়?

Arjun Namasudra NRC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy