সুভাষচন্দ্র বসু সম্পর্কিত গোপন নথি প্রকাশ করার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে এনডিএ সরকার। নেতাজির প্রপৌত্র সূর্যকুমার বসুকে এই আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জানিয়েছেন, তিনি চান নেতাজিকে নিয়ে সত্য প্রকাশিত হোক।
স্বাধীনতার পরের দুই দশক ধরে (১৯৪৮ থেকে ১৯৬৮ পর্যন্ত) জওহরলাল নেহরুর প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়ে এবং তারও পরের ৪ বছর সুভাষচন্দ্র বসুর পরিবারের উপর নজরদারি করা হয়েছে। বিশেষ করে নেতাজির দুই ভ্রাতষ্পুত্র অমিয়নাথ বসু ও শিশিরকুমার বসুর গতিবিধির উপর নজরদারির রিপোর্ট কলকাতা থেকে দিল্লিতে পাঠানো হতো। সম্প্রতি ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর দু’টি গোপন ফাইলে এ সব কথা প্রকাশ্যে আসায় দেশ জুড়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। কংগ্রেস অভিযোগ এনেছে, নেহেরু-গাঁধী পরিবারের উপর কালি ছড়াতে চেষ্টা করছেন মোদী ও সঙ্ঘের লোকজন। আর দু’টি ফাইল প্রকাশের পরে এ বার সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে সরকারের কাছে রাখা বাকি গোপন নথিগুলিও প্রকাশ্যে আনার দাবি জোরালো ভাবে তুলে ধরছেন নেতাজির পরিবারের সদস্যরা। এই পরিস্থিতিতেই বার্লিনে মোদীর সঙ্গে দেখা করেন সূর্যকুমার বসু। প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে একটি সভার আয়োজন করেছিলেন জার্মানিতে ভারতের রাষ্ট্রদূত বিজয় গোখলে। এই অনুষ্ঠানের পরেই মোদীর সঙ্গে দেখা করেন সূর্যকুমার।
কী বললেন মোদী?
নেতাজির প্রপৌত্র জানান, ‘‘প্রধানমন্ত্রী চান সুভাষচন্দ্রকে নিয়ে সত্য প্রকাশিত হোক। ফলে গোপন ফাইল প্রকাশের বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন তিনি।’’এর আগে যদিও তথ্যের অধিকার আইনে করা প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রীর দফতর জানিয়েছিল, নেতাজি সম্পর্কিত গোপন ফাইল প্রকাশ করা সম্ভব নয়। কেননা, এগুলি প্রকাশিত হলে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কে প্রভাব পড়বে।
এখন নেতাজির পরিবার ও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ওঠা দাবি নিয়ে সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটা দেখার। দু’টি ফাইল প্রকাশের পরে ঝড় ওঠায় কংগ্রেস যদিও দাবি করেছে, বিজেপি রাজনৈতিক স্বার্থে অর্ধসত্য সামনে নিয়ে আসছে। প্রয়োজনে নেতাজি সম্পর্কিত সব ফাইল প্রকাশ করুক সরকার। ফাইল রয়েছে বিদেশ মন্ত্রকে ও প্রধানমন্ত্রীর দফতরে। এর আগে সংসদে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষে জানানো হয়েছে, নেতাজিকে নিয়ে ২৯টি গোপন ফাইল রয়েছে বিদেশ মন্ত্রকের হাতে। প্রধানমন্ত্রীর দফতরে রয়েছে ৬০টি গোপন ফাইল। এ থেকেই দু’টি ফাইল প্রকাশ করে ন্যাশনাল আর্কাইভে পাঠানো হয়েছে।