Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

জাল করা হচ্ছে নতুন নোটও

শুধু রং আর নকশাই বদলেছে। তাড়াহুড়োয় নতুন কোনও সুরক্ষা বৈশিষ্ট্য যোগ করা হয়নি। তাই চালু হতে না হতেই নতুন ২০০০ টাকার নোট জাল করে ফেলেছে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই।

প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৭ ০৩:২৪
Share: Save:

শুধু রং আর নকশাই বদলেছে। তাড়াহুড়োয় নতুন কোনও সুরক্ষা বৈশিষ্ট্য যোগ করা হয়নি। তাই চালু হতে না হতেই নতুন ২০০০ টাকার নোট জাল করে ফেলেছে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই।

পশ্চিমবঙ্গের মালদহ ও সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় বার বার নতুন জাল নোট ধরা পড়ার পরে পরিস্থিতির পর্যালোচনায় বসে নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত কর্তারা মনে করছেন, পুরনো নোটে যে সব সুরক্ষা বৈশিষ্ট্য থাকত, সেগুলি আগেই নকল করে ফেলেছিল পাকিস্তানের জাল নোটের ছাপাখানাগুলি। নতুন ২০০০ টাকার নোটে বাড়তি কোনও বৈশিষ্ট্য যোগ না হওয়ায় তা জাল করতেও সমস্যা হয়নি। এই সুরক্ষা বৈশিষ্ট্যগুলিই আসল নোটের সঙ্গে জাল নোটের ফারাক করে। মালদহে আটক জাল নোটের পরীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, ১৭টি সুরক্ষা বৈশিষ্ট্যের মধ্যে ১১টিই রয়েছে জাল নোটে। নোটে জলছাপ, মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর স্বচ্ছ ছবি থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নতুন গভর্নর উর্জিত পটেলের সই। এমনকী আসল নোট নাড়ানোর পতপত শব্দও জাল নোটে মিলছে।

নোট বাতিল করে নরেন্দ্র মোদী জাল নোট খতমের হুঙ্কার ছেড়েছিলেন। নতুন নোটও জাল হওয়ায় বিরোধীরা মোদীকে নিশানা করছেন। প্রশ্ন উঠেছে, কেন নতুন কোনও সুরক্ষা বৈশিষ্ট্য যোগ করা হল না? অর্থ মন্ত্রক সূত্রের জবাব, সময়ের অভাব। ছয় মাস আগে সিদ্ধান্ত হওয়ার পর মহীশূরের নোট তৈরির কারখানা কাজ শুরু করে। নতুন সুরক্ষা বৈশিষ্ট্য যোগ করতে অন্তত ৫ থেকে ৬ বছর প্রয়োজন। যা হয়েছিল ২০০৫-এ। তখন সব রকম নোটে জলছাপ, নোটের কাগজে নতুন ফাইবার, ‘আরবিআই’ লেখা ‘সিকিউরিটি থ্রেড’-এর মতো নতুন বৈশিষ্ট্য যোগ হয়।

জাল নোট রুখতে আমেরিকা তুলো ও লিনেনের মিশ্রণে তৈরি বিশেষ কাগজে ডলার ছাপে। এই কাগজে বিশেষ ধরনের ফাইবার থাকায় তা জাল করা কঠিন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নিরাপত্তা কর্তাদের বক্তব্য, এ দেশেও জাল নোট রুখতে কাগজের বদলে পরীক্ষামূলক ভাবে পলিমার দিয়ে বানানো প্লাস্টিকের নোট চালুর কাজ শুরু হয়েছে। জার্মানির ল্যুইসেন্থাল, ব্রিটেনের ডে লা রু, সুইডেনের ক্রেন, ফ্রান্স ও নেদারল্যান্ডসের আরজো উইগিন্স থেকে আমদানি করা কাগজে অধিকাংশ নোট ছাপা হয়েছে। সমস্যা হল, এর মধ্যে কিছু সংস্থা পাকিস্তানেও নোট ছাপার সরঞ্জাম রফতানি করে। পাকিস্তানে যেহেতু সরকারি মদতেই ভারতের নোট জাল করার কাজ হয় বলে অভিযোগ, তাই ওই কাগজ দুষ্কর্মে ব্যবহার করাও কঠিন নয়। এই আশঙ্কায় তিন বছর আগে দু’টি ইউরোপীয় সংস্থা থেকে কাগজ আমদানি বন্ধ করেছিল নয়াদিল্লি। ২০০০ টাকার সব নোট আবার দেশে তৈরি কাগজে ছাপা হয়েছে। তাতেও জাল হওয়া আটকানো যাচ্ছে না।

যে ভাবে জাল নোট বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকতে শুরু করেছে, তা-ই বা কী ভাবে আটকানো হবে? অর্থ মন্ত্রকে জোর গুজব, হঠাৎ করে ফের ২০০০ টাকার নোট বাতিল করে দেওয়া হতে পারে। নরেন্দ্র মোদী কী করবেন, তা অবশ্য কারও জানা নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Currency Notes
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE