Advertisement
১৯ মে ২০২৪

কো়ডারমায় ট্রেন থেকে লাইনে নবজাতক

কোডারমা স্টেশন তখন সবে ছেড়েছে দিল্লি-হাতিয়া সম্পর্ককান্তি এক্সপ্রেস। ঠিক তার পরই লাইন পরীক্ষা করতে গিয়ে চমকে উঠলেন স্টেশনের রেলকর্মী গুরুচরণ সিংহ।

এখন চিকিৎসাধীন। রেললাইনে পড়ে ছিল বাচ্চাটি। — নিজস্ব চিত্র

এখন চিকিৎসাধীন। রেললাইনে পড়ে ছিল বাচ্চাটি। — নিজস্ব চিত্র

আর্যভট্ট খান
রাঁচি শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:১১
Share: Save:

কোডারমা স্টেশন তখন সবে ছেড়েছে দিল্লি-হাতিয়া সম্পর্ককান্তি এক্সপ্রেস। ঠিক তার পরই লাইন পরীক্ষা করতে গিয়ে চমকে উঠলেন স্টেশনের রেলকর্মী গুরুচরণ সিংহ। তিনি দেখেন, দু’টি লাইনের মাঝখানে পড়ে রয়েছে এক সদ্যোজাত শিশু। কোলে তুলতেই কেঁদে ওঠে সে।

গত কাল বিকেলের ঘটনা। শিশুটির মা-বাবার খোঁজ আজও মেলেনি। কোডারমার স্টেশন-মাস্টার চন্দন কুমার কেশরী বলেন, ‘‘শিশুটিকে সঙ্গে সঙ্গেই স্টেশনের কাছাকাছি একটি চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, কিছু ক্ষণ আগেই তার জন্ম হয়েছে।’’ চন্দনবাবু জানান, প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, সম্পর্ককান্তি এক্সপ্রেসের কোনও শৌচাগারে শিশুটির জন্ম হয়েছে। তার পর কেউ তাকে শৌচালয়ের কমোডের গর্ত দিয়ে ফেলে দিতে পারে। কোনও ভাবে শিশুটি কমোডের গর্ত দিয়ে নীচে পড়েও যেতে পারে।

পর পর দু’বার প্রাণ বাঁচে শিশুটির। প্রথম বার ট্রেনের কামরা থেকে লাইনে পড়ে যাওয়ার পর। দ্বিতীয় বার ট্রেনের চাকায় পিষে যাওয়ার আগে। রেলকর্মী গুরুচরণ জানান, সম্পর্ককান্তি এক্সপ্রেস কোডারমার প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে যাওয়ার পর ওই লাইনে ঢোকার কথা ছিল পটনা-ধানবাদ গঙ্গা-দামোদর এক্সপ্রেসের। সিগন্যাল হয়ে গিয়েছিল। গুরুচরণ বলেন, ‘‘বাচ্চাটিকে দেখেই সিগন্যাল অফিসে ফোন করে ট্রেনটাকে আটকাতে বলেছিলাম। তখন লাইন পরীক্ষা করতে না গেলে কী যে হতো!’’

স্টেশনমাস্টার চন্দনবাবু জানান, শিশুটির পরিচয় জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। গোমোতে সম্পর্ককান্তি এক্সপ্রেস দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘‘কোডারমা স্টেশনে লাইনের যে জায়গায় বাচ্চাটিকে পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে সম্ভবত সম্পর্কক্রান্তির সংরক্ষিত কোনও কামরা ছিল।’’ তিনি জানান, ঘটনার পর সম্পর্কক্রান্তির সব সংরক্ষিত কামরার যাত্রীদের শিশু উদ্ধারের কথা জানান গোমোর রেল আধিকারিকরা। কিন্তু কারও কাছে এ বিষয়ে তথ্য মেলেনি।’’

আপাতত রেলের নজরদারিতে চিকিৎসা চলছে সদ্যোজাতের। পরিচয় অজ্ঞাত থাকলেও, তার বুকে কাগজে লেখা রয়েছে— কাঞ্চনদেবীর ছেলে। চিকিৎসাকেন্দ্রের অধিকর্তা বিকাশ চন্দ্র বলেন, ‘‘রেলের যে কর্মী শিশুটিকে নিয়ে এসেছিলেন, তিনি জানিয়েছিলেন, বাচ্চাটি তাঁর নাতি। জন্মানোর পর কোনও ভাবে পড়ে গিয়েছে। মায়ের নাম জানান কাঞ্চনদেবী। পরে আসল ঘটনাটি জানতে পারি।’’ চিকিৎসক বিকাশবাবু আরও বলেন, ‘‘শিশুটির মাথায় আঘাত লেগেছে। তবে অবস্থা এখন অনেকটাই স্থিতিশীল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Newborn baby Railtrack
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE