Advertisement
E-Paper

বছরে ৬০/৭০ লক্ষ টাকা রোজগার আলিগড়ের কচুরিয়ালার! এ বার দিতে হবে কর

ভোর হতে না হতেই ঝাঁপ ওঠে, গ্যাস জ্বালানো হয় ‘মুকেশ কচৌরি’র ঘুপচি দোকানে। ঝাঁপ বন্ধ হয় সেই রাতে। কালেভদ্রে জ্বরজ্বালা ছাড়া মুকেশ কোনও দিনই বন্ধ রাখেননি তাঁর দোকানের ঝাঁপ। গত ১২ বছর ধরে। কর-কর্তারা জানাচ্ছেন, গলির এক ধারে বসে এত দিন কচুরির দোকান চালালেও মুকেশ জানতেন না এই ব্যবসার লাভের কড়ি থেকে একটি অংশ কর হিসাবে জমা দিতে হয় সরকারের ঘরে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৯ ১৬:৩০
আলিগড়ের ‘মুকেশ কচৌরি’। ছবি- টুইটারের সৌজন্যে।

আলিগড়ের ‘মুকেশ কচৌরি’। ছবি- টুইটারের সৌজন্যে।

হ্যাঁ, মুকেশকে এ বার বড় অঙ্কের আয়কর দিতে হবে। গলিতে বসে কচুরি আর সামোসা বিক্রির জন্য!

আলিগড়ের ঘিঞ্জি গলির তস্য গলির এক ধারে শুধু কচুরি আর সামোসা বেচেই বছরে ৬০/৭০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা রোজগার হয় মুকেশের। বাণিজ্যিক কর দফতরের কর্তাদের হিসাব।

ভোর হতে না হতেই ঝাঁপ ওঠে, গ্যাস জ্বালানো হয় ‘মুকেশ কচৌরি’র ঘুপচি দোকানে। ঝাঁপ বন্ধ হয় সেই রাতে। কালেভদ্রে জ্বর-জ্বালা ছাড়া মুকেশ কোনও দিনই বন্ধ রাখেননি তাঁর দোকানের ঝাঁপ। গত ১২ বছর ধরে। কর-কর্তারা জানাচ্ছেন, গলির এক ধারে বসে এত দিন কচুরির দোকান চালালেও মুকেশ জানতেন না এই ব্যবসার লাভের কড়ি থেকে একটি অংশ কর হিসাবে জমা দিতে হয় সরকারের ঘরে। মুকেশ যেমন তা জানতেন না, তেমন কর-কর্তারাও জানতেন না শুধু কচুরি আর সামোসা ভেজেই বছরের পর বছর ধরে অন্তত ৬০ থেকে ৭০ লক্ষ টাকা করে ঘরে তুলছেন মুকেশ।

মুকেশের বাড়বাড়ন্ত হয়তো সহ্য হয়নি আশপাশে থাকা লোকজনের। এক জন তাই সরাসরি নালিশ ঠুকে দিলেন বাণিজ্যিক করের দফতরে। কর-কর্তাদের বললেন, ‘‘দেখুন তো গিয়ে কত রোজগার মুকেশের। ও কর দেয় আপনাদের?’’ তাতেই সম্বিৎ ফেরে কর দফতরের। জনাকয়েক অফিসার আশপাশের কয়েকটা দোকানে ছদ্মবেশে গিয়ে কয়েক দিন ধরে বসে নজর রাখতে শুরু করেন মুকেশের ছোট্ট দোকানের উপর। দেখতে থাকেন কখন দোকান খোলে, কখন বন্ধ হয়, সারা দিন ধরে মুকেশের দোকানের সামনে লাইনটা কত বড় থাকে, মুকেশের কেমন বিক্রিবাট্টা হয়। সেই সব দেখেটেখে কর-কর্তারা হিসাব কষে দেখেন, মুকেশের রোজগার বছরে ৬০ থেকে ৭০ লক্ষ টাকার কম হতে পারে না কিছুতেই।

এর পর কর-কর্তারা সরাসরি মুকেশের দোকানে যান। তাঁকে প্রশ্ন করেন। মুকেশ সরল ভাবে বলে দেন, বছরে তাঁর রোজগার ৬০ থেকে ৭০ লক্ষ টাকা তো বটেই, কখনও তা ১ কোটি টাকাও হয়ে যায়। মুকেশ স্বীকার করেন এর পরেও জিএসটি-র করদাতা হিসাবে তিনি নাম নথিভুক্ত করাননি, সেই সব নিয়মকানুন জানতেন না বলে। কচুরির ব্যবসা করলে জিএসটি, কর দিতে হয়, মুকেশ কবুল করেন, সেই সব তাঁর জানা ছিল না।

আরও পড়ুন- এই কটা টাকার জন্য সবজিওয়ালা ছুরি মেরে খুন করল ক্রেতাকে!​

আরও পড়ুন- শ্লীলতাহানির ব্যর্থ চেষ্টার জেরে গাড়ি চালিয়ে পিষে মারা হল দুই দলিত মহিলাকে​

মুকেশের কথায়, ‘‘আমরা খুবই ছাপোষা মানুষ। কর-টর দিতে হয় জানতাম না। কেউ আমাকে বলেওনি কোনও দিন।’’ রাজ্যের গোয়েন্দা দফতরের এক কর্তাও জানিয়েছেন, মুকেশের কিছুই জানা ছিল না। তিনি অকপটে সব স্বীকার করেছেন কর-কর্তাদের কাছে। জানিয়েছেন, কত তেল পোড়ে দিনে, গ্যাসের খরচ কতটা হয়, কচুরি, সামোসা বানানোর কাঁচা মাল কিনতে দিনে তাঁর কত খরচ হয় আর লাভই বা হয় কতটা।

রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের ডেপুটি কমিশনার আর পি ডি কৌন্তেয় বলেছেন, ‘‘ওঁকে সব কিছু বুঝিয়ে বলা হয়েছে। নোটিস দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে এ বার নাম নথিভুক্ত করাতে হবে জিএসটি করদাতাদের তালিকায়। উনি রাজিও হয়েছেন সঙ্গে সঙ্গেই। এও বলা হয়েছে, এ বার থেকে বাণিজ্যিক করও দিতে হবে ওঁকে। আর বকেয়া হিসাবে গত এক বছরের কর দিতে হবে ওঁকে।

Aligarh Kachori Wala Commercial Tax Department আলিগড়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy