রাষ্ট্রীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি)-র খসড়ায় নাম না থাকলেও উদ্বেগের কিছু নেই। ১৯৭১ সালের আগের পরিচয় সংক্রান্ত নথি থাকলে ফের আবেদন করা যাবে। সাংবাদিকদের ডেকে আজ এ কথা জানিয়েছেন কাছাড়ের জেলাশাসক এস বিশ্বনাথন।
তিনি জানান, শীঘ্রই এনআরসি-র খসড়া প্রকাশিত হবে। নথি পরীক্ষার কাজ প্রায় শেষ। ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে খসড়া প্রকাশিত হতে পারে। খসড়ায় অনেকের নাম ভুলে বাদ পড়তে পারে। হতে পারে নানা ভুলভ্রান্তি। তা নিয়ে যাতে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, সে জন্য রাজ্য সরকার প্রতিটি জেলায় নাগরিক সভার আয়োজন করেছে। শিলচরে আগামী কাল সকাল ১১টায় জেলা গ্রন্থাগার প্রেক্ষাগৃহে সেই সভা হবে। জেলাশাসক-সহ সংশ্লিষ্ট অফিসাররা সেখানে উপস্থিত থেকে নাগরিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন। একটাই লক্ষ্য, খসড়া প্রকাশের পর যেন পরিস্থিতি বিগড়ে না যায়।
জেলাশাসক বিশ্বনাথন এ দিন সাংবাদিকদের সঙ্গেও মত বিনিময় করেন। তিনি বলেন, ‘‘খসড়া প্রকাশের পর দাবি-আপত্তি জানানোর পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হবে। সে সময় যে কেউ ভুল সংশোধনের আবেদন করতে পারেন, নাম উঠানোর জন্যও আবেদন করা যাবে।’’
বিশ্বনাথনের কথায়, ‘‘আবেদনপত্র জমার পরও নাম না থাকলে তা কর্তৃপক্ষের নজরে এনে ফের প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা করলেই হল। কিন্তু কেউ প্রথমবারের মতো আবেদন করতে চাইলে তাঁকে উপযুক্ত কারণ দেখাতে হবে, কেন এত প্রচারের পরও তিনি আগে আবেদন করতে পারেননি।’’
অতিরিক্ত জেলাশাসক বি সি নাথ জানিয়েছেন, কাছাড়ে ১০৭টি সেবাকেন্দ্রে আবেদনপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকা, চা বাগান অঞ্চল, উপজাতি পুঞ্জি কোথাও বাদ ছিল না। মোট ৩ লক্ষ ৯৭ হাজার ৭০৫টি আবেদন পত্র জমা পড়েছে। এর মধ্যে ২২ হাজার ১১৮টি ছিল অনলাইনে। সমস্ত নথিপত্রের ৮৪ শতাংশ এরই মধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রতিদিন ৫ থেকে ৮ হাজার নথি পরীক্ষা হচ্ছে এখন। ফলে এই হার দ্রুত বাড়ছে। সব চেয়ে বেশি নথি জমা পড়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া জন্মের প্রমাণপত্র। ফলে পরীক্ষার কাজ তাদেরই বেশি করতে হচ্ছে।
ডি ভোটারদেরও এনআরসি-র জন্য আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, সে কথার উল্লেখ করে জেলাশাসক বিশ্বনাথন জানান, তবে তাঁদের নাম উঠবে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে ভারতীয় বলে ঘোষণার পরই।
খসড়া এনআরসি-তে নামের পাশে আদি বাসিন্দা বা ওআই উল্লেখ থাকতে পারে, এই ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘চূড়ান্ত রেজিস্ট্রারে সে সবের উল্লেখ থাকবে না। এখন শুধু উপজাতি ও চা জনগোষ্ঠীর আবেদনকারীদের নথি না থাকলেও যেন তাঁরা বঞ্চিত না হন, সে দিকে খেয়াল রেখে তাদের নামের পাশে ওআই লেখা হচ্ছে।’’
কাছাড়ে এনআরসি-র আবেদন করতে গিয়ে জাল নথি জমা দেওয়ার অভিযোগে ১২টি মামলার কথাও জেলাশাসক জানিয়েছেন। সেগুলি হয়েছে উধারবন্দ এবং কাটিগড়ায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy