বার্নার্ড সি মারাক
বুলেট ছেড়ে ব্যালটের লড়াইয়ে নামাটা মেঘালয়ে নতুন নয়। কিন্তু প্রাক্তন গারো জঙ্গি নেতা তথা এএনভিসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান বার্নার্ড সি মারাকের ক্ষেত্রে ভোটযুদ্ধে নামার কারণটা একটু অন্য রকম। তাঁর লড়াই আধার কার্ডের বিরুদ্ধে। এবং সেই লড়াইয়ে তিনি পাশে পেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
বাংলার সঙ্গে রক্তের যোগ বার্নার্ডের। বাবা বাঙালি। মা গারো। বাবা জ্যোতিষ্ময় দত্ত ছিলেন ডিএফও। সম্প্রতি মারা গিয়েছেন। আলপনা দেবীকে বিয়ে করে খ্রিস্টান হয়েছিলেন জ্যোতিষ্ময়। বার্নার্ড ছোটবেলায় গির্জার সঙ্গে হাত মিলিয়ে সমাজসেবা করলেও পরে হাতে তুলে নেন রাইফেল। পশ্চিম গারো পাহাড়ের ইডেন বাড়িতে ঘাঁটি করে দিনের পর দিন নাশকতা চালিয়েছেন তিনি। ২০১৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর অস্ত্র জমা দিয়ে সংঘর্ষবিরতিতে আসার পরেও কাজ পাননি। মেলেনি প্রতিশ্রুত পুনর্বাসন। তখন নিজেদের ঘাঁটিকেই করে তুলেছেন পর্যটন কেন্দ্র। গিয়েছিলেন বিজেপিতে। কিন্তু স্বভাব বিদ্রোহী বার্নার্ড গোমাংসের বিরুদ্ধে ফরমান মেনে নেননি। এলাকায় ‘বিফ পার্টি’ করে ঘোষণা করেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে গোমাংসের দাম কমানো হবে। অবধারিত ফল বহিষ্কার।
এই সময়েই রাজ্যে আধার কার্ড করানোর কাজ শুরু হয়। প্রতিবাদে খাসি পাহাড়ে তৈরি হয় যৌথ মঞ্চ। ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে আধার-বিরোধিতায় নামেন বার্নার্ডও। জানতে পারেন পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আধার কার্ডের বিরোধিতা করছেন। সেই সময়ে তৃণমূলও মেঘালয়ের ভোট ময়দানে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তৃণমূলে যোগ দেন বার্নার্ড। ২৭ ফেব্রুয়ারির ভোটে তিনি দক্ষিণ তুরা আসনের তৃণমূল প্রার্থী। তাঁর বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রার্থী পূর্ণ সাংমার কন্যা, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আগাথা সাংমা।
বার্নার্ডের বক্তব্য, “আধার আমাদের নজরদারিতে বাঁধতে চাইছে। ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত উপজাতি আমরা। এখানে কেন্দ্রের নজরদারি চলবে না। একমাত্র মমতা দিদি এর বিরুদ্ধে সরব। তাই আমি তাঁর দলের হয়েই লড়তে নামছি।” সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, “২০১৪ সালের শান্তি চুক্তি অনুযায়ী উপজাতি পরিষদের স্বশাসন দিতে হবে। কয়লা ও চুনাপাথর খননের উপরে নিষেধাজ্ঞাও তুলতে হবে। কারণ মাটির নীচে থাকা সম্পদে একমাত্র মেঘালয়বাসীরই অধিকার।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy