প্রতীকী ছবি
রাম নবমীতে গোষ্ঠী সংঘর্ষের আট দিন পরে মধ্যপ্রদেশের খরগোনে প্রথম মৃত্যু নথিভুক্ত হল। রবিবার রাতে ইব্রিশ খানের পরিবার সেখান থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে, ইন্দোরের হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তাঁর দেহ শনাক্ত করেছে। পরিজনেদের অভিযোগ, পুলিশ মৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাইছিল। পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, খরগোনে ফ্রিজার না থাকায় দেহ ইন্দোরে রাখা হয়।
বছর তিরিশের ইব্রিশ স্থানীয় পুরসভায় কাজ করতেন। বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী এবং নাবালক ছেলে। গত ১০ এপ্রিল, সংঘর্ষের দিন থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। ঘটনার চার দিন পরে, ১৪ এপ্রিল রাতে একটি খুনের মামলা রুজু হয়। এফআইআর থেকে জানা যাচ্ছে, ১১ এপ্রিল খরগোনেরই আনন্দনগর এলাকার সুতোকল থেকে অশনাক্ত একটি দেহ উদ্ধার হয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শী এক মহিলাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, তিনি রাত একটা-দেড়টা নাগাদ আক্রমণের শব্দ পেয়েছিলেন। ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে দেখেন, সাত-আট জন পালিয়ে যাচ্ছে।
যে পুলিশকর্মী অজ্ঞাতপরিচয় লোকজনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করেছিলেন, ঘটনাচক্রে বারো ঘণ্টা আগে তিনিই ইব্রিশের ভাই ইখলাকের অভিযোগের ভিত্তিতে একটি নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করেন। এক পুলিশ আধিকারিক সোমবার বলেন, ‘‘কাল পরিবার ইব্রিশকে শনাক্ত করেছে। তাঁর মৃত্যু হয়েছে মাথায় গুরুতর আঘাতের জেরে।’’ ইখলাক জানিয়েছেন, ইব্রিশ ইফতারের আয়োজন করতে মসজিদে গিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, দাদাকে শেষ দেখা যায় ১০ এপ্রিল সন্ধ্যায়, খরগোন থানার পুলিশ হেফাজতে। অভিযোগ করেছেন, পুলিশ এবং স্থানীয় কিছু লোকজন খুন করেছে ইব্রিশকে।
দেহের শনাক্তকরণের জন্য পরিবারকে ডাকতে এক সপ্তাহ কেন লাগল পুলিশের, সেই প্রশ্ন তুলেছেন ইখলাক। তাঁর দাবি, সংবাদমাধ্যমের কাছে যাওয়ার কথা বলার পরেই পুলিশ ইব্রিশের মৃত্যুর বিষয়টি বলে। তাঁর কথায়, ‘‘রবিবার রাতে এক পুলিশকর্মী আমার কাছে আসেন। তিনিই বলেন, দাদার দেহ ইন্দোরের মর্গে রাখা আছে।’’ দেহে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন তাঁরা লক্ষ করেছেন বলে জানিয়েছেন ইখলাক।
খরগোনের ঘটনার পরে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দিকে আঙুল তোলেন মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ঘটনায় অভিযুক্তদের বাড়ি এবং দোকানেও বুলডোজার নিয়ে অভিযান চলে। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জামাতে-উলেমা-ই-হিন্দ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দীর্ঘস্থায়ী পদক্ষেপ যাতে না করা হয় এবং শাস্তিমূলক পদক্ষেপে আবাসিক বাসস্থান না ভাঙা হয়— সে জন্য কেন্দ্র এবং সমস্ত রাজ্যকে উপযুক্ত নির্দেশ দিক কোর্ট।
টুইটে জামাতে-উলেমা-ই-হিন্দের সভাপতি মৌলানা আরশাদ মাদানি বলেছেন, “এ সব সংখ্যালঘুদের, বিশেষ করে মুসলিমদের ধ্বংস করার জন্য শুরু হয়েছে। বুলডোজারের বিপজ্জনক রাজনীতির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy