E-Paper

‘ভারত ছাড়ো’র ধুয়োয় গান্ধীকে শ্রদ্ধা দু’পক্ষেরই

সংসদীয় দলের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দলীয় সাংসদদের ৯ অগস্ট ভারত ছাড়ো আন্দোলনকে স্মরণ করার নির্দেশ দিয়ে প্রচারের সুর বেঁধে দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২৩ ০৬:৩৩
parliament.

বুধবার ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের বর্ষপূর্তির দিনে সেই ‘ভারত ছাড়ো’ ডাকে দফায় দফায় গর্জে উঠল সংসদ। ছবি: পিটিআই।

আজকের দিনে ১৯৪২-এ ব্রিটিশদের নিশানা করে ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন মহাত্মা গান্ধী। আজ বর্ষপূর্তির দিনে সেই ‘ভারত ছাড়ো’ ডাকে দফায় দফায় গর্জে উঠল সংসদ। বিজেপি সাংসদেরা যখন লোকসভার কক্ষে ‘দুর্নীতি’, ‘পরিবারবাদ’, ‘তোষণের রাজনীতি’ ভারত ছাড়ার ডাক দিয়েছে, তখন বিরোধী কংগ্রেস নেতৃত্ব পাল্টা আওয়াজ তুলেছে যারা মণিপুর নিয়ে নীরব, যারা মূল্যবৃদ্ধি, পেট্রোপণ্যের বর্ধিত দাম নিয়ে নীরব, যারা আদানির সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে নীরব, তাদের উচিত ভারত ছাড়া। পাশাপাশি সংসদের গান্ধী মূর্তির সামনে ‘রঘুপতি রাঘব রাজা রাম’ গানে গলা মেলান বিরোধী সাংসদেরা।

গত কাল সংসদীয় দলের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দলীয় সাংসদদের আজকের ৯ অগস্ট ভারত ছাড়ো আন্দোলনকে স্মরণ করার নির্দেশ দিয়ে প্রচারের সুর বেঁধে দেন। সেই নির্দেশ অনুযায়ী আজ স্মৃতি ইরানি থেকে অমিত শাহ-লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বলার সময়ে ‘দুর্নীতি-পরিবারবাদ-তোষণের রাজনীতি ভারত ছাড়ো’ বক্তব্যে সরব হন। গলা মেলান অন্য এনডিএ সাংসদেরা। মূলত বিরোধী ইন্ডিয়া শিবিরকে আক্রমণ করতেই ওই শব্দবন্ধ বেছে নিয়েছিল বিজেপি। সামাজিক মাধ্যমে ‘ভারত ছাড়ো’ নিয়ে সরব হন দলের নেতা-মন্ত্রীরা। মোদী টুইটে লেখেন, ‘‘যারা ভারত ছাড়ো আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন তাঁদের সম্মান জানাচ্ছি। ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রশ্নে মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে হওয়া ওই আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। আজ গোটা ভারত এক সুরে বলছে, দুর্নীতি ভারত ছাড়ো। পরিবারবাদ ভারত ছাড়ো। তোষণের রাজনীতি ভারত ছাড়ো।’’

আজ ইন্ডিয়া দলের নেতারা সংসদের গাঁধী মূর্তিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। জয়রাম রমেশ টুইট করে বলেন, ‘যারা সেই সময়ে ব্রিটিশদের সহযোগী ছিল, আজ তারাই ভারত ছাড়ো-র কথা বলছে। আসলে মণিপুর থেকে মূল্যবৃদ্ধি, আদানির সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে যারা নীরব, তাঁদের ভারত ছাড়াই উচিত।’ নরেন্দ্র মোদীর এ নিয়ে টুইট করা নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার বা কংগ্রেসের মণিকম টেগোরেরা। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘আরএসএস কোনও দিনই ভারত ছাড়ো আন্দোলনে অংশ নেয়নি। যারা প্রাক্তন আরএসএস, তাঁদের উচিত নিজেদের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাওয়া। সঙ্ঘের প্রাক্তন ‘প্রচারক’ নরেন্দ্র মোদীর উচিত ভারত ছাড়ো নিয়ে জ্ঞান দেওয়ার আগে সে দিনের জন্য ক্ষমা চাওয়া।’’

আজ বিজেপি সাংসদ রবিশঙ্কর প্রসাদ দাবি করেন, দিল্লিতে ইন্ডিয়া গেটে যে নেতাজির মূর্তি বসানো হয়েছে সেখানে আজ পর্যন্ত কোনও ফুল দিতে দেখা যায়নি তৃণমূল নেত্রী মমতা বা ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। পাল্টা তৃণমূল জানায়, পশ্চিমবঙ্গ সরকার নেতাজির জন্মদিনে রাজ্যে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে। নেতাজি সম্পর্কিত ৬৪টি গোপন ফাইল জনসমক্ষে এনেছে। তৃণমূল বলেছে, ২০২২-এ নেতাজি ও আইএএন-এ সংক্রান্ত প্রজাতন্ত্র দিবসের ট্যাবলো মোদী সরকার কোনও কারণ ছাড়াই বাতিল করাতেই স্পষ্ট, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সম্মান দেওয়ার প্রশ্নে তারা কতটা আন্তরিক।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

BJP Congress

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy