উনিশের ভাষা-শহিদদের স্মরণে বরাকের অন্যান্য অংশের সঙ্গে সঙ্গে প্রস্তুতি নিচ্ছে হাইলাকান্দিও। জেলার বিভিন্ন সংগঠন উনিশের ভাষা-শহিদ উপলক্ষ্যে নানান কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
মাতৃভাষা সুরক্ষা সমিতির উদ্যোগে সকাল থেকেই শুরু হচ্ছে এক গুচ্ছ অনুষ্ঠান। প্রভাত ফেরী দিয়ে দিনের সূচনা হবে। এরপর দিনভর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বাংলা ভাষাকে নিয়ে নানান প্রতিযোগিতা। এ বার সমিতি উনিশে স্মরণে একটি ক্যুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এই ‘উনিশের ক্যুইজ’-এর বিষয় অবশ্যই উনিশের ভাষা-শহিদদের ঘিরে।
বিভিন্ন সংস্থা-সংগঠন নিজেদের মতো করে শহিদ স্মরণের রূপরেখা তৈরি করেছে। পাচগ্রাম থেকে রামনাথপুর— জেলার প্রান্তে প্রান্তে শহিদ স্মরণের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। ১৯৬১ সালে মাতৃভাষা ‘বাংলার’ অধিকার আদায়ের দাবিতে শিলচরের তারাপুর রেলস্টেশনে আয়োজিত সত্যাগ্রহে পুলিশ নির্মমভাবে গুলি চালায়। এগারো জন সত্যাগ্রহী সেদিন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। তাঁদের স্মরণে ১৯ শে মে-কে ‘উনিশের ভাষা শহীদ দিবস’ হিসেবে পালন করেন বরাকের বাঙালিরা। তাঁদের স্মরণে সে দিন সন্ধ্যায় বরাক উপত্যকার ঘরে ঘরে মা-বোনরা প্রদীপ জ্বালিয়ে স্মরণ করবেন শহিদদের। প্রদীপ জ্বলবে দোকান দোকানে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও।
হাইলাকান্দিতে উনিশে কেন্দ্রীয় ভাবে পালন করতে উদ্যোগী হয়েছে বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংকৃতি সম্মেলন। সম্মেলন সকাল ৮ টায় প্রভাত ফেরীর মাধ্যমে দিনের অনুষ্ঠানের সূচনা করা হবে। প্রভাত ফেরীর পর শহরের শহিদ-স্মারকে এগারোজন ভাষা-শহিদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করবেন হাইলাকান্দির সাধারণ মানুষ। এরপর মাতৃভাষার বিভিন্ন গিক নিয়ে একটি আলোচনা সভায় অংশ নেবেন সম্মেলনের কেন্দ্রীয় কর্মকর্তা-সহ বিদগ্ধ জনেরা। সারাদিন ধরেই চলতে থাকবে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বসবে সাহিত্যবাসরও। সন্ধ্যায় ‘আনন্দধারা’ সাংস্কৃতিক সংস্থা পরিবেশন করবে উনিশের ভাবধারায় একটি পথনাটিকা। উনিশের প্রাক্ কালে হাইলাকান্দি প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে, ১৮-র সন্ধ্যায় শহিদ স্মরণে শহর পরিক্রমায় বেরোবে একটি মশাল মিছিল। গান-কবিতা সঙিগী হবে এই মশাল মিছিলের। কৃষ্টি সাহিত্য মঞ্চ একটি আলপনা প্রতিযোগিতার আযোজন করেছে। শহরের রাজপথে আলপনার মাধ্যমে বাঙালির সংস্কৃতি তুলে ধরবেন তাঁরা।