জৈনদের ব্যবহারের জন্য শৌচাগার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিল পুরসভা। —ফাইল ছবি
মহারাষ্ট্রের মিরা ভাইন্দর শহরে শুধু মাত্র জৈনদের জন্য আলাদা শৌচাগার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিল পুরসভা। বিতর্কের মাঝে তড়িঘড়ি সেই কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
গত ১২ অগস্ট ওই পুরসভার তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছিল বিশেষ এই শৌচাগার তৈরির পরিকল্পনার কথা। বলা হয়েছিল, প্রভাগ সমিতি এলাকার একটি সেতুর নীচে নতুন একটি শৌচাগার তৈরি করা হবে। শুধু মাত্র জৈন ধর্মাবলম্বীরা এই শৌচাগার ব্যবহার করতে পারবেন। আগামী দু’মাসের মধ্যে এই শৌচাগারটি তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে বলেও জানিয়েছিল পুরসভা। গোটা প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল আট লক্ষ টাকা।
পুরসভা এই বিজ্ঞপ্তি জারি করার পর থেকেই শুরু হয়েছিল বিতর্ক। শৌচাগার কেন কোনও বিশেষ সম্প্রদায়ের জন্যেই নির্দিষ্ট করা থাকবে, তা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন। বিতর্কের মুখে পিছু হঠে পুরসভা। সংবাদমাধ্যমের তরফে মিরা ভইন্দর পুরসভার কমিশনার দিলীপ ধোলেকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এমন শৌচাগার তৈরির পরিকল্পনা করা ঠিক হয়নি। বড় ভুল হয়েছিল। পরিকল্পনাটি এখন বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।’’
পাশাপাশি তিনি এ-ও বলেন, ‘‘এই বিষয়টিকে নিয়ে অনাবশ্যক বিতর্ক হচ্ছে। লোকে এখানেও রাজনৈতিক রং লাগানোর চেষ্টা করছেন। শৌচাগার তো সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্যেই।’’
তবে ভুল যে হয়েছিল, তা স্বীকার করে নিয়েছেন দিলীপ। তিনি এ-ও নিশ্চিত করেছেন, ভবিষ্যতে পুরসভা কোনও বিশেষ সম্প্রদায়ের জন্য নির্দিষ্ট করে কোনও শৌচাগার বানাবে না। শহরের ইঞ্জিনিয়ার দীপক খাম্বিত জানিয়েছেন, জৈনদের যদি আলাদা করে শৌচাগার প্রয়োজন হয়, তাঁরা নিজেরাই তা বানিয়ে নেবেন।
পুরসভার এই পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করেছেন বিরোধীরা। এনসিপি নেতা অরুণ কাদাম বলেছেন, ‘‘কেউ এ ভাবে বিশেষ কোনও সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা করে শৌচাগার বানাতে পারে না। যদি তা করা হয়ে থাকে, আমরা তার বিরোধিতা করছি। সমস্ত করদাতারই এই ধরনের শৌচাগারের সুবিধা পাওয়া উচিত। আমরা শহরের একাধিক এলাকায় জনগণের সুবিধার্থে শৌচাগার তৈরির আবেদন জানিয়েছি।’’
শহরের প্রাক্তন মেয়র শিবসেনার জ্যোৎস্না হাঁসালে বলেছেন, ‘‘এই ধরনের শৌচাগার আমজনতার জন্য। কোনও বিশেষ সম্প্রদায়ের জন্য নয়।’’ অন্য দিকে স্থানীয় বিধায়ক (নির্দল) গীতা জৈন বলেছেন, ‘‘পরিকল্পিত শৌচাগারটি সব জৈনদের জন্য ছিল না। জৈন ধর্মগুরুদের জন্য ভাবা হয়েছিল, যাঁরা নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে চলেন। পরিকল্পনাটিকে ভুল বোঝা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy