প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ভারতের শিশুরা ‘জন্ম থেকেই রাজনীতিক’ (বর্ন পলিটিশিয়ান)। তারা জানে, কী ভাবে কাজটা হাসিল করে নিতে হয়।
তাঁর এই গভীর বিশ্বাসের কথা শুক্রবার ছাত্রছাত্রীদের বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দিল্লির তালকোটরা স্টেডিয়ামে। তাঁর ‘পরীক্ষা পর চর্চা’য়।
‘চায়ে পে চর্চা’ করে নিজে ‘পরীক্ষা’য় উতরেছিলেন অনায়াসে, সাড়ে তিন বছর আগে দেশের সাধারণ নির্বাচনে।
এ বার পরীক্ষায় উতরে যাওয়ার অব্যর্থ ‘মন্ত্র’ দেশের আপামর ছাত্রছাত্রীদের শেখালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর ‘পরীক্ষা পর চর্চা’য়।
বললেন, ‘‘পরীক্ষাটাকে উৎসব হিসাবে নাও। কোনও ভয় রাখবে না মনে। অনর্থক উদ্বেগ মোটেই ভাল নয়। মনটাকে খুশিতে রাখবে। লড়াকু (ওয়ারিয়র) হও। কিন্তু চিন্তাক্লিষ্ট (ওরিয়ার) হয়ে পড়ো না, হয়ে থেকো না। এটাই ঝকঝকে মার্কশিটের গোপন রহস্য!’’
আরও পড়ুন- প্রতিরক্ষা বরাদ্দে ব্রিটেনকে ছাপিয়ে প্রথম পাঁচে ভারত
প্রধানমন্ত্রীর আরও পরামর্শ, পরীক্ষাটাকে যেন একে অন্যের সঙ্গে রেষারেষির জায়গা বলে মনে না করেন ছাত্রছাত্রীরা। আর অভিভাবকদেরও তিনি বলেছেন, একটা পরীক্ষায় অন্য ছাত্র বা ছাত্রীর চেয়ে তাঁদের সন্তান একটু পিছিয়ে পড়লেই তাঁরা যেন হতাশ হয়ে না পড়েন।
অভিভাবকদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ
অভিভাবকদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ‘প্রেসক্রিপশন’- ‘‘প্রত্যেকটি শিশুই একে অন্যের চেয়ে আলাদা। স্বতন্ত্র। কোন দিকে শিশুদের উৎসাহ সেটা জানার চেষ্টা করা উচিত। নিজেদের স্বপ্নটাকে শিশুদের উপর দিয়ে জোর করে সফল করার চেষ্টা ভুল। শিশু সন্তানদের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশুন।’’
মা ভৈ! আত্মবিশ্বাসই আসল জিনিস: প্রধানমন্ত্রী
সাফল্যের জন্য ছাত্রছাত্রীদের এ দিন আরও একটি ‘মন্ত্র’ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। বলেছেন, আত্মবিশ্বাসটাই জীবনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি জরুরি। মা ভৈ! আত্মবিশ্বাসটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। এটা কোনও ওষুধের বড়ি নয়। কোনও ভেষজও নয়। এমন কোনও ট্যাবলেট নেই, যা খেলে সঙ্গে সঙ্গে আত্মবিশ্বাস জন্মে যায়। একটা একটা করে দিন যায়, আর তিলে তিলে বেড়ে ওঠে আত্মবিশ্বাস।
আরও পড়ুন- বিরোধী জোটে হ্যাঁ, নেতায় এখনই নয়
প্রধানমন্ত্রী মোদী স্বীকার করেছেন, এই আত্মবিশ্বাসের শিক্ষাটা তাঁর স্বামী বিবেকানন্দের বাণী পড়ে নেওয়া। মনে করিয়ে দিয়েছেন বিবেকানন্দের কথা- ‘‘তোমাদের উপর সব দেবদেবীর আশীর্বাদ থাকতে পারে। কিন্তু নিজের উপর বিশ্বাস না থাকলে সে সবের কোনও অর্থই নেই।’’
সেই আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার পরামর্শ দিতে গিয়েই এ দিন কিছুটা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী। স্মরণ করেন তাঁর শিক্ষকদের। তাঁদের দেওয়া পরামর্শের কথা কবুল করেন তিনি।
বুদ্ধিমত্তা ভাল, কিন্তু আবেগকে বিসর্জন দিয়ে নয়...
মনে করিয়ে দেন, বুদ্ধিমত্তা (ইন্টেলিজেন্ট কোশেন্ট বা ‘আইকিউ’) দেখাতে গিয়ে আবেগ (ইমোশনাল কোশেন্ট বা ‘ইকিউ’)-কে বিসর্জন দেওয়া হলে হিতে বিপরীত হয়!
প্রধানমন্ত্রী মোদী এ দিন ছাত্রছাত্রীদের বলেন, ‘‘তোমাদের জীবনের সার্বিক উন্নতির জন্যই খুব প্রয়োজন আবেগ বা ইমোশনাল কোশেন্টের। এটা সম্পর্কগুলিকে গড়ে তুলতে আর ধরে রাখতে খুব সাহায্য করে। যে বুদ্ধিমত্তায় আবেগ মিশে নেই, তা দিয়ে কোনও কাজ হয় না। আইকিউ দিয়ে হয়তো জীবনে সফল হওয়া যায়। কিন্তু ইকিউ জীবনের উদ্দেশ্যগুলি পূরণ করে। এক জন হয়ে ওঠাটা তো খুব স্বাভাবিক একটা প্রক্রিয়া। কিন্তু যে রাস্তায় অল্প মানুষ হেঁটেছেন, সেই রাস্তা বেছে নেওয়াটাই শ্রেয়। কাঙ্খিতও।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy