Advertisement
০১ এপ্রিল ২০২৩

জামশেদপুরে থানার ওসিই মোবাইল চোর!

অপারেশনের কথা জানিয়ে ভূষণবাবু বলেন, ‘‘আমার মতো আনাড়ি লোকও যদি মানুষের পকেট থেকে মোবাইল হাতিয়ে নিতে পারে, তবে মানুষের অবশ্যই আরও সতর্ক ও সচেতন হওয়া দরকার। নয়তো কপালে দুঃখ আছে।’’

অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।

অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৫১
Share: Save:

থানা থেকে বেরোলেন ওসি। সাধারণ পোশাকে। বাজারে এ দিক ও দিক ঘরতে ঘুরতে মানুষজনের পকেট থেকে টপাটপ মোবাইল হাতিয়ে নিতে শুরু করলেন। বাজারে তখন প্রচুর মানুষ, কেনাকাটায় ব্যস্ত। কয়েক ঘণ্টায় সুচারু ভাবে এক এক করে দশটি মোবাইল সাফ করলেন ওসি।

Advertisement

তার পর সেগুলি নিয়ে ওসি সোজা ফিরে এলেন জামশেদপুরের বিরসানগর থানায়। রেখে দিলেন ড্রয়ারে।

গত ক’মাস ধরে মোবাইল চোরের এক চক্র সক্রিয় বিরসানগরের সানডে বাজারে। মানুষের অসবাধনতার সুযোগ নিয়ে পকেট থেকে মোবাইল হাতিয়ে নিচ্ছে তারা। কয়েক বার ধরাও পড়ছে চোর। মানুষকে সচেতন করতে বাজার ও এলাকায় লিফলেট দিয়ে প্রচারও চালিয়েছে পুলিশ। কিন্তু কাজ হয়নি। মোবাইল চোরদের দৌরাত্ম্য ক্রমেই বাড়ছে। কিন্তু তা বলে এক দিনে দশটা মোবাইল চুরি! শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়।

থানায় অভিযোগ জানাতে আসেন খোয়া যাওয়া মোবাইলের মালিকেরা। থানায় গিয়ে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে অভিযোগ তোলেন সানডে বাজারের বাজার সমিতির সদস্যরা। সঙ্গে বাজারের অন্যান্য মানুষও। থানায় যখন এ নিয়ে রীতিমতো উত্তেজনা, ওসি ভূষণ কুমার তখন শান্ত ভাবে চুরি যাওয়া মোবাইলগুলো একে একে বার করে আনলেন। রাখলেন নিজের টেবিলে!

Advertisement

সকলেই থ! ব্যাপারটা কী?

এ বারে মুখ খুললেন ওসি। জানালেন, মানুষ জামা ও প্যান্টের পকেটে এমন ভাবে মোবাইল রাখছেন, যে তা দেখা যাচ্ছে। এখন স্মার্টফোন বেশ বড় হওয়ায় অনেক সময় তা পকেট থেকে কিছুটা বেরিয়েও থাকছে। ভূষণবাবু বলেন, ‘‘মানুষ যখন কেনাকাটায় ব্যস্ত, সেই সুযোগে পকেটমারের দল তাদের কাজ সারছে। তাই ঠিক করলাম মানুষকে সচেতন করতে একটু শিক্ষা দেওয়া দরকার।’’ যেমন ভাবা তেমন কাজ। ভূষণবাবু নেমে পড়লেন মোবাইল চোরের ভূমিকায়।

অপারেশনের কথা জানিয়ে ভূষণবাবু বলেন, ‘‘আমার মতো আনাড়ি লোকও যদি মানুষের পকেট থেকে মোবাইল হাতিয়ে নিতে পারে, তবে মানুষের অবশ্যই আরও সতর্ক ও সচেতন হওয়া দরকার। নয়তো কপালে দুঃখ আছে।’’

সচেতন হয়েছেন ওঁরা। বিরসানগরের বাসিন্দা বিজয় যাদব বললেন, ‘‘সত্যিই আর পকেটে এ ভাবে মোবাইল রাখব না। অন্যদেরও রাখতে বারণ করব।’’ সানডে বাজার সমিতির এক সদস্য বলেন, ‘‘আমরাও মানুষকে সচেতন করতে এ বার থেকে প্রচার চালাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.