পিতৃপক্ষের অবসান ঘটে দেবীপক্ষ শুরু কাল থেকে। পরশু থেকে মনোনয়ন পেশ করার হিড়িক পড়ার কথা মহারাষ্ট্র নির্বাচনে। তার আগে শাসক ও বিরোধী শিবিরে জোটের জট খুলতে কালকে এসপার-ওসপার চেষ্টা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। দুই শিবির থেকেই ইঙ্গিত, জোট হবে কি না, সেই ছবিটা কাল রাতের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে যাবে।
মহারাষ্ট্রে ১৫ বছর ধরে একটানা সরকার চালাচ্ছে কংগ্রেস-এনসিপি জোট। কিন্তু আসন সমঝোতা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই টানাপড়েন চলছে সেই জোটে। আজ সন্ধ্যায় বিষয়টি নিয়ে দশ নম্বর জনপথে সনিয়া-রাহুলের সঙ্গে বৈঠক করেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চহ্বাণ ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মানিক রাও ঠাকরে। পৃথ্বীরাজ একলা চলার পক্ষে। জোট হলেও এনসিপি-কে ১২৪টির বেশি আসন ছাড়তে রাজি নন তিনি। কিন্তু হাইকম্যান্ডের নির্দেশে, কাল সকালে ফের তিনি ও মানিক রাও ফের এনসিপি নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলে স্থির হয়েছে। ওই বৈঠকে এনসিপি-র তরফে থাকবেন প্রফুল্ল পটেল, শরদ পওয়ারের ভাইপো তথা উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ার এবং ছগন ভুজবল। আজ প্রফুল্ল পটেল প্রথমে জানান, কংগ্রেসের প্রস্তাব সন্তোষজনক নয়। পরে অবশ্য তিনি টুইট করে জানিয়েছেন, কাল কোনও সমঝোতা হলেও হতে পারে। জোট সম্পর্কে সদর্থক বার্তা দিয়েছেন শরদ পওয়ারের মেয়ে সুপ্রিয়া সুলেও। তবে কংগ্রেস সূত্র বলছে, ১৩০ টি-র বেশি আসনের দাবিতে এনসিপি অনড় থাকলে জোট ভেঙেও যেতে পারে।
বিরোধী বিজেপি-শিবসেনা শিবিরেও আজ দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। আজই কোনও রফাসূত্র না বেরোলেও বিজেপি নেতারা বলেছেন, তাঁরা মহারাষ্ট্রে এখনও জোটের পক্ষে। তবে একলা লড়ার প্রস্তুতিও রাখছে বিজেপি। কারণ, দলের ধারণা জোট না হলেও এ বার মহারাষ্ট্রে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে নির্বাচিত হবে বিজেপি। তাতে ভোটের পর প্রয়োজনে এনসিপি-কে সঙ্গে নিয়ে সরকার গঠনের বিকল্প পথও খোলা থাকবে।
মহারাষ্ট্র বিধানসভায় ২৮৮টি আসন রয়েছে। প্রথমে অমিত শাহদের দাবি ছিল, শিবসেনা ও বিজেপি ১৩৫টি আসনে লড়ুক। বাকি ১৮টি আসন ছেড়ে দেওয়া হোক অপেক্ষাকৃত ছোট দলগুলিকে। গত কাল অবশ্য নিজেদের দাবি থেকে সরে এসে ১৩০টি আসনের লড়ার দাবিতে সরব হয় বিজেপি শিবির। কিন্তু ১২০টির বেশি আসন কোনও ভাবেই ছাড়তে রাজি নন শিবসেনা নেতৃত্ব। এই অচলাবস্থা কাটাতে আজ সকালে ফের নতুন করে আলোচনা শুরু হয় দু’পক্ষের। বিজেপি উদারতা দেখালেও শিবসেনা নিজেদের অবস্থানে যে রকম অনড় তাতে দিনের শেষে কিছুটা হলেও সুর নরম করেছেন অমিত শাহেরা। বিজেপি-র এক নেতার কথায়, “শিবসেনা ১২৫টি আসন ছাড়তে রাজি হয়ে গেলে জটিলতা কেটে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।”
তবে জোটের ক্ষেত্রে শিবসেনার মূল দাবি নিয়ে বিশেষ অগ্রগতির লক্ষণ আজও দেখা যায়নি। শিবসেনার তরফে অন্যতম দাবি হল, উদ্ধব ঠাকরেকে মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। কিন্তু বিজেপি তাতে এখনও রাজি নয়।
কংগ্রেস-এনসিপি-র মতোই কাল বিজেপি-শিবসেনা নেতারাও মুখোমুখি বৈঠকে বসবেন। মহারাষ্ট্র নির্বাচনে এ বার শাসক ও বিরোধী শিবিরে জোট হবে কি হবে না সম্ভবত তা কালই পরিষ্কার হয়ে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy