Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
China

QUAD: কোয়াড বৈঠকে নিশানায় চিন

ভারতের সীমান্তে নিঃশ্বাস ফেলা বেজিংকে চাপে রাখতে এই উদ্যোগ নয়াদিল্লির জন্য কার্যকরও বটে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:৩৭
Share: Save:

তিন দিন পর প্রথম চতুর্দেশীয় অক্ষ বা কোয়াডভুক্ত রাষ্ট্রগুলির শীর্ষ নেতারা মুখোমুখি বৈঠকে বসছেন ওয়াশিংটন ডিসি-তে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত একাধিপত্য খর্ব করতেই এই বৈঠক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ছাড়াও থাকবেন কোয়াড সদস্য আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা।

কূটনৈতিক সূত্রের মতে, এই উদ্যোগের নিশানা যে চিন সে ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। ভারতের সীমান্তে নিঃশ্বাস ফেলা বেজিংকে চাপে রাখতে এই উদ্যোগ নয়াদিল্লির জন্য কার্যকরও বটে। কিন্তু আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর, আমেরিকা তাদের যাবতীয় শক্তি চিনের বিরুদ্ধে কাজে লাগানোর যে আগ্রাসী নীতি নিয়েছে, তাতে আঞ্চলিক ভারসাম্য রক্ষায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা। এক দিকে, তাতে কোয়াড গোষ্ঠীর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, অন্যদিকে ফ্রান্সের মতো ভারতের কৌশলগত মিত্রের সঙ্গে নয়াদিল্লির মনান্তরের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। সূত্রের খবর, এই বিষয়টি নিয়ে কোয়াড বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইতে পারে ভারত।

আজ অবশ্য সাংবাদিক বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আগাম ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। ঘটনাটি হল, গত ১৫ তারিখ, প্রায় নিঃশব্দেই কোয়াড-এরই অন্যতম সদস্য অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা চুক্তি করে বসেছে আমেরিকা এবং ব্রিটেন। সেই চুক্তিও ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের আগ্রাসনকে নিশানা করেই। ওই চুক্তি (এইউকেইউএস) অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়া পরমাণু শক্তিধর সাবমেরিন (নিউক্লিয়ার সাবমেরিন) প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারবে। বাইডেনের কথায়, “গোটা বিশ্বে যে ভাবে নিরাপত্তার ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে সে দিকে তাকিয়েই এই চুক্তি।”

ওই চুক্তিতে চিন প্রবল অসন্তুষ্ট। সেটাই ছিল ওয়াশিংটনের লক্ষ্য। কিন্তু প্রশ্ন উঠে গেল, এরপর কোয়াডের আর কি অর্থ রইল? আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়া কোয়াডের সমান্তরাল ভাবে উচ্চপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ওই অঞ্চলে তাদের মতো এগোবে, সঙ্গে পাবে ব্রিটেনকেও। এ ছাড়াও গোটা প্রক্রিয়ায় ক্ষুব্ধ ফ্রান্স প্রকাশ্যেই প্রতিবাদ জানিয়েছে। এই চুক্তির ফলে তাদের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার বহু প্রতীক্ষিত সাবমেরিন চুক্তিটি ভেস্তে গিয়েছে। ফ্রান্সের অভিযোগ, গোটা বিষয়টিই তাদের অন্ধকারে রেখে করা হয়েছে।

বুধবার আমেরিকার বিমান ধরার আগে আজ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে প্রধানমন্ত্রী ফোনে কথা বলেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ-র সঙ্গে। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, আফগানিস্তান পরিস্থিতি, সন্ত্রাসবাদ, মাদক চোরাচালানের মতো বিষয়গুলি নিয়ে কথা হয়েছে দুই রাষ্ট্রনেতার। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারত এবং ফ্রান্সের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানো নিয়ে কথা হয়েছে মোদী-মাকরঁর। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, আমেরিকার কারণে ফ্রান্সের সঙ্গে কৌশলগত সুসম্পর্ক নষ্ট করতে রাজি নয় সাউথ ব্লক। আর তাই ওয়াশিংটন যাওয়ার আগে প্যারিসের সঙ্গে সম্পর্ককে ঝালিয়ে নেওয়ার এই প্রয়াস।

শ্রিংলা আজ অবশ্য বলেছেন, কোয়াডের সঙ্গে আমেরিকা-ব্রিটেন-অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা চুক্তির কোনও যোগ নেই। তাঁর কথায়, “কোয়াড তৈরি হয়েছে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগারীয় এলাকায় বিস্তীর্ণ বিষয়ের উপর কাজের জন্য। নিরাপত্তা সহযোগিতার পাশাপাশি, প্রতিষেধক সহযোগিতা, নতুন প্রযুক্তি, পরিকাঠামো, সমুদ্রপথে নিরাপত্তার মতো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিভিন্ন দেশের এটি একটি গোষ্ঠী। অন্য দিকে, ব্রিটেন-আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে যা ঘটেছে তা নেহাতই নিরাপত্তা চুক্তি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

China Afghanistan Crisis Joe Biden Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE