Advertisement
২০ মে ২০২৪

ব্যায়াম বিদ্যালয়ের সময় নিয়ে তোপের মুখে পুরপ্রধান নীহারেন্দ্র

ব্যায়াম বিদ্যালয় নিয়ে বিতর্কে জড়ালেন শিলচরের পুরপ্রধান নীহারেন্দ্র নারায়ণ ঠাকুর। এই বিদ্যালয়ের সঙ্গে জড়িত নাগরিকদের একাংশ নীহারবাবুর বিরুদ্ধে জেলাশাসকের কাছে নালিশ জানিয়েছেন। তাঁদের মূল অভিযোগ অবশ্য ব্যায়াম বিদ্যালয় দেখভালের দায়িত্বে থাকা পুরসদস্য মধুমিতা শর্মার বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলচর শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:০৬
Share: Save:

ব্যায়াম বিদ্যালয় নিয়ে বিতর্কে জড়ালেন শিলচরের পুরপ্রধান নীহারেন্দ্র নারায়ণ ঠাকুর। এই বিদ্যালয়ের সঙ্গে জড়িত নাগরিকদের একাংশ নীহারবাবুর বিরুদ্ধে জেলাশাসকের কাছে নালিশ জানিয়েছেন। তাঁদের মূল অভিযোগ অবশ্য ব্যায়াম বিদ্যালয় দেখভালের দায়িত্বে থাকা পুরসদস্য মধুমিতা শর্মার বিরুদ্ধে।

বিতর্কের সূত্রপাত পুরসভা পরিচালিত জাতীয় ব্যায়াম বিদ্যালয়ের গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে। শহরবাসীর একাংশ তাতে আপত্তি জানিয়েছিলেন। মধুমিতাদেবী তখন বলেন, ‘‘গাছ কাটা হয়নি। দালানবাড়ির সুরক্ষার জন্য ডালপালা ছাঁটা হয়েছে মাত্র।’’ পরে কাটা ডালপালা হদিশশূন্য হতেই আরেক প্রস্থ কথাবার্তা চলে।

জেলাশাসক এস বিশ্বনাথনকে স্মারকপত্র দিয়ে বিভাস দেব, ভাস্কর দত্ত, সুশীল পাল, মণি দেব বলেন— এর পরই ব্যায়াম বিদ্যালয়ে তাঁদের ঢোকা ঠেকাতে উঠেপড়ে লাগেন মধুমিতাদেবী। এত দিন রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ব্যায়াম করার সুযোগ মিললেও আচমকা রাত ৭টায় গেট বন্ধের ফরমান জারি হয়। তাঁদের অভিযোগ, গাছ কাটা নিয়ে যাঁরা কথা বলেছেন, তাঁদের অধিকাংশ শহরের ব্যস্ত মানুষ। কাজকর্ম সেরে সন্ধ্যার পর সেখানে গিয়ে একটু শরীরচর্চা করেন। তাঁদের বাধা দিতেই মধুমিতাদেবীর পরামর্শে নীহারবাবু নতুন সময়সূচি ঘোষণা করেন। তাতে তাঁদের শরীরচর্চায় সমস্যা হচ্ছে। এ ব্যাপারে ভাস্করবাবু, সুশীলবাবুরা জেলাশাসক বিশ্বনাথনের হস্তক্ষেপ দাবি করেন।

তাঁরা জানান, ১৯৪০ সালে শহরের কিছু মানুষ জাতীয় ব্যায়াম বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পুর-পরিদর্শক শরদিন্দু শেখর দেব সেই সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। বিভিন্ন সময় এখানকার প্রশিক্ষার্থীরা ভারোত্তোলন, যোগ-অনুশীলনে উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্র, ডাক্তারি-ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়ারা যেমন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, তেমনি শহরের বিশিষ্টজনেরাও এখানে শরীরচর্চার জন্য আসেন। কেউ শিক্ষক, কেউ ব্যবসায়ী, কেউ প্রশাসনিক কর্তা।

বিভাসবাবুরা জেলাশাসককে জানান, পরিচালনার দায়িত্বে থাকলেও পুরসভা ওই বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো উন্নয়নে কোনও ভূমিকা নেয়নি। যত ব্যায়াম-সরঞ্জাম রয়েছে, শহরের মানুষেরা চাঁদা দিয়ে, অনুদান সংগ্রহ করে সে সব কিনেছেন। এমনকী, দালানবাড়িটির যত্নের জন্য পুরসভা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এখনও সুপারভাইজরের কক্ষ ছাড়া কোথাও একটি পাখা নেই। শৌচাগারে আলোর ব্যবস্থা নেই। অভিযোগকারীদের আক্ষেপ, সে সব নিয়ে পুরসভা না ভেবে বিদ্যালয় খোলা রাখার সময় কমাতে তৎপর হয়ে উঠেছে।

তাঁরা বিদ্যালয়ের দেখভালের দায়িত্ব থেকে মধুমিতা শর্মার অপসারণেরও দাবি তুলেছেন। জেলাশাসককে জানিয়েছেন, এক জন মহিলার সামনে স্বল্প-বসনে তাঁদের শরীরচর্চা করতে সমস্যা হচ্ছে।

পুরপ্রধান নীহারেন্দ্র নারায়ণ ঠাকুর বলেন, ‘‘সব কিছুর একটা সময়সীমা থাকা দরকার। সকালে ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে। আবার বিকেল ৩টেয় খুলতে হয়। ফলে চৌকিদারকে ভোর ৫টায় আসতে হয়। ৭টার বেশি তাঁকে কাজ করানো যায় না।’’

শিলচরের পুরপ্রধান নীহারেন্দ্রবাবুর আরও বক্তব্য, মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এবং অন্য সময় আধঘণ্টা আগে বন্ধ করার সূচি স্থির হয়েছিল। কিন্তু শীত-গ্রীষ্ম সব সময় একদল লোক রাত ১১টার আগে ব্যায়াম বিদ্যালয় চত্বর ছাড়েন না। তাঁরা কেউ ব্যায়াম বা শরীরচর্চা করেন না, যান কেবল আড্ডা, গল্পগুজব করতে। তাই রাত ৭টায় বিদ্যালয় গেটে তালা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে অন্য কোনও বিষয় বা ঘটনার কোনও সম্পর্ক নেই বলেই তিনি দাবি করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Trees Students Yoga school
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE