নরেন্দ্র মোদীকে ‘ক্লিনচিট’ দেওয়ায় শরদ পওয়ারকে চাপে রেখে রাফাল নিয়ে বিরোধীদের একজোট করতে সক্রিয় হলেন রাহুল গাঁধী।
পওয়ারের বিরোধিতা করে এনসিপির দুই সাধারণ সম্পাদক তারিক আনোয়ার ও মুনাফ হাকিম দল ছাড়ার পরেই কংগ্রেস তাঁদের দলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিল। দলের নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গেকে দিয়ে পওয়ারকে ফোন করিয়ে রাহুল বুঝিয়ে দিলেন, মরাঠা স্ট্রংম্যানের বক্তব্য আদৌ ভাল ভাবে নেননি তিনি। যার জেরে পওয়ার নিজে মুখ না খুললেও সাংসদ-কন্যা সুপ্রিয়া সুলেকে দিয়ে বিবৃতি জারি করান। একই সঙ্গে রাহুলের নির্দেশে চন্দ্রবাবু নায়ডু, অখিলেশ যাদব, তেজস্বী যাদবদের
সঙ্গে কংগ্রেস নেতারা কথা বলেও রাফাল তদন্তে যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) গড়ার দাবি জোরালো করলেন। চাপের মুখে পওয়ার জানিয়েছেন, তিনি জেপিসির পক্ষে।
সনিয়া গাঁধীকে ‘বিদেশিনি’ আখ্যা দিয়ে কংগ্রেস ছেড়ে এনসিপি গড়েছিলেন পওয়ার। পি এ সাংমার সঙ্গে তারিক আনোয়ারই ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। কিন্তু রাফাল নিয়ে পাওয়ার মোদীকে ‘সন্দেহের ঊর্ধ্বে’ রাখায় তারিক ও মুনাফ দল ছাড়েন। তারিক বিহারের কাটিহার লোকসভা কেন্দ্র থেকেও পদত্যাগ করেন। যেটি পওয়ারের কাছে বড় ধাক্কা।
পওয়ারের ওই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে গত কালই রাহুলকে কোণঠাসা করতে নেমে পড়েছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। ক্ষুব্ধ রাহুল রাহুল মধ্যপ্রদেশ থেকেই খড়্গেকে কথা বলতে বলেন পওয়ারের সঙ্গে।
পওয়ার জানান, তাঁর বক্তব্য বিকৃত করে বিরোধী শিবিরে ফাটল ধরাতে চাইছে বিজেপি। কিন্তু কংগ্রেস নেতারা বলছেন, ‘‘মোদীর সঙ্গেই সখ্য বেশি পওয়ারের। তাঁর উপর মোদীর চাপও আছে। আগামীতে পওয়ার যদি বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁধেন, তাতেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।’’ তারিক অনেক দিন ধরেই আরজেডির সঙ্গে আলোচনা করছেন। গত কাল পওয়ারের ‘মোদী-প্রেম’-কে হাতিয়ার করে তিনি দল ছেড়েছেন। কংগ্রেস চাইছে, তারিক কংগ্রেসে এসে বিহারে একটি আসন নিরাপদ করুন।
সুপ্রিয়া সুলে রাতে জানান, পওয়ার রাফালের বিরোধিতাই করেছেন। প্রফুল্ল পটেলও পওয়ারের পক্ষে যুক্তি দেন। কিন্তু কংগ্রেসের প্রশ্ন, পওয়ার নিজে কেন ওই বক্তব্য প্রকাশ্যে খণ্ডন করছেন না? মরাঠা স্ট্রংম্যান যখন চাপে, রাহুল তার মধ্যে বাকি বিরোধীদের সঙ্গে নিয়ে আক্রমণ বাড়াতে তৎপর। তাঁর নির্দেশে কমলনাথ ফোন করেন অখিলেশকে। চন্দ্রবাবু, তেজস্বীর সঙ্গেও কথা হয় তাঁদের। কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘‘রাফালে মোদী হিমশিম খাচ্ছেন। পওয়ার তাতে জল ঢেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। বাকি বিরোধী দের নিয়ে এ বারে আরও আক্রমণাত্মক হবে কংগ্রেস।’’