নির্বাচনে ভোটগ্রহণের সিসিটিভি, ওয়েব কাস্টিং, ভিডিয়ো ফুটেজ ৪৫ দিন পরে মুছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আজ সে দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে রাহুল গান্ধী দাবি করলেন, এ থেকেই স্পষ্ট যে ‘ম্যাচ ফিক্সিং’ চলছে। নির্বাচনকমিশনকে নিশানা করে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর অভিযোগ, ‘‘ভোটার তালিকা চাইলে মেশিন রিডেবল ফরম্যাটে তা দেওয়া হবে না। আইন বদলিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ লুকিয়ে ফেলা হবে। ভোটের ছবি, ভিডিয়ো এখন আর এক বছর রাখা হবে না। পঁয়তাল্লিশ দিন পরেই মুছে ফেলা হবে। যার থেকেজবাব চাওয়ার, সে নিজেই প্রমাণ মুছে ফেলছে।’’
রাহুল গান্ধীর এই তোপের মুখে আজ নির্বাচন কমিশন সূত্রে বলা হয়েছে, কেউ কেউ ভোটের দিন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের ওয়েব কাস্টিংয়ের ভিডিয়ো ফুটেজ চাইছেন। নির্বাচনে নিরপেক্ষতার দোহাই দিয়ে এই ফুটেজ চাওয়া হলেও বাস্তবে এর ফলে ভোটারদের নিরাপত্তার সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ এই ভিডিয়ো থেকে কারা ভোট দিতে গিয়েছেন, কারা যাননি, তা বোঝা সম্ভব। যদি একটি রাজনৈতিক দল কোনও বুথে কম ভোট পায়, তা হলে কে ভোট দিয়েছে, কে ভোট দিতে যায়নি,তা ভিডিয়ো ফুটেজ থেকে জানাসম্ভব। ফলে যে সব ভোটার ভোট দেননি, তাঁরা হেনস্থা, হুমকি,সরকারি প্রকল্প থেকে বঞ্চনার শিকার হতে পারেন।
নির্বাচন কমিশন গত ৩০ মে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছিল, আগে যে ভোটগ্রহণের ছবি, ওয়েবকাস্টিং, সিসিটিভি, ভিডিয়ো ফুটেজ এক বছর সংরক্ষণ করার নিয়ম ছিল, তা কমিয়ে ৪৫ দিন করা হচ্ছে। সম্প্রতি এই সব ভিডিয়োর অপব্যবহার হয়েছে। সমাজমাধ্যমে ভুয়ো তথ্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাষ্য তৈরি করা হয়েছে। সেই কারণেই ৪৫ দিন পরে ছবি, ভিডিয়ো মুছে ফেলার নির্দেশ জারি করা হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রের বক্তব্য, ভোটের ফলাফল নিয়ে আপত্তিতুলে মামলা বা নির্বাচন পিটিশনফল প্রকাশের ৪৫ দিনের মধ্যেকরতে হয়। আদালত চাইলে কমিশন ভিডিয়ো ফুটেজ আদালতের হাতে তুলে দেবে। কিন্তু ৪৫ দিনের পরে আর যে হেতু মামলা করা যায় না, তাই তার পরে এই সব ভিডিয়ো ফুটেজের প্রয়োজনীয়তা নেই। ৪৫ দিনের পরে তা সংরক্ষণ করার কোনও আইনি বাধ্যবাধকতাও নেই। এত দিননির্বাচন কমিশন নিজস্ব সিদ্ধান্তেই এক বছর ভিডিয়ো ফুটেজ সংরক্ষণকরত। এ বার তা ৪৫ দিনের পরে মুছে ফেলা হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)