E-Paper

২২শে শঙ্করদেব স্মরণে রাহুল গান্ধী

অসমে বৈষ্ণব ধর্মের প্রবর্তক, চৈতন্যদেবের সমসাময়িক শঙ্করদেব সমাজকে সংকীর্ণতার ঊর্দ্ধে তুলেছিলেন। তিনি ছিলেন একাধারে ধর্মপ্রচারক, সমাজ সংস্কারক, কবি, গীতিকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:০২
rahul gandhi

রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।

মন্দিরেরই রাজ্য অসম। এখানে পুজো দেওয়ার কথা বললে প্রথমেই মনে আসে কামাখ্যার নাম। কিন্তু ২২ জানুয়ারির গন্তব্য বাছতে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পা ফেলল কংগ্রেস। কোনও হিন্দু মন্দির বা শক্তিপীঠ নয়, অযোধ্যায় রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার দিনে রাহুল গান্ধী পুজো দেবেন নগাঁও জেলার বরদোয়ায় শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের জন্মস্থান বটদ্রবা সত্রে।

অসমে বৈষ্ণব ধর্মের প্রবর্তক, চৈতন্যদেবের সমসাময়িক শঙ্করদেব সমাজকে সংকীর্ণতার ঊর্দ্ধে তুলেছিলেন। তিনি ছিলেন একাধারে ধর্মপ্রচারক, সমাজ সংস্কারক, কবি, গীতিকার। রাজ্যে বয়স্ক শিক্ষা, সামাজিক উন্নয়ন, পঞ্চায়েত ব্যবস্থার বীজ বুনে যান তিনি। সত্রীয় নৃত্যশিল্প, বৃন্দাবনী বস্ত্রশিল্প, বরগীত, অঙ্কীয় নাট বা ভাওনা, সত্র ব্যবস্থা, নামঘর-এ সবই ছিল শঙ্করদেবের অবদান। তাই নরেন্দ্র মোদী যে দিন রামমন্দিরের উদ্বোধন করবেন, সেই দিনের জন্য আদর্শ উপাসনাস্থল হিসেবে বটদ্রবাকেই বেছে নিলেন রাহুল।

ওই দিন বিরোধী নেতা-নেত্রীরা কে কী ভাবে কাটাচ্ছেন, তা এখন আলোচ্য বিষয়। কলকাতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বধর্ম সমন্বয় সভা ও সম্প্রীতি মিছিলের আয়োজন করেছেন। অরবিন্দ কেজরীওয়াল দিল্লিতে রবিবারই রামলীলা দেখবেন। জানিয়েছেন, ২২ তারিখের পরে তিনি সপরিবারে রামলালার দর্শনে যাবেন।

আমন্ত্রণ পেয়েও গান্ধী পরিবারের অযোধ্যা না যাওয়া নিয়ে তাদের তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। তিনি বলেন, ‘‘জওহরলাল নেহরুর আমল থেকেই গান্ধী পরিবার হিন্দু বিদ্বেষী। নেহরু নিজে সোমনাথ মন্দিরে যেতে চাননি। কংগ্রেস ভারতে হিন্দু সংস্কৃতি চায় না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কংগ্রেস নেতৃত্বকে আমন্ত্রণ জানানোই উচিত হয়নি। কিন্তু তারা তাও ফের এক বার কংগ্রেসকে ভুল শুধরে নেওয়ার সুযোগ দিয়েছিল। এ বারেও ব্যর্থ হল কংগ্রেস।’’

এমন আবহে আজ কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘ভারতের অন্যতম মহান ধর্মীয় নেতা ও সমাজ সংস্কারক শ্রী শঙ্করদেব আজও অসম তথা ভারতের অনুপ্রেরণা। তাঁর উদারনীতির শিক্ষা বর্তমানে আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। তাই ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার নবম দিনে, ২২ জানুয়ারি রাহুল গান্ধী শঙ্করদেবের জন্মস্থানে গিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাবেন।’’

রাহুল অসমের লখিমপুর সফর শেষ করে অরুণাচলে ঢোকেন। নিশি সম্প্রদায়ের টুপি পরিয়ে তাঁকে পাপুম পারে জেলায় স্বাগত জানানো হয়। সেখান থেকে তিনি যান দৈমুখ। পদযাত্রার পরে জনসভায় তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেসই অরুণাচলকে পূর্ণরাজ্য করেছে। কিন্তু এখানকার বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সংবাদমাধ্যম কথা বলে না। যুবকদের সেনায় ভর্তির পরেও অগ্নিপথ প্রকল্পের জেরে বেরিয়ে যেতে হয়েছে। চিন সীমান্তের মানুষেরও অনেক সমস্যা রয়েছে। সেই সব কথাই শুনতে, বলতে ও সংসদে তুলে ধরতে এসেছি।’’ কংগ্রেসের ভিডিয়োয় প্রচারিত বার্তায় রাহুল বলেন, ‘‘রাম মন্দিরের অনুষ্ঠানকে এক রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। আমি নিজের ধর্ম থেকে ফায়দা লোটার চেষ্টা করি না। আমরা সব ধর্মের সঙ্গে রয়েছি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Rahul Gandhi Congress

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy