Advertisement
E-Paper

ধমক খেলেন রত্না

শাট আপ! রাজনৈতিক সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যান বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে, এই মর্মেই ধমক দিয়ে উঠেছেন চেয়ারম্যান রামগোপাল যাদব। তাঁর ধমকের লক্ষ্য ছিলেন, হুগলির তৃণমূল সাংসদ রত্না দে নাগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৫ ০২:২৯

শাট আপ!

রাজনৈতিক সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যান বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে, এই মর্মেই ধমক দিয়ে উঠেছেন চেয়ারম্যান রামগোপাল যাদব। তাঁর ধমকের লক্ষ্য ছিলেন, হুগলির তৃণমূল সাংসদ রত্না দে নাগ।

আলোচনার বিষয়টি ছিল সাম্প্রতিক ঘোরালো ডেঙ্গি পরিস্থিতি। দিল্লি-সহ বিভিন্ন রাজ্যের সাংসদরা চাইছিলেন সমস্যাটি সংসদীয় কমিটিতে তুলে ধরতে। সম্ভাব্য প্রতিরোধ তৈরির খসড়া কৌশল তৈরি করে, কেন্দ্রীয় সরকারের উপর চাপ তৈরি করতে।

কিন্তু কাকস্য পরিবেদনা!

অভিযোগ, বলতে গিয়ে বারবার বাধাপ্রাপ্ত হয়েছেন কমিটির সদস্যরা। কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ, বিজেপি-র চন্দ্রকান্ত পটেল, সিপিএমের টি এন সিনা—ছাড় পাননি কোনও দলের নেতাই! রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, ওই বৈঠকে যখনই কেউ বলতে উঠছেন, দাঁড়িয়ে উঠে নাকি প্রশ্ন ছুঁড়েছেন রত্না দে নাগ। তিনি নিজে চিকিৎসক এবং এই কমিটির সদস্য। ফলে নিজের যখন বলার সুযোগ এসেছে, তখন দীর্ঘক্ষণ তো বলেছেনই। অভিযোগ, অন্য সদস্যরা যখন বলছেন তখনও তাদের বারবার থামিয়ে দিয়েছেন সাধারণত মুখচোরা এই নেত্রী। সংসদীয় স্থায়ী কমিটির গতকালের বৈঠকে অন্যদের বক্তব্য পেশ করার মাঝেই, ডেঙ্গি কী এবং কেন, তার মোকাবিলায় কী কী করতে হবে, সরকারের গাফিলতি কোথায়—কিছু না কিছু বলেই গিয়েছেন তিনি।

বেশ কিছুক্ষণ এরকম চলার পর আর ধৈর্য্য রাখতে পারেননি কমিটির চেয়ারম্যান রামগোপাল যাদব। ধমক দিয়ে বসিয়ে দিয়েছেন রত্নাকে। সূত্রের খবর, এরপর আর রা কাড়েননি রত্না।

পরে তাঁকে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে, সতর্ক গলায় গোটা বিষয়টি অবশ্য অস্বীকার করেছেন তৃণমূল সাংসদ। রত্নার কথায়, ‘‘এ সব একদম বাজে রাজনৈতিক প্রচার। ডেঙ্গি নিয়ে খুব সুন্দর আলোচনা হয়েছে। সবাই নিজেদের মত জানিয়েছেন। কোনওরকম মতানৈক্যের পরিস্থিতিই তৈরি হয়নি। ডেঙ্গি যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় এ ব্যাপারে কমিটির সমস্ত সদস্যই একমত।’’

সংসদে সাধারণত একেবারে শেষ সারিতে গিয়ে বসতে দেখা যায় রত্না দে নাগকে। তৃণমূলের সবাই মিলে ওয়েলে এসে বিক্ষোভ দেখানোর সময় তিনি আসেন বটে, কিন্তু সাধারণত কোনও জোরালো বিতর্কে তাঁকে অংশ নিয়ে দলের বক্তব্য প্রতিষ্ঠা করতে বড় একটা দেখা যায় না বলেই মনে করছেন রাজধানীর রাজনৈতিক শিবির। এ হেন, রত্না, হঠাৎ ‘জঙ্গি’ হয়ে উঠলেন কেন তা নিয়ে গুঞ্জন দলের অভ্যন্তরেও। একটি অংশের কথায়, লোকসভায় তৃণমূল সংসদীয় দলের ডেপুটি লিডার হলেও, সৌগত রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত উচ্চকিত নেতাদের সামনে কিছুটা ম্রিয়মানই থাকতে হয় রত্নাদেবীকে। জোর গলায় কিছু বলার সুযোগ পান না। তাই লোকসভার দুধের স্বাদ সংসদীয় কমিটির ঘোলে মিটিয়েছেন বলে লঘু স্বরে টিপ্পনিও কাটছেন, বলতে বাধা পাওয়া সেদিনের কিছু নেতা!

তৃণমূলেরই কেউ কেউ মনে করছেন সময়টা নেহাতই খারাপ যাচ্ছে এই সাংসদের। সম্প্রতি দিল্লিতে তৃণমূল আয়োজিত ছদ্ম সংসদের অনুষ্ঠানেও বেগতিকে পরে গিয়েছিলেন হুগলির সাংসদ। অন্য অনেক বিষয়ে বিজেপি সরকারের আনা বিলে সমর্থন করলেও জমি বিলের প্রশ্নে আগোগোড়া বিরোধিতার লাইন নিয়ে চলছে তৃণমূল। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ছদ্ম সংসদ করার ভাবনাটির প্রধান কারণই ছিল, সংসদে যে বিষয়গুলি তোলা যায়নি, তা প্রকাশ্যে আনা। সেক্ষেত্রে জমি বিল নিয়ে প্রতীকি প্রতিবাদটি ছিল অন্যতম কর্মসূচি। ছদ্ম স্পিকারের পদে বসে রত্না দে নাগ সেই প্রতিবাদের আগুনে জল ঢেলে দিয়েছিলেন সেদিন। তিনি জমি বিলটি আটকানোর বদলে পাশ করিয়ে দেন! টের পেয়ে হৈ হৈ রব পরে যায় তৃণমূলের নেতাদের মধ্যে। পরে ভুল সংশোধন করেন তিনি।

Ramgopal Ratna De Nag new delhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy