Advertisement
২৩ মে ২০২৪
COVID19

বেপরোয়া ভিড় বাড়িয়েছে উদ্বেগ, সতর্ক করল কেন্দ্র

কেন্দ্রের পর্যবেক্ষণ, বর্ষবরণ উপলক্ষে গতকাল বিপুল সংখ্যক লোক পথে নেমেছিলেন। তার উপরে, সপ্তাহান্তের ছুটির কারণে পর্যটনস্থলগুলিতেও ছিল উপচে পড়েছে ভিড়।

বেপরোয়া ভিড় দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী করতে পারে।

বেপরোয়া ভিড় দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী করতে পারে। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৩৬
Share: Save:

বর্ষশেষের রাতে কোভিড-বিধি উড়িয়ে পথে নেমেছিল জনতা। দূরত্ববিধির তোয়াক্কা না করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বহু মাস্কহীন মুখ মেতেছে উৎসবে। এই দৃশ্যই উদ্বেগ বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের। তাদের আশঙ্কা, এই বেপরোয়া ভিড় দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী করতে পারে। আর স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিড়ের ফলে আগামী সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে করোনা রোগীর সংখ্যা অনেকটাই বাড়তে পারে। এই পরিস্থিতিতে দেশীয় ওষুধ উৎপাদনকারী সংস্থাগুলিকে করোনা চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ওষুধের দেশীয় চাহিদাকে মাথায় রেখেই বিদেশে রফতানির পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রক।

কেন্দ্রের পর্যবেক্ষণ, বর্ষবরণ উপলক্ষে গতকাল বিপুল সংখ্যক লোক পথে নেমেছিলেন। তার উপরে, সপ্তাহান্তের ছুটির কারণে পর্যটনস্থলগুলিতেও ছিল উপচে পড়েছে ভিড়। এই ভিড়ের ফলে দেশে নতুন করে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘এ কথা ঠিক সরকার কেন্দ্রীয় ভাবে কোনও বিধিনিষেধ জারি করেনি। কিন্তু করোনার সংক্রমণের আশঙ্কা সত্ত্বেও যে ভাবে মানুষ পথে নেমেছিল তা চিন্তার। আর সবথেকে বেশি চিন্তার হল, অধিকাংশ ব্যক্তিই করোনাবিধি উপেক্ষা করেছেন। উৎসবের আনন্দে মাস্ক পরা, দূরত্ব বজায় রাখা কোনওটাই মানা হয়নি।’’ যে কারণে আগামী সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে দেশে সংক্রমিতের সংখ্যা কয়েক গুণ বাড়তে পারে বলে শঙ্কিত স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা।

যদিও স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, তারা সব রকম পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তৈরি। তার অঙ্গ হিসাবে আজ ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে সরকার। বলা হয়েছে, চিনে করোনা মোকাবিলায় যে ওষুধের প্রয়োজন, তার ঘাটতি দেখা দিয়েছে। চিন সরকার ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশ থেকে ওষুধ কেনা শুরু করেছে। যার মধ্যে রয়েছে ভারতও। কিন্তু এ দেশে হঠাৎ করে করোনা রোগীর সংখ্যা অস্বাভাবিক বেড়ে গেলে সে সময়ে যাতে ওষুধের কোনও ঘাটতি না হয়, সেই বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে হবে। সরকারের বক্তব্য, বিদেশের চাহিদা মেটাতে গিয়ে দেশবাসীর চিকিৎসার প্রশ্নে কোনও আপস করা না হয়, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে দেশীয় সংস্থাগুলিকে।

দেশে গত ১০ দিনে কোভিড-আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা বাড়লেও, সার্বিক ভাবে দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও কারণ নেই বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমিত ২৬৫ জন নতুন রোগীর সন্ধান মিলেছে। সরকারের বক্তব্য, দেশ জুড়ে পরীক্ষা বাড়িয়েছে সব রাজ্যই। বেশি পরীক্ষা হওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সে রাজ্যে আগত আন্তর্জাতিক যাত্রীদের জন্য নিয়ম আরও কড়া করেছে কর্নাটক সরকার। বর্তমানে চিন, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, তাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের যাত্রীদের এ দেশে আসতে গেলে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। ওই ছ’টি দেশের যাত্রীদের করোনা-রিপোর্ট নেগেটিভ এলে তবেই তাঁরা ভারতগামী বিমানে চড়ার অনমুতি পাচ্ছেন। এখন এক ধাপ এগিয়ে ওই ছ’টি দেশ থেকে আসা যাত্রীরা নেগেটিভ আরটি-পিসিআর পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে এলেও তাঁদের সাত দিন বাধ্যতামূলক ভাবে নিভৃতাবাসে থাকার নির্দেশ দিয়েছে কর্নাটক প্রশাসন। তাদের যুক্তি, আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় কিছু ক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে না। তাই ঝুঁকি না নিয়ে করোনা সংক্রমণ এড়াতে ওই বাড়তি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

COVID19 Central Government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE