Advertisement
০৩ মে ২০২৪

ফাঁসিতেও কি কমবে অপরাধ, প্রশ্ন সব স্তরে

নির্ভয়া-কাণ্ডের পরেও থেমে থাকেনি ধর্ষণের মতো অপরাধ। আর আজ দেশের শীর্ষ আদালত নির্ভয়া-কাণ্ডে অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করলেও সকলেই এক মত, এই ফাঁসির সাজাতেও অপরাধ থেমে থাকবে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৭ ০৩:৫৩
Share: Save:

নির্ভয়া-কাণ্ডের পরেও থেমে থাকেনি ধর্ষণের মতো অপরাধ। আর আজ দেশের শীর্ষ আদালত নির্ভয়া-কাণ্ডে অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করলেও সকলেই এক মত, এই ফাঁসির সাজাতেও অপরাধ থেমে থাকবে না। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি থেকে আইনজীবী কিংবা রাজনৈতিক নেতা ও নাগরিক সমাজ—সকলেই এক সুরে এ কথা বলছেন।

আজ নির্ভয়া-কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। সেই বেঞ্চের মহিলা সদস্য ছিলেন বিচারপতি ভানুমতী। মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে অতিরিক্ত যুক্তি দিয়ে পৃথক রায়ে তিনি স্বামী বিবেকানন্দকে উদ্ধৃত করে বলেছেন, যে কোনও জাতির অগ্রগতির সব থেকে ভাল থার্মোমিটার হল, মহিলাদের প্রতি তাদের আচরণ। এ দেশে শিক্ষা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে মহিলারা উন্নতি করছেন। মহিলাদের অধিকারের ধারনাতেও বদল এসেছে। কিন্তু তাঁদের সম্মান কমছে। বেড়েছে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ।

ভানুমতী তাঁর রায়ে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো-র পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেছেন, ২০১৫-তে মহিলাদের বিরুদ্ধে ৩ লক্ষ ২৭ হাজার ৩৯৪টি অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। ২০১১-র তুলনায় যা ৪৩ শতাংশ বেশি। গত এক দশকে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ দ্বিগুণ হয়েছে। তাঁর যুক্তি, মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের গভীরে গিয়ে বিচার করা উচিত। আইন-শৃঙ্খলার কড়া রূপায়ণের মাধ্যমেই তার সমাধান খুঁজতে হবে।

আরও পড়ুন:মৃত্যুদণ্ডের অপেক্ষায় ৩২৯ জন

২০১২-র ১৬ ডিসেম্বর— নির্ভয়া গণধর্ষণ কাণ্ডের পরে দিল্লির রাজপথে নেমে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হয়েছিল। নেতৃত্বহীন সেই আন্দোলনের রেশ ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা দেশে। দিল্লিতে সেই আন্দোলনের অন্যতম মুখ আলবিনা শাকিলের যুক্তি, ‘‘২০১৫-র হিসেব বলছে, মহিলাদের বিরুদ্ধে ১ লক্ষ ৩৬ হাজারের বেশি অপরাধে মামলা বা তদন্ত চলছে। যার মধ্যে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে সাড়ে পাঁচ হাজার মতো।’’ তাঁর মতে, ‘‘ফাঁসির সাজা খুবই কড়া শাস্তি। কিন্তু বিচারব্যবস্থার শ্লথ গতির বিচারে তা খুবই বিরল।’’ একই সুরে নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী মেনকা গাঁধী বলেছেন, ‘‘আরও দ্রুত এই শাস্তি হওয়া প্রয়োজন ছিল।’’

দিল্লির রাজপথে সেই আন্দোলনের রাজনৈতিক মূল্য চোকাতে হয়েছিল ইউপিএ-সরকার ও দিল্লির শীলা দীক্ষিত সরকারকে। তার পরে বর্মা কমিটি তৈরি হয়েছে। মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের কড়া শাস্তি দিতে আইন সংশোধন হয়েছে। আজ কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার প্রয়োজনের কথা বলেছেন। কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল বোঝানোর চেষ্টা করেন, এখনও দেশ জুড়ে মহিলাদের বিরুদ্ধে বহু অপরাধের ঘটনা ঘটছে। রাজধানী দিল্লিই মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধে সকলের থেকে এগিয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE