Advertisement
E-Paper

১০ হাজারের বেশি টাকার অগ্রিম টিকিট কেটে বাতিল করলে নগদে ফেরত নয়

অঙ্কটা খারাপ ছিল না! মঙ্গলবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রাতারাতি বাতিল হয়ে গেলেও হাতে থাকা ৫০০, ১০০০ টাকার নোট দিয়ে দেদার দূরপাল্লার ট্রেন আর বিমানের টিকিট এখন কেটে নেওয়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:২২

অঙ্কটা খারাপ ছিল না! মঙ্গলবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রাতারাতি বাতিল হয়ে গেলেও হাতে থাকা ৫০০, ১০০০ টাকার নোট দিয়ে দেদার দূরপাল্লার ট্রেন আর বিমানের টিকিট এখন কেটে নেওয়া। পরে সেগুলো ফেরত দিয়ে ‘ভাল’ টাকা ঘরে তোলা! সেই মতো এগোচ্ছিলেন অনেকে। কিন্তু তাঁদের সেই আশায় জল ঢেলে দিল কেন্দ্রীয় সরকার!

রেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বুধবার থেকে আজ, শুক্রবার (৯-১১ নভেম্বর)-এর মধ্যে দূরপাল্লার ট্রেনে যাঁরা ১০ হাজারের বেশি টাকার অগ্রিম টিকিট কেটেছেন বা কাটবেন, পরে সেই টিকিট বাতিল করলে তাঁরা নগদে ফেরত পাবেন না।

সংশ্লিষ্ট যাত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সেই বাতিল টিকিটের টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

বিমান মন্ত্রকও বৃহস্পতিবার দুপুরে দেশের সবক’টি বিমানসংস্থাকে জানিয়ে দিয়েছে, এ দিন দুপুরের পর থেকে যাঁরা বাতিল ৫০০ এবং ১ হাজার টাকার নোটে বিমানের টিকিট কেটেছেন বা কাটবেন — তাঁরা টিকিট বাতিল করলে টাকা ফেরত পাবেন না। শুধু সামান্য করের টাকা তাঁদের ফেরত দেওয়া হবে। বিমান পরিবহণের ভাষায়, এই টিকিটগুলি ‘নন-রিফান্ডেবল’।

বিমান ও রেল মন্ত্রক সূত্রের খবর, ৮ নভেম্বর রাতে নরেন্দ্র মোদীর ঘোষণার পর থেকে ৫০০ এবং ১ হাজার নোট দিয়ে ট্রেন ও বিমানের টিকিট কাটার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। দুই মন্ত্রকের কর্তাদের মতে, ‘‘কারণটা খুব স্পষ্ট। বাতিল নোট ব্যবহার করে যতগুলি সম্ভব অগ্রিম টিকিট কিনে রাখা। তার পর বাজারে নতুন নোট এলে সেই টিকিট বাতিল করলেই টাকা ‘শুদ্ধ’ হয়ে ফেরত চলে আসবে। টিকিট বাতিল করার জন্য সামান্য টাকা কেটে নিলেও আখেরে তাঁদের লাভই হবে’’ — মন্তব্য এক কর্তার।

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরে কেমন হিড়িক পড়েছে? যেমন, বিমানসংস্থা সূত্রের খবর, গত দু’দিনে মুম্বইয়ে একটি বিমানসংস্থার কাউন্টার থেকে দেশের মধ্যে বিভিন্ন রুটে পুরো পরিবারের যাতায়াতের জন্য বিজনেস শ্রেণিতে টিকিট কাটা হয়েছে। যার অর্থ মূল্য ২ লক্ষ টাকার বেশি। এক জন নন, একাধিক ব্যক্তি এটা করেছেন, জানান মন্ত্রকের এক কর্তা।

পিছিয়ে নেই রেলও। সূত্রের খবর, বুধবার সকালে হাওড়া-রাজধানী এক্সপ্রেসে দিল্লি যাবেন বলে বুধবার বাঁকুড়া থেকে এক ব্যক্তি বাতানুকূল প্রথম শ্রেণির ছ’টি টিকিট কাটেন। এক হাজার টাকার নোটের একটি বান্ডিল থেকে নগদে ৯৭ হাজার

টাকা জমা দেন কাউন্টারে। সারা দিন ধরে বিভিন্ন দূরপাল্লার ট্রেনে অগ্রিম টিকিট কেনার এমন ধুম দেখা গিয়েছে বহু জায়গায়।

এবং এ সব দেখেই ঘুম ভেঙেছে দুই মন্ত্রকের। বিভিন্ন বিমানসংস্থার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, ৫০ হাজারের বেশি টাকা খরচ করে টিকিট কাটলে যাত্রীর প্যান কার্ড দেখানোর নিয়ম যেমন ছিল, তেমনই থাকছে। একই ভাবে বৃহস্পতিবার দুপুরের আগে পর্যন্ত যাঁরা টিকিট কেটেছেন, পরে তা বাতিল করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু এ দিন দুপুরের পর থেকে ৫০০, ১০০০-এর নোট দিয়ে টিকিট কেটে পরে তা বাতিল করলে তার দাম ফেরত পাওয়া যাবে না।

ট্রেনের ক্ষেত্রে বাতিল টিকিটের টাকা নগদেই ফেরত দেওয়ার রেওয়াজ ছিল। রেল জানিয়েছে, ১০ হাজারের কম মূল্যের টিকিট বাতিল করলে সেই টাকা নগদে ফেরত দেবে তারা। কিন্তু টাকার অঙ্ক তার বেশি হলে বাতিল টিকিটের টাকা চলে যাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।

রেল কর্তারা জানাচ্ছেন, বুধবার দেশ জুড়ে অন্যান্য দিনের তুলনায় ৩০-৪০ শতাংশ বেশি দূরপাল্লার টিকিট বিক্রি হয়েছে। কেউ ৬০ হাজার, কেউ ৭০ হাজার আবার কেউ এক লক্ষ টাকা খরচ করে অগ্রিম টিকিট কেটেছেন!

রেল সূত্রে খবর, দক্ষিণ-পূর্ব আদ্রা ডিভিশনের একটি আসন সংরক্ষণ কেন্দ্রে গত বছর ৯ নভেম্বর টিকিট বিক্রি হয়েছিল ৩ হাজার ৫৬১টি। তাতে আয় হয়েছিল ৮ লক্ষ টাকা। এ বার সেই কেন্দ্রে ৯ নভেম্বর টিকিট বিক্রি হয়েছে, ৪ হাজার ৫৬৬টি। আর আয় দাঁড়িয়েছে ৩১ লক্ষ টাকা!

রেলের ভিজিল্যান্স কর্তারা টিকিট কেনার এই হিড়িক দেখে বলেছেন, ওই সব অর্থ হিসেব বর্হিভূত কালো টাকা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। আর এই টিকিট মোটেও ট্রেনে চড়ার জন্য কেনা হচ্ছে না। টিকিট বাতিল করে নগদ টাকা ফেরত নেওয়ার জন্য কেনা হচ্ছে।

Reserved Tickets 10 Thousand Cancelled
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy