Advertisement
০৪ মে ২০২৪

তেলের দাম নিয়ে চাপে প্রধানমন্ত্রী

পেট্রোপণ্যের আকাশছোঁয়া দামে মানুষ যখন ক্ষুব্ধ, তখন লোক দেখানো এক পয়সা দাম কমিয়ে নিজেদের হাসির খোরাক করে তোলার কী প্রয়োজন, সেই প্রশ্ন উঠেছে বিজেপির অন্দরেই। আজকের ভোট বিপর্যয় পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৮ ০৩:০৫
Share: Save:

উপনির্বাচনে বিপর্যয়ের পরে পেট্রোপণ্যের দাম কমানো নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপর চাপ বাড়াচ্ছে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার।

দু’দিন আগে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান জানিয়েছিলেন, তেলের দাম বড় অঙ্কে কমানোর প্রশ্নই নেই। এর পরে বুধবার তেলের দাম এক পয়সা কমানো নিয়ে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর কটাক্ষে বিজেপির অন্দরমহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। পেট্রোপণ্যের আকাশছোঁয়া দামে মানুষ যখন ক্ষুব্ধ, তখন লোক দেখানো এক পয়সা দাম কমিয়ে নিজেদের হাসির খোরাক করে তোলার কী প্রয়োজন, সেই প্রশ্ন উঠেছে বিজেপির অন্দরেই। আজকের ভোট বিপর্যয় পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

বিষয়টি নিয়ে উভয়সঙ্কটে পড়েছেন মোদী। ২০১৬-১৭ সালে পেট্রোপণ্য খাতে সরকারের রাজকোষে রাজস্ব ঢুকেছিল ২.৭ লক্ষ কোটি টাকা। যা মোদী সরকারের ক্ষমতায় আসার বছরের তুলনায় ১১৭ গুণ বেশি। বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়ায় রাজকোষে ওই পরিমাণ বাড়তি লাভ হয়েছে। এখন তেলের দাম নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে সরকারের কাছে বিকল্প রাস্তা হল, উৎপাদন শুল্ক কমানো। কিন্তু তাতে রাজকোষ ঘাটতির আশঙ্কা রয়েছে। কেননা, তেল থেকে সংগৃহীত রাজস্ব কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ের বড় উৎস। উৎপাদন শুল্ক কমিয়ে রাজকোষ ঘাটতি বাড়ানোর প্রশ্নে নীতিগত ভাবে রাজি নয় মোদী সরকার। কিন্তু সরকারের উপর রয়েছে প্রবল রাজনৈতিক চাপ।

বেশ কিছু দিন থেকেই বিজেপির মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছিল, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়ে বিধানসভা ভোটের আগে ওই রাজ্যগুলিতে তেলের দাম কিছুটা কমিয়ে দেওয়া যেতে পারে। এতে রাজনৈতিক লাভ হতে পারে বলেই মনে করে বিজেপি। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী চিদম্বরম কিছু দিন আগেই বলেছিলেন, সরকার চাইলে তেলের দাম ২৫ টাকা কমানো সম্ভব। কেরলে বাম গণতান্ত্রিক জোট সরকার গত কালই পেট্রোপণ্যের দাম এক টাকা কমিয়েছে। এ বার উপনির্বাচনের বিপর্যয়ের পরে তেলের দাম নিয়ে চাপের মুখে মোদী কোন পথে এগোন, সেটাই দেখার।

তবে বিজেপির একটি সূত্রের বক্তব্য, বিপর্যয়ের ঠিক পরেই দাম কমানো হলে কংগ্রেস তথা বিরোধীরা দাবি করবেন যে তাঁদের চাপে সরকার ওই পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছে।

মোদী সরকারের এখন ‘শ্যাম রাখি না কূল রাখি’ পরিস্থিতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Modi government petrol Diesel Price Hike
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE