Advertisement
E-Paper

জামিনে স্বস্তি, মুম্বই ফিরে এলেন সলমন

জোধপুর বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছিল ১২ আসনের চার্টার্ড বিমান। পৌনে ছ’টায় মাটি ছেড়ে মুম্বইয়ে সলমনের বিমান নামল সাড়ে সাতটা নাগাদ।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৪৭
ঘরের পথে: কৃষ্ণসার মামলায় জামিন পেয়ে জোধপুর বিমানবন্দরে পৌঁছলেন সলমন খান। শনিবার। ছবি: পিটিআই

ঘরের পথে: কৃষ্ণসার মামলায় জামিন পেয়ে জোধপুর বিমানবন্দরে পৌঁছলেন সলমন খান। শনিবার। ছবি: পিটিআই

জামিন মঞ্জুর হল বেলা ৩টে নাগাদ। দায়রা আদালত থেকে কাগজপত্র জোধপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে পৌঁছল ৫টায়। তার আধ ঘণ্টা পরেই জেলের লোহার ফটকের ছোট দরজাটা দিয়ে বেরিয়ে এলেন সলমন খান। জোধপুর বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছিল ১২ আসনের চার্টার্ড বিমান। পৌনে ছ’টায় মাটি ছেড়ে মুম্বইয়ে সলমনের বিমান নামল সাড়ে সাতটা নাগাদ। সেখান থেকে সোজা বান্দ্রার গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টসের বাড়ি। বারান্দা থেকে সলমন হাত নাড়লেন ভক্তদের।

কৃষ্ণসার হত্যা মামলায় আপাতত ৪৮ ঘণ্টাতেই শেষ হল ‘বজরঙ্গি ভাইজান’-এর কারাবাস।

জোধপুর দায়রা আদালতের বিচারক রবীন্দ্রকুমার জোশীর বদলির নির্দেশ এসেছিল গত রাতে। আজ তাঁর আদালতে জামিনের শুনানি নিয়ে তাই চিন্তায় পড়েছিলেন সলমনের আইনজীবীরা। শেষ পর্যন্ত বিচারক জোশীই আজ সকালে ঘণ্টাখানেকের সওয়াল-জবাব শুনে মোট এক লক্ষ টাকার জামিনে মুক্তি দেন সলমনকে। জানা গেল, আগামী সপ্তাহে অন্য আদালতের দায়িত্ব নেবেন বিচারক জোশী। ৭ মে ফের শুনানি। সে দিন মামলা শুনবেন বিচারক চন্দ্রকুমার সোনগরা। আপাতত কোর্টের অনুমতি ছাড়া দেশ ছাড়তে পারবেন না সলমন।

৫৪টি কারণ দেখিয়ে সলমনের জামিন চেয়েছিলেন আইনজীবীরা। তাঁরা বলেছিলেন, প্রধান সাক্ষী পুনমচন্দ বিশ্নোইয়ের বয়ান সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়। প্রশ্ন আছে মৃত হরিণের ডিএনএ পরীক্ষা নিয়েও। সলমনের আইনজীবীরা জানান, হরিণগুলির চামড়া আদৌ পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়নি। পাঠানো হয়েছিল পিছনের পায়ের হাড়। চামড়া পরীক্ষা না করে সেগুলি কোন প্রজাতির হরিণ এবং গুলিতেই তাদের মৃত্যু হয়েছিল কি না, বোঝা সম্ভব নয়। সরকারি আইনজীবী পোকররাম বিশ্নোই বলেন, এই প্রথম সলমনের বিরুদ্ধে চোরাশিকারের মামলায় প্রত্যক্ষদর্শী পাওয়া গিয়েছে। যথেষ্ট অকাট্য প্রমাণ দেওয়া হয়েছে।

সলমনের জামিন মঞ্জুর করতে গিয়ে বিচারক জোশী বলেন, কৃষ্ণসারগুলির প্রথম ও দ্বিতীয় ময়না-তদন্তের রিপোর্টে আলাদা কথা লেখা আছে। প্রথমটির বক্তব্য, গুলির আঘাত ছিল না। অথচ দ্বিতীয়টি বলছে, গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে হরিণগুলির। দ্বিতীয়ত, সলমন কোনও শর্তের অপব্যবহার করেননি। আরও একটি কৃষ্ণসার শিকার এবং দু’টি চিঙ্কারা হরিণ শিকারের মামলায় তিনি ছাড়া পেয়েছেন যথাক্রমে রাজস্থান হাইকোর্ট এবং নিম্ন আদালত থেকে। তৃতীয়ত, শিকারে ব্যবহৃত বন্দুক, গুলি এবং জিপসি গাড়ি তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার করা গিয়েছিল কি না, সে বিষয়ে অন্য মামলাগুলিতে হাইকোর্টই সন্দেহ প্রকাশ করেছিল। এই মামলায় অভিযুক্ত অন্য চার অভিনেতা-অভিনেত্রী যে প্রমাণের অভাবে রেহাই পেয়েছেন, জামিনের রায়ে তা-ও বলেছেন বিচারক।

বিশ্নোই সম্প্রদায় জানিয়েছে, জামিন খারিজের আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টে যাবে তারা। সলমনের বোন অলবীরা-অর্পিতা আজও আদালতে ছিলেন। জামিন মঞ্জুর হওয়ার পরেই নিজেদের হোটেলে রওনা হন তাঁরা। শুরু হয় মুম্বই ফেরার তোড়জোড়। সাদা টয়োটা এসইউভি নিয়ে জেলে পৌঁছে যান সলমনের বিশ্বস্ত দেহরক্ষী শেরা। সাড়ে পাঁচটা নাগাদ কালো টাইট টি-শার্ট, কালো টুপি পরা সলমন বেরোতেই করমর্দনের জন্য এগিয়ে আসে দু’একটা হাত। কয়েক জন পুলিশকর্মীকেও দেখা যায় রীতিমতো গদগদ মুখে। অনেকটা যেমন দেখা গিয়েছিল পুণের জেল থেকে সঞ্জয় দত্ত বেরোনোর সময়ে।

গাড়ির সামনের আসনে সিটবেল্ট বেঁধে বসে পড়েন সলমন। গন্তব্য বিমানবন্দর। জেলের সামনে জড়ো হয়ে এত ক্ষণ ‘সলমন জিন্দাবাদ’ স্লোগান তোলা ভিড়টা গাড়ির পিছন-পিছন ছোটে কিছুটা দূর। সলমনের বোনেরা এবং বন্ধু পরিচালক সাজিদ নাদিয়াদওয়ালা তত ক্ষণে পৌঁছে গিয়েছেন বিমানবন্দরে। নিরাপত্তা-বিধি থাকায় জোধপুর বিমানবন্দর থেকে বিকেল পাঁচটার পরে চার্টার্ড বিমান উড়তে দেওয়া হয় না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিশেষ অনুমতি পেয়ে পৌনে ছ’টায় রওনা হয় সলমনের বিমান।

এখানেই অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, এত সুবিধে কেন দেওয়া হল সলমনকে? একে তো নিয়ম ভেঙে দেরিতে উড়ল বিমান। উপরন্তু যে তৎপরতায় আদালতের রায়ের আড়াই ঘণ্টার মধ্যে তাঁর জেল থেকে বেরোনোর ব্যবস্থা করা হল, তা কি সাধারণ আসামিকে দেওয়া হত?

রেহাইয়ের স্বস্তিতে তাই রইল অস্বস্তির খোঁচাও।

Salman Khan Blackbuck Poaching Case Release Bail Jodhpur Jail সলমন খান
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy