নোট বাতিলের জেরে উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি ও কংগ্রেসের মধ্যে উজ্জ্বল হচ্ছে প্রাক্নির্বাচনী জোটের সম্ভাবনা। গত কাল এই জোট-জল্পনাকে উস্কে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব নিজেই। সমাজবাদী পার্টি (সপা)-র শীর্ষ স্তর থেকে জোটের বার্তা আসায় উজ্জীবিত কংগ্রেস হাইকম্যান্ডও।
গত কয়েক মাস ধরেই উত্তরপ্রদেশে জোটের প্রশ্নে দর কষাকষি চালু রয়েছে কংগ্রেস ও সপা শিবিরের মধ্যে। মাঝে সপা শিবিরের পারিবারিক বিবাদ শুরু হওয়ায়
সেই আলোচনা থমকে যায়। শেষ পর্যন্ত মুলায়ম সিংহ যাদবের হস্তক্ষেপের পরে এখন সন্ধির বাতাবরণ অখিলেশ ও তাঁর কাকা শিবপাল যাদবের শিবিরের মধ্যে। এই পরিস্থিতিতে অখিলেশ জোটের বার্তা দেওয়াটা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
কী বলেছেন অখিলেশ?
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনে আমাদের দল জিতবেই। তবে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হলে ৪০৩-এর মধ্যে ৩০০টি আসনে জিতবে দল। জোটের প্রশ্নে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন দলের প্রধান মুলায়ম সিংহ।’’ রাজনীতিকদের মতে, গত লোকসভা নির্বাচনে যে ভাবে রাজ্যের ৮০টি আসনের মধ্যে এক ধাক্কায় ৭৩টি আসনে বিজেপি জিতে এসেছিল তা দেখে কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নন সপা নেতৃত্ব। নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে আম-জনতার প্রতিক্রিয়া কী হবে, ভোটের বাক্সে তার কী প্রতিফলন হবে সে বিষয়েও সন্দিহান অখিলেশরা। তাই বিজেপি রুখতে ঝুঁকি না নিয়ে কংগ্রেসের হাত ধরতে চাইছে সপা শিবির। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘নোট বাতিলের জেরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। আমজনতা কালো টাকার বিরুদ্ধে অভিযান নিয়ে খুশি। আবার এক মাস কেটে যাওয়ার পরেও টাকা তোলার অসুবিধে নিয়ে ক্ষোভের বাতাবরণও রয়েছে। ফলে মানুষের ভোট কোন দিকে যাবে তা এই মুহূর্তে বলা বেশ কঠিন।’’
কংগ্রেস অবশ্য মেপে পা ফেলতে চাইছে। আসন বণ্টনের প্রশ্নে সপা-কে বাড়তি সুবিধা দিতে নারাজ তারা। কংগ্রেসের দাবি, গত বিধানসভা নির্বাচনে জেতা ২৯টি আসনে জয়ী প্রার্থীদের লড়তে দিতে হবে। এ ছাড়া গত বিধানসভায় যে ৩১টি আসনে কংগ্রেস দ্বিতীয় স্থানে ছিল সেখানেও তাদের প্রার্থীকে টিকিট দেওয়ার দাবি জানাবে দল। এ ছাড়াও দলের পক্ষ থেকে আরও একশোটি আসন চিহ্নিত করা হয়েছে। সব মিলিয়ে কংগ্রেসের দাবি অন্তত ১৬০-১৭৫টি আসন। উল্টো দিকে সপা নেতৃত্ব অবশ্য ১০০ থেকে ১১০-এর বেশি আসন ছাড়তে রাজি নন। উত্তরপ্রদেশের ভারপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেত্রী শীলা দীক্ষিত বলেন, ‘‘অখিলেশ জোট নিয়ে একটা প্রস্তাব দিয়েছেন। উত্তরপ্রদেশের বিষয়টি রাহুল গাঁধী নিজে দেখছেন। তাঁর সঙ্গে অখিলেশ শিবিরের আলোচনা চলছে।’’
জোট রাজনীতির এই বাজারে অবশ্য কিছুটা হলেও ধীরে চলো নীতি নিয়েই এগোচ্ছেন উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে সপা শিবিরের চির প্রতিদ্বন্দ্বী মায়াবতী। বিএসপি সূত্রে বলা হচ্ছে, প্রাক্নির্বাচনী জোটের এখনও কোনও সম্ভাবনা তৈরি হয়নি। ভোটের ফল দেখে জোট সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বহেনজি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy