Meet Shaheena Attarwala, know about her journey from Mumbai slum to Microsoft dgtl
Shaheena Attarwala
ফুটপাথে থাকতেন, বাবা ছিলেন হকার! কম্পিউটারকে ভালবেসে স্বপ্নের উড়ান মুম্বইয়ের তরুণীর
আগে যে শহরের ফুটপাথে ঘুমিয়ে স্বপ্ন বুনতেন, এখন সেই শহরেরই একটি বহুতলে থাকেন তিনি। যার বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকলেই খোলা আকাশ দেখা যায়।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৪ ১১:২১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৩
এককালে ঠিকানা ছিল ফুটপাথ। চোখে স্বপ্ন ছিল আকাশ ছোঁয়ার। ছোটবেলার সেই শহরে এখনও থাকেন তরুণী। তবে তাঁর ঠিকানা বদল হয়েছে। আগে যে শহরের ফুটপাথে ঘুমিয়ে স্বপ্ন বুনতেন, এখন সেই শহরের একটি বহুতলে থাকেন তিনি। যার বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকলে খোলা আকাশ দেখা যায়। আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন কী ভাবে পূরণ করলেন মুম্বইয়ের তরুণী শাহিনা আতরওয়ালা?
০২১৩
ছোটবেলায় মুম্বইয়ের বান্দ্রা রেলস্টেশনের কাছে একটি ঘিঞ্জি এলাকায় বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন শাহিনা। রাস্তাঘাটে রংবেরঙের চুড়ি বিক্রি করে উপার্জন করতেন শাহিনার বাবা। ছোট ঘর হলেও মাথার উপর ছাদ ছিল তাঁদের।
০৩১৩
এই সময়ে শাহিনার বাবা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। নিয়মিত চুড়ি বিক্রিও করতে যেতে পারতেন না তিনি। মেয়ে পড়াশোনা করতে চেয়েছিল বলে কষ্ট করে স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলেন শাহিনার বাবা।
০৪১৩
কম্পিউটারের প্রতি আগ্রহ ছিল শাহিনার। কন্যার ইচ্ছাপূরণ করতে তাঁর বাবা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রেও ভর্তি করিয়েছিলেন শাহিনাকে। কিন্তু অর্থাভাবে মাঝপথে কম্পিউটার শেখা বন্ধ হয়ে যায় শাহিনার।
০৫১৩
মাথার উপর থেকে ছাদও সরে যায় শাহিনাদের। ছোট আস্তানা ছেড়ে ফুটপাথে গিয়ে সংসার গড়ে তোলে তাঁরা। তবুও হার মানেননি শাহিনা। স্কুলের পড়াশোনার পাশাপাশি কম্পিউটার শিখবেন বলে টাকা বাঁচাতে শুরু করেন তিনি।
০৬১৩
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, প্রতি দিন এক বেলার খাবার খেতেন না শাহিনা। খাবারের টাকা সঞ্চয় করতেন তিনি। এমনকি, স্কুলে যাতায়াতের জন্য বাস ছেড়ে হেঁটে যেতেন তিনি। বাস এবং খাওয়াদাওয়ার খরচ বাঁচিয়ে আবার কম্পিউটার শেখার জন্য ভর্তি হন শাহিনা।
০৭১৩
শাহিনা কম্পিউটারে হাত পাকিয়ে ফেলেছেন দেখে তাঁর বাবা সঞ্চিত অর্থ খরচ করে কন্যার জন্য একটি পুরনো কম্পিউটার কেনেন। বন্ধুবান্ধবদের থেকে ধারও নেন তিনি। বাড়িতে বসেই কম্পিউটারে কাজকর্ম করতে শুরু করেন শাহিনা।
০৮১৩
স্কুলের পড়াশোনা শেষ করার পর মুম্বইয়ের একটি কলেজে ভর্তি হন শাহিনা। সেখান থেকে বিকম ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। তার পর এনআইআইটিতে ভর্তি হন শাহিনা। ভিসুয়াল কমিউনিকেশন অ্যান্ড ডিজ়াইন নিয়ে ডিপ্লোমা করেন তিনি।
০৯১৩
একাধিক নামী সংস্থার তরফে চাকরির প্রস্তাব পান শাহিনা। শেষ পর্যন্ত মাইক্রোসফ্টে চাকরি করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। বর্তমানে এই সংস্থায় উচ্চপদে কর্মরতা শাহিনা।
১০১৩
২০২১ সালে মুম্বইয়ে নিজের ফ্ল্যাট কেনেন শাহিনা। সমাজমাধ্যমে নিজের জীবনের খুঁটিনাটি বিষয়ে প্রায়ই পোস্ট করেন তিনি। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘ফুটপাথের জীবন বড়ই কঠিন। আমাকে লিঙ্গবৈষম্য থেকে যৌন হেনস্থার শিকার পর্যন্ত হতে হয়েছে। কিন্তু আমি হার মানিনি। আমি শুধু ভাবতাম যে, নিজের জন্য অন্য জীবন তৈরি করতে হবে।’’
১১১৩
ডিজ়াইনিং নিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর মুম্বইয়ের একটি কার এক্সপোয় অংশগ্রহণ করেন শাহিনা। বেঙ্গালুরুতে জ়ুমকার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সময় সেখানে একটি স্কুটারের কাঠামো তৈরি করে দেখান তিনি। তার পর রাতারাতি পরিচিতি তৈরি হয়ে যায় তাঁর।
১২১৩
একাধিক জনপ্রিয় সংস্থার তরফে ডিজ়াইনিংয়ের জন্য শাহিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অতিথি হয়ে পড়ুয়াদের ডিজ়াইনিং নিয়ে প্রশিক্ষণ দেন তিনি।
১৩১৩
অর্থাভাবের কারণে যে কিশোরীরা মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়, তাদের দায়িত্ব নিয়ে একটি সংস্থা খুলেছেন শাহিনা। এমনকি, বেঙ্গালুরুর এক তরুণী যেন উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন, তাই লোকজনের কাছ থেকে চাঁদা তুলে তাঁকে কলেজে ভর্তি করিয়েছেন শাহিনা। তিনি যে পথে একা লড়াই করে এগিয়ে গিয়েছেন, অন্য মেয়েরাও যেন সেই পথে হেঁটে নিজেদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন সেই উদ্দেশ্যে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন শাহিনা।