Advertisement
১৮ মে ২০২৪
National news

দেহব্যবসার ‘রানি’, নারী পাচারের মাথা দিল্লি পুলিশের জালে

দেহব্যবসার মালকিন, নারী পাচার চক্রের অন্যতম মাথা এই গীতা অরোরা ওরফে সনু পঞ্জাবনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগও রয়েছে।

ধৃত গীতা অরোরা ওরফে সনু পঞ্জাবন। ছবি: টুইটার।

ধৃত গীতা অরোরা ওরফে সনু পঞ্জাবন। ছবি: টুইটার।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৭:২২
Share: Save:

ছিপছিপে শরীর। ঝকঝকে পোশাক। ইংরাজিটাও বেশ গড়গড় করে বলে যায়। চালচলনে আগাগোড়া আভিজাত্যের ছাপ। দেখে কে বলবে, বছর ৩৬-এর এই মহিলা আসলে দিল্লি পুলিশের খাতায় এক দাগি অপরাধী!

দেহব্যবসার মালকিন, নারী পাচার চক্রের অন্যতম মাথা এই গীতা অরোরা ওরফে সনু পঞ্জাবনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগও রয়েছে। গত বেশ কয়েক মাস ধরে গীতাকে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছিল দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্র্যাঞ্চ। অবশেষে এক গোপন ডেরার হদিশ পেয়ে শনিবার রাতে সেখানে হানা দেয় পুলিশ। ধরা পড়ে যায় এই মহিলা ডন।

তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার তাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। কিন্তু উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবে বারবারই ছাড় পেয়ে যাচ্ছিল সনু। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে এগিয়ে আসে তারই ডেরা থেকে পালিয়ে যাওয়া এক যুবতী। তাঁর সাহায্যেই সনুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই যুবতীর কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, শুধু দিল্লিই নয়, উত্তরপ্রদেশ এবং হরিয়ানার দেহব্যবসা এবং নারী পাচার চক্রের উপরেও সনুর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

আরও পড়ুন: নিষেধ উড়িয়ে শরিফের খাসতালুকে জনসংযোগ হাফিজের, উচ্ছ্বাস লাহৌরে

সনুর ডেরা থেকে পালিয়ে আসা ওই যুবতীর থেকে পুলিশ কী জানতে পেরেছে?

ওই যুবতী পুলিশকে জানান, সালটা ২০০৯। তখন তাঁর বয়স ১২ বছর। মেয়েপাচার চক্রের লোকজন নজফগড়ে বাড়ির কাছ থেকেই অপহরণ করে তাঁকে। তারপর নানা হাত ঘুরে পৌঁছন সনুর ডেরায়। কয়েক হাজার টাকার বিনিময়ে তাঁকে কিনে নেয় সনু। মেকওভার করে দেয় তাঁর। সনু নিজে তাঁকে ইংরাজি বলতে শেখায়। কারণ ইংরাজি জানা থাকলে খুব সহজেই নাকি পয়সাওয়ালা কাস্টমার মেলে। দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য তাঁর পোশাকেও আমূল বদল আনা হয়। এর পর কখনও লখনউ, কখনও রোহতক তো কখনও অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়ে ফেলা হয় তাঁকে। জোরজবরদস্তি দেহব্যবসায় নামানো হয়। এ ভাবেই অনেকগুলো বছর কেটে যায়। ২০১৪ সালে সুযোগ পেয়ে সনুর ডেরা থেকে পালিয়ে যান যুবতী। নজফগড়ে গিয়ে সনু এবং তার দলবলের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগও করেন।

কিন্তু সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেও সনু পর্যন্ত পৌঁছতে পারেনি পুলিশ। কারণ পুলিশকে সাহায্য করছে জানতে পারলে সনু ও তার লোকজন খুন করতে পারে এই ভয়ে পুলিশের থেকে গা ঢাকা দিয়ে দেন তিনি। সম্প্রতি ওই যুবতীর খোঁজ পেয়ে তাঁকে সবরকম নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাস দেয় পুলিশ। তারপরই সনুকে ধরতে সাহায্য করে ওই যুবতী।

এর আগে ২০১৪ সালে সনুকে একবার গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। কিন্তু তখনও উপযুক্ত প্রমাণ দায়ের করতে পারেনি পুলিশ। ছাড়া পেয়ে যায় সনু। ২০০৭ সালে ইমমরাল ট্রাফিক প্রিভেনশন অ্যাক্ট সেকশনে গ্রেফতার হয়। তার ক’দিন পরই জামিনে মুক্ত হয়ে যায়। একইভাবে ২০১১ সালেও একবার গ্রেফতার হয়ে ছাড়া পেয়ে যায় সে।

দিল্লি পুলিশের ডিসি (ক্রাইম ব্র্যাঞ্চ)বিশ্ব সিংহ বলেন, ‘‘সাক্ষী পেয়েছি। সনু পঞ্জাবান ছাড়াও আরও অনেকের খোঁজ পেয়েছি। এবারে পুরো চক্রটাকে ধরা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Delhi Sonu Punjaban দিল্লি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE