Advertisement
২৮ মার্চ ২০২৩
শিনা বরা হত্যাকাণ্ড

সিবিআই হেফাজত বাড়ল পিটারের

আপাতত সিবিআইয়ের হেফাজতেই থাকছেন পিটার মুখোপাধ্যায়। তাঁকে আরও জেরা করার প্রয়োজন রয়েছে বলে পিটারকে আরও কিছু দিন নিজেদের হেফাজতে রাখার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানায় সিবিআই।

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৫ ০৩:৪৭
Share: Save:

আপাতত সিবিআইয়ের হেফাজতেই থাকছেন পিটার মুখোপাধ্যায়। তাঁকে আরও জেরা করার প্রয়োজন রয়েছে বলে পিটারকে আরও কিছু দিন নিজেদের হেফাজতে রাখার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানায় সিবিআই। তাই ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত তাঁকে সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল আদালত। যদিও নিজের মন্তব্যে অনড় পিটার আজও দাবি করেছেন, শিনাকে খুনের বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না।

Advertisement

সোমবার আদালতে সিবিআই জানিয়েছে, শিনাকে খুন করার পরে যখন ইন্দ্রাণী তাঁর ই-মেল ব্যবহার করতে শুরু করেন তখন ইন্দ্রাণীর পাশেই ছিলেন পিটার। গোটাটাই জানতেন তিনি। সিবিআইয়ের কৌঁসুলি বলেন, এখনও পর্যন্ত তদন্তের গতিপ্রকৃতি দেখে মনে হচ্ছে মূলত অর্থের জন্যেই শিনা বরাকে খুন করেছেন ইন্দ্রাণী। সেই কাজে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন প্রাক্তন স্বামী সঞ্জীব খন্না এবং গাড়ির চালক শ্যাম রাই। আর পরিকল্পনার সবটাই জানতেন ইন্দ্রাণীর বর্তমান স্বামী পিটার। ওই ঘটনার সময় তিনি বিদেশে ছিলেন। তবে শিনাকে খুনের আগে-পরে একাধিক বার ইন্দ্রাণীকে ফোন করে দীর্ঘ সময় কথা বলেছিলেন পিটার।

এ দিনই আবার মুম্বইয়ের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (আইন ও শৃঙ্খলা) দেবেন ভারতী সিবিআইকে জানান, বেশ কয়েক বছর আগে পিটার এবং ইন্দ্রাণী এক নিখোঁজ আত্মীয়ের হদিস পেতে সাহায্য চেয়েছিলেন তাঁর কাছে। তখন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) ছিলেন তিনি। একটি ফোন নম্বর দিয়ে ইন্দ্রাণী এবং পিটার তাঁকে অনুরোধ করেছিলেন, নম্বরটি কোথা থেকে ব্যবহার করা হচ্ছে সেই তথ্য জেনে দেওয়ার জন্য। দেবেন সেই কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন অন্য এক অফিসারকে। কিন্তু পরে মুখোপাধ্যায়ের দম্পতি তাঁকে ফের যোগাযোগ করে বলেন, নিখোঁজ আত্মীয়ের খোঁজ মিলেছে। তাই আর কোনও তথ্যের প্রয়োজন নেই। সিবিআই মনে করছে, শিনা বরা নিখোঁজ— এই তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া ইন্দ্রাণী এবং পিটার এই পথ নিয়েছিলেন।

একটি সংবাদ সংস্থা সোমবার দাবি করেছে, সব সম্পর্ক শেষ করে দিতে চেয়ে ‘শিনা’র ফোন থেকে রাহুল মুখোপাধ্যায় যে মেসেজ পেয়েছিলেন, তা সত্যি বলে মেনে নিতে পারেননি। মেসেজে লেখা ছিল, ‘‘আমার জীবনে এক নতুন পুরুষ এসেছেন। তাই তুমি আমাকে ভুলে যাও। আমি আমেরিকায় চলে গিয়েছি।’’ এই মেসেজ দেখে প্রথমে স্তম্ভিত হন পিটারের ছেলে রাহুল মুখোপাধ্যায়। পরে থানায় গিয়ে শিনার নামে নিখোঁজ ডায়রি করতেও চেষ্টা করেন তিনি। তবে পুলিশ তাঁর কথায় সে ভাবে গুরুত্ব দেয়নি বলে সিবিআইয়ের কাছে দাবি করেছেন রাহুল। তার পর রাহুল তাঁর বাবার কাছে শিনার বিষয়ে জানতে চান। পিটার তখন ছেলেকে বোঝাতে চেষ্টা করেন, শিনা রাহুলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। সময় নষ্ট না করে রাহুলকে নিজের কথা ভাবতে পরামর্শও দিয়েছিলেন পিটার। বাবার কথা বিশ্বাস করেননি রাহুল। তখন বাবা-ছেলের মধ্যে এ বিষয়ে কথা কাটাকাটিও হয়েছিল। সোমবার শিনার ভাই মিখাইল বরাও সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শিনা আচমকা উধাও হয়ে যাওয়ার পরে তিনি ও রাহুল বারবার পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন। কেউ তাঁদের কথায় পাত্তা দেয়নি।

Advertisement

শিনা হত্যাকাণ্ডে ইন্দ্রাণী বা পিটারের ভূমিকা এখনও প্রমাণ হয়নি। কিন্তু শিনার জন্য কি ভাঙন ধরেছিল ইন্দ্রাণী-পিটারের দাম্পত্যে? ইন্দ্রাণী ও তাঁর প্রাক্তন স্বামী সঞ্জীব খন্নার কন্যা বিধির কথায় তেমনটাই আঁচ মিলেছে। এ দিন তিনি সিবিআইয়ের কাছে দাবি করেন, পিটারের সঙ্গে বিচ্ছেদের কথা ভাবছিলেন ইন্দ্রাণী। বিধির কথায়, ‘‘এক বার জি়জ্ঞাসা করেছিলাম, শিনা কি তোমার মেয়ে? মা প্রচণ্ড বকাঝকা করেছিলেন। বলেছিলেন, যত
নষ্টের গোড়া রাহুল। ওই উল্টোপাল্টা কথা বলে সকলের মনে সন্দেহ জাগাচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.