Advertisement
E-Paper

মনে হচ্ছে ’৭৮-এর বন্যার চেয়েও ভয়াবহ দশা

চারদিকে জল। কিন্তু বাড়িতে বসে খাওয়ার জলটুকু পাব কি না, সেই দুশ্চিন্তা ক্রমেই চেপে বসছে। মঙ্গলবার রাতেই বিদ্যুৎ চলে গিয়েছে। তার পর থেকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত উপরের ট্যাঙ্কে জমানো জলেই চলছিল। সেই জল যে আর কত ক্ষণ থাকবে বুঝতে পারছি না।

শান্তনু দাশ

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৪:১৫
ছবি: এএফপি।

ছবি: এএফপি।

চারদিকে জল। কিন্তু বাড়িতে বসে খাওয়ার জলটুকু পাব কি না, সেই দুশ্চিন্তা ক্রমেই চেপে বসছে। মঙ্গলবার রাতেই বিদ্যুৎ চলে গিয়েছে। তার পর থেকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত উপরের ট্যাঙ্কে জমানো জলেই চলছিল। সেই জল যে আর কত ক্ষণ থাকবে বুঝতে পারছি না। যে হারে বৃষ্টি হচ্ছে, ছাদে গিয়ে যে ট্যাঙ্ক খুলে দেখব, তারও ভরসা পাচ্ছি না।

১৯৯২ থেকে চেন্নাইয়ে আছি। কিন্তু এমন পরিস্থিতি কখনও দেখিনি। শহরের উত্তরপূর্ব দিকে আন্নানগরে থাকি। আমাদের আবাসনে এখনও জল ঢোকেনি। তবে ভয় হচ্ছে হয়তো বৃহস্পতিবারই দেখব, জল কোথাও যেতে না পেরে ভিতরে ঢুকছে।

এ দিন সকালে বৃষ্টি কমেই এসেছিল। ভেবেছিলাম, দুর্যোগ বুঝি কাটল। সবাই বাজারে বেরিয়েছিলাম। যে ক’টা দোকান খোলা ছিল, সেখানে হামলে পড়েছিলাম। ভেবেছিলাম, পরে আরও জিনিস কিনব। কিন্তু বাড়ি ফিরতে না ফিরতেই ফের আকাশ ভেঙে পড়ল। বাকিদের মতো স্ত্রী-মেয়ে নিয়ে আমিও বন্দি হয়ে পড়লাম।

স্কুল, অফিস বন্ধ। বিদ্যুৎ নেই, তাই টিভিও চলছে না। কোথায় কী হচ্ছে, খবর পাচ্ছি না। সকালে কোনও খবরের কাগজও আসেনি। বাজারে গিয়ে কিছু কিছু খবর পেয়েছিলাম। শুনেছিলাম, ট্রেন বন্ধ। বিমানও চলছে না। বাস-অটো যে চলছে না, সে তো দেখতেই পাচ্ছি। এখানে মিনিবাসের মতো এক ধরনের এসি বাস জনপ্রিয়। সোমবার থেকে তার একটাও দেখিনি। ফেসবুকে যে বাইরের খবর পাব, তা-ও সম্ভব হচ্ছে না। কারণ চার্জ ফুরিয়ে যাবে। মোবাইলটাও সাবধানে ব্যবহার করতে হচ্ছে। এই যে কথা বলছি, কখন চার্জ শেষ হবে বুঝতে পারছি না। চার্জ ফুরোলেই বাইরের জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন। কারণ ল্যান্ড লাইন তো বৃষ্টি শুরু হতেই বন্ধ। তবে লোকমুখে যা শুনছি, শহরের অন্য অঞ্চলের চেয়ে আমরা ভাল আছি।

বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকাগুলোয় আগে অনেক জলাশয় ছিল। সেই সব বুজিয়ে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, বহুতল হয়েছে। সেখানে শুনেছি একতলা সমান উঁচু জল। ওই এলাকায় বাইরের বহু ছেলেমেয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে। ওরা কেমন আছে কে জানে? এখানে অনেক সকালে দুধ আসে। আজ এসেছে এগারোটায়। দুধওয়ালার কাছে শুনেছি, অনেক জায়গায় দুধ দিতে যেতেই পারেনি। সেখানে গলা জল। সেনাবাহিনীর স্পিডবোট চলছে।

১৯৭৮ সালে ভয়াবহ বৃষ্টি হয়েছিল কলকাতায়। তখন কলকাতাতেই ছিলাম। কিন্তু সে বারও এত খারাপ অবস্থা হয়নি। কবে যে বেরোতে পারব, বুঝতে পারছি না।

(কর্মসূত্রে ২৩ বছর চেন্নাইয়ের বাসিন্দা)

flood chennai 1978 flood worrisome situation shantanu das
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy