Advertisement
E-Paper

ভাবী রাষ্ট্রপতি স্মৃতি, জ্যোতিষ-গণনায় হইচই

গ্রহ-তারা ভাল নয়। দিনকাল ভাল নয়। তাই কি কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী ফের জ্যোতিষীর দোরগোড়ায়? তা-ও আবার টানা চার ঘণ্টা? জ্যোতিষী আবার গণনার পরে জানিয়েছেন, মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি এক দিন ভারতের রাষ্ট্রপতি হবেন! যে খবর প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:২৪
রাজস্থানের সেই জ্যোতিষীর কাছে মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। ছবি: আজ তকের সৌজন্যে।

রাজস্থানের সেই জ্যোতিষীর কাছে মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। ছবি: আজ তকের সৌজন্যে।

গ্রহ-তারা ভাল নয়। দিনকাল ভাল নয়। তাই কি কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী ফের জ্যোতিষীর দোরগোড়ায়? তা-ও আবার টানা চার ঘণ্টা? জ্যোতিষী আবার গণনার পরে জানিয়েছেন, মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি এক দিন ভারতের রাষ্ট্রপতি হবেন! যে খবর প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক।

রবিবার স্বামী জুবিন ইরানির সঙ্গে হঠাৎ ঝটিকা সফরে রাজস্থান গিয়েছিলেন স্মৃতি ইরানি। কিন্তু কেন? পরে জানা যায়, মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রাজস্থানের ভিলওয়ারার কারোই গ্রামে গিয়েছিলেন বিশেষ এক জনকে ধন্যবাদ দিতে। কে তিনি?

নাম, পণ্ডিত নাথুলাল ব্যাস। পেশায় জ্যোতিষী। স্মৃতি যে কালে কালে মন্ত্রী হবেন, সেটা আগে থেকে জানিয়েছিলেন নাথুলালই। শুধু তাই নয়, রাজস্থানের এই জ্যোতিষী গত বছর নাকি বলেছিলেন, ২০১৪-র লোকসভা ভোটে হেরে গেলেও স্মৃতির মন্ত্রী হওয়া কেউ আটকাতে পারবে না। যে কথা অক্ষরে অক্ষরে মিলে গিয়েছে! অমেঠি আসনে কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীর কাছে হেরে গেলেও মোদী মন্ত্রিসভায় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী হয়েছেন স্মৃতি। আর সেই জন্যই নাকি নাথুলালকে কৃতজ্ঞতা জানাতে গিয়েছিলেন তিনি।

আর এ বারের সাক্ষাতে আরও চমক! স্মৃতিকে দারুণ খুশ-খবর দিয়েছেন নাথু। তাঁর হাতের রেখা খুঁটিয়ে দেখে এ বার নাথুলালের ভবিষ্যদ্বাণী: মন্ত্রী স্মৃতি আগামী দিনে ভারতের রাষ্ট্রপতি হবেন! একটি সূত্রের দাবি, নাথুলালের কাছে চার ঘণ্টা ঠায় বসেছিলেন স্মৃতি। নিজের দু’হাত জ্যোতিষীর কাছে মেলে ধরে জানতে চেয়েছেন, আগামী দিনে ঠিক কোন দিকে এগোবে তাঁর রাজনৈতিক জীবন। কী কী ঘটবে ব্যক্তিগত স্তরে। নাথুলালও স্লেট-চক নিয়ে আঁক কষে বার করেছেন, স্মৃতিই ভারতের ভাবী রাষ্ট্রপতি।

আইআইটি, আইআইএমের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্বভার যে মন্ত্রীর কাঁধে, তিনিই কিনা জ্যোতিষীর দ্বারস্থ! সেই ছবি জনসমক্ষেও এসে গিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন উঠেছে, দেশের মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী যদি এ ধরনের অবৈজ্ঞানিক মানসিকতা সমর্থন করেন, তা হলে তিনি কি কুসংস্কারকেই বৈধতা দিচ্ছেন না? স্মৃতি অবশ্য এই হইচইয়ে বিরক্ত হয়ে সোমবার বলেছেন, “আমি ব্যক্তিগত জীবনে কী করছি, তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মাথাব্যথা থাকার কথা নয়। টিআরপি-র জন্য আমায় বেছে নেওয়া হচ্ছে। যদি তাতে সংবাদমাধ্যমের দু’পয়সা লাভ হয়, তা হলে ভালই। আমি ওদের সাহায্য করতে পেরে খুশি।”

এই স্মৃতিই নাকি বহু বছর আগেও আর এক জ্যোতিষীর কাছে গিয়েছিলেন। তখন তিনি সবে টিভি সিরিয়ালের অভিনেত্রী হয়ে উঠছেন। সেই জ্যোতিষী স্মৃতির হাত হাতড়ে তেমন ইতিবাচক কিছুই খুঁজে পাননি। যা শুনে সেখান থেকে উঠে পড়েন স্মৃতি। আত্মবিশ্বাসে ভরপুর মেয়েটি তাঁকে শুনিয়ে যান, দশ বছর পরে দেখবেন, আমি কী হয়েছি!

সেই আত্মবিশ্বাসে কি এতটাই চিড় ধরেছে যে রাজনৈতিক জীবনে যথেষ্ট সফল হওয়ার পরেও জ্যোতিষীর কাছে হত্যে দিতে হচ্ছে স্মৃতিকে? দেশের শিক্ষা-ব্যবস্থা সামলাতেও কি তিনি ভরসা করেন ‘ভবিষ্যৎদ্রষ্টাদের’? স্মৃতির এই কাজের সমালোচনায় কংগ্রেস নেতা মণিশঙ্কর আইয়ার বলেছেন, “এক জন মন্ত্রী জ্যোতিষীর কাছে যেতে পারেন না। তাঁকে বিজ্ঞানমনস্ক হতে হবে।”

স্মৃতির আর এক সতীর্থ সংযুক্ত জনতা দলের নেতা এবং রাজ্যসভার সাংসদ আলি আনওয়ারও প্রশ্ন তুলেছেন এই ব্যাপারে। তাঁর মতে, শিক্ষার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির উচিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে কথা বলা। আর তিনিই কিনা জ্যোতিষে আস্থা রাখছেন! মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হলে আনওয়ার তাঁকে শুধু বলতে চান, “হাথোঁ কি লকিরো পর ইতনা না অ্যাতবার করিয়ে/ নসিব উনকা ভি হোতা হ্যায় জিনকে হাত নহি হোতে...।” যার অর্থ, হাতের রেখায় এত ভরসা কোরোনা/ যাঁর হাত নেই, ভাগ্য তাঁরও পাশে থাকে।

smriti irani astrology pandit nathulal byas PM post india HRD minister bjp rajastan national news online news
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy