Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

মনোরোগীদের জন্য হাসপাতালেই বাড়ির পরিবেশ

ছুটি পাওয়ার আগে হাসপাতালেই কিছু দিন মিলবে বাড়ির পরিবেশ। সুস্থ হয়ে ওঠা মনোরোগীদের জন্য এমনই ব্যবস্থা চালু করছে ‘রাঁচি ইনস্টিটিউট অব নিউরো সাইক্রিয়াট্রি অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্স’ (সংক্ষেপে, রিনপাস)। রাঁচির কাঁকের মানসিক হাসপাতাল হিসেবেই যেটি পরিচিত।

আর্যভট্ট খান
রাঁচি শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৫ ০৩:১১
Share: Save:

ছুটি পাওয়ার আগে হাসপাতালেই কিছু দিন মিলবে বাড়ির পরিবেশ।

সুস্থ হয়ে ওঠা মনোরোগীদের জন্য এমনই ব্যবস্থা চালু করছে ‘রাঁচি ইনস্টিটিউট অব নিউরো সাইক্রিয়াট্রি অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্স’ (সংক্ষেপে, রিনপাস)। রাঁচির কাঁকের মানসিক হাসপাতাল হিসেবেই যেটি পরিচিত।

সংস্থার নির্দেশক আমূলরঞ্জন সিংহ বলছেন, ‘‘সুস্থ্ হয়ে বাড়ি ফেরার পর কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, সেই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে উঠতে পারছেন না অনেকেই। তাতে ফের তাঁদের মধ্যে অস্বাভাবিকতা ফিরে আসছে। বাধ্য হয়ে তাঁকে হাসপাতালে ফিরিয়ে আনছেন পরিজনরা।’’ সেই সমস্যা কাটাতেই ‘হাফ ওয়ে হোম’ পরিষেবা চালু করতে চাইছেন রিনপাস কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতালের নির্দেশক জানান, কিছুটা সুস্থ্ হওয়ার পরে রোগীদের নানা ধরনের হাতের কাজ শেখানোর ব্যবস্থা তাঁদের রয়েছে। বাগান, কাঠের আসবাবপত্র এমনকী বেকারির পাউরুটিও তৈরি করছেন রিনপাসের রোগীরা। তাতে তাঁদের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই ফিরে আসছে। তিনি বলেন, ‘‘বাড়ি ফেরার পর কিছু সময়ে সে সব হাতেকলমে শেখানো কাজেও লাভ হচ্ছে না। বাড়ির পরিবেশে মানিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছে। এতে সব চেয়ে বেশি অসুবিধা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ বা রোগীর পরিজনদের।’’

রিনপাস সূত্রে খবর, তাঁদের চিকিৎসাকেন্দ্রে সব কিছুই হয় ঘড়ির কাঁটা ধরে। খাবার, স্নান করা, ওষুধ দেওয়া, খাবার মেনু— সব কিছুই সেখানে নিয়মে বাঁধা। বেশিরভাগ রোগীর বাড়িতেই সে সব এত সময় মেনে না-ও চলতে পারে। বাড়িতে রোগীকে ওষুধ বা খাবার খেতে দেওয়ার লোক সব সময় না-ও থাকতে পারেন। দুপুর বা রাতের খাবারের সময় বাড়িতে সময়মতো না-ও পেতে পারেন সদ্য সুস্থ হওয়া রোগীরা। সে সব কারণেই অনেক সময় রোগী বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পর অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে পারেন। তাতেই ফের ফিরতে পারে মানসিক অস্বাভাবিকতা।

রিনপাস চিকিৎসকদের বক্তব্য, দৈনন্দিন ঘরের কাজই শুধু নয়, বর্তমানে হাসপাতালের পুনর্বাসনকেন্দ্রে প্রতি দিন ঘণ্টাপাঁচেক কাজে ব্যস্ত রাখা হয় রোগীদের। সুস্থ্ হয়ে বাড়ি ফেরার পর অনেক সময় কোনও কাজ করতে না পেরে ঘণ্টার পর ঘন্টা অলস বসে থাকেন তাঁরা। আত্মীয়রাও কখনও তাঁদের কাজ করতে দেন না। তা থেকে সুস্থ হওয়া রোগীরা অধৈর্য হয়ে ওঠেন। ক্রমশ কমতে থাকে আত্মবিশ্বাস। তা থেকে ফের মানসিক রোগের লক্ষণ ফিরে আসতে পারে। রিনপাস নির্দেশক জানান, বাড়ি ফেরার আগে আত্মবিশ্বাস বাড়াতেই হাসপাতাল চত্বরে ‘হাফ ওয়ে হোম’ কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের সেখানকার কয়েকটি ঘরে মাসখানেক রাখা হবে। সে সব ঘরে সব কিছু নিয়ম, সময় মেনে হবে না। হাসপাতাল-কর্তার কথায়, ‘‘অনেক সময় বাড়িতে ফেরার পর রোগীকে একা একা রাস্তায় পাঠাতে চান না পরিজনরা। এখানে যদি তাঁরা একা একা বাজারে যেতে পারেন, তা হলে আত্মবিশ্বাস অনেকটা বাড়িয়েই ফিরতে পারবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE