রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা না করেই একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফের কাঠগড়ায় নরেন্দ্র মোদীর সরকার। অভিযোগ, নিজেদের সুবিধা মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্যগুলিকে আর্থিক ভাবে বিপাকে ফেলেছে কেন্দ্র। এর বিরুদ্ধে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
চতুর্দশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, কেন্দ্র যে কর আদায় করে, তার ৪২% রাজ্যগুলিকে ভাগ করে দিতে হয়। এত দিন কেন্দ্র তা দিত মাসের ১ তারিখ। কিন্তু গত ১৬ অগস্ট হঠাৎই রাজ্যগুলিকে চিঠি দিয়ে অরুণ জেটলির অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, চলতি বছরের বাকি ক’মাস তা ১৫ তারিখ দেওয়া হবে। ২০১৮-’১৯ থেকে তা মেটানো হবে তিন মাস অন্তর। এতে পশ্চিমবঙ্গ শুধু নয়, সমস্যায় পড়েছে তেলঙ্গানার মতো ধনী রাজ্যগুলিও। আর্থিক শৃঙ্খলা নষ্ট হবে বলে ক্ষোভ জানিয়েছে তারা।
পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র প্রতিবাদ জানিয়ে জেটলিকে কড়া চিঠি লিখেছেন। বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় করের ভাগ পাওয়াটা রাজ্যের সাংবিধানিক অধিকার। কেন্দ্র ইচ্ছেমতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এমন একতরফা সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের ধারণার পরিপন্থী।’’ অমিতবাবু গত ২২ সেপ্টেম্বর লেখা চিঠিতে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রের ওই সিদ্ধান্ত রাজ্য মানছে না।
আরও পড়ুন: গরবা দেখার ‘অপরাধে’ দলিত খুন গুজরাতে
পশ্চিমবঙ্গ কেন্দ্রীয় করের অংশ হিসেবে মাসে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা পায়। সরকারি কর্মচারীদের বেতন মেটানো হয় মাসের শেষ দিনে। কিন্তু মাস পয়লায় শিক্ষকদের বেতন ও অবসরপ্রাপ্তদের পেনশন দিতে হয়। কেন্দ্র থেকে পাওয়া করের ভাগের টাকাতেই তা মেটানো হত। হঠাৎ তা পিছিয়ে যাওয়ায় সরকারি কাজকর্ম চালানোই মুশকিল হয়ে পড়েছে।
নবান্ন সূত্রের খবর, বাধ্য হয়ে মাসের প্রথম সপ্তাহেই প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ধার করতে হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে। আগে থেকেই ঋণগ্রস্ত রাজ্যের ঘাড়ে চাপছে আরও সুদের বোঝা। জেটলিকে অমিতবাবু জানিয়েছেন, এমনিতেই জিএসটি চালুর ফলে রাজ্যের নিজস্ব কর বাবদ আয় নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। তা ছাড়া, ১ তারিখে কেন্দ্রের থেকে প্রাপ্য অর্থ পাওয়াটা বহু দিনের রীতি। দেরি হলে রাজ্যের আয়-ব্যয়ের ভারসাম্যটাই নষ্ট হবে।
কেন্দ্রই বা কেন হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্ত নিল? অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, এর মূলেও সেই জিএসটি। জিএসটি বাবদ কত টাকা জমা পড়বে, কাঁচামাল বাবদ তার কত অংশ ফেরত দিতে হবে— এখনও তা স্পষ্ট নয়। সে কারণে মাসের শুরুতেই কোষাগার খালি না করার এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু রাজ্যগুলির সঙ্গে কেন কথা বলা হল না? কোনও ব্যাখ্যা মিলছে না তার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy