বিচারবিভাগের অন্তর্কলহ উসকে দিচ্ছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন কলেজিয়ামের একটি সিদ্ধান্তে ক্ষোভ জানিয়েছেন অন্য বিচারপতিরা। সেই সিদ্ধান্তে তড়িঘড়ি সায় দিয়েছে মোদী সরকার। আর আজই অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, ‘‘এক বছর আগে বিচারপতিদের সাংবাদিক বৈঠক বিচারবিভাগের অভাবনীয় ক্ষতি করেছে।’’
গত বছর জানুয়ারিতে চার প্রবীণ বিচারপতি সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ খোলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বিরুদ্ধে। যদিও তাঁর উপরে প্রভাব খাটানোর জন্য আঙুল উঠেছিল মোদী সরকারের দিকেই। ওই চার জনের মধ্যে তিন জন অবসর নিয়েছেন। চতুর্থ জন বর্তমান প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। তাঁকে নিশানা করে জেটলির বক্তব্য, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিকে আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছিল। তাঁর উত্তরসূরি (বর্তমান প্রধান বিচারপতি)-রও একই পরিস্থিতি এড়ানো কঠিন হবে।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন কলেজিয়াম বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী ও বিচারপতি সঞ্জীব খন্নাকে সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগের সুপারিশ করেছে। এই সিদ্ধান্ত ঘিরেই অসন্তোষ। তা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক কলেজিয়ামের সুপারিশে সায় দিয়েছে। শুক্রবারই ওই দু’জন শপথ নেবেন।
প্রধান বিচারপতি আজ বলেন, ‘‘সব কিছু ইতিবাচক ভাবে দেখার চেষ্টা করুন। পৃথিবীটা আরও সুন্দর হবে।’’ যাঁর উদ্দেশে এই মন্তব্য, সেই প্রশান্ত ভূষণও প্রধান বিচারপতিকে নিশানা করেছিলেন। প্রধান বিচারপতি তাঁকে বলেন, ‘‘কাল থেকে চেষ্টা করুন সব কিছু ইতিবাচক হিসেবে দেখার।’’
কিন্তু সব যে ইতিবাচক নেই, আজ তা কিছুটা বোঝা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে সাড়ে ১০টা বাজলেও সুপ্রিম কোর্টের এক, দুই, তিন নম্বর এজলাস ফাঁকা ছিল। বেলা ১২টায় এক নম্বর এজলাসে আসেন প্রধান বিচারপতি। দ্বিতীয় প্রবীণতম বিচারপতি এ কে সিক্রি বেলা সাড়ে ১১টায় এসে জানান, তিনি অসুস্থ। সেই সঙ্গে বলেন, ‘‘লোকে আজকাল নানা রকম আন্দাজ করে।’’
বিচারপতি সঞ্জীব খন্নাকে নিয়ে আপত্তির কারণ, দেশে তাঁর থেকে প্রবীণ আরও ৩২ জন বিচারপতি আছেন। বিচারপতি কে এম জোসেফের ক্ষেত্রে আইন মন্ত্রক একই রকম যুক্তি দিলেও এ ক্ষেত্রে কোনও আপত্তি না তুলে দু’দিনেই সায় দিয়েছে। আইনজীবীদের প্রশ্ন, মোদী সরকার কি এ ভাবে বিচারবিভাগের ফাটল উসকে দিতে চাইছে?
জল্পনা উস্কে জেটলি এ দিন বলেন, যখন আইন মন্ত্রক আপত্তি তুলেছিল, তখন তা ছিল বিচারবিভাগের উপরে আঘাত। এখন একই প্রশ্ন উঠছে। এ বার তা বিচারবিভাগের স্বাধীনতার জন্য ধর্মযুদ্ধ। তাঁর মন্তব্য, ‘‘এক অদ্ভুত দ্বিচারিতা!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy