শিল্পপতি গৌতম আদানির মামলার রায় ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। —ফাইল চিত্র।
সেবির বিধি ভেঙে শেয়ারের দর বাড়ানোর অভিযোগ উঠেছিল আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের গভীরে পৌঁছতে সেবিরই অভ্যন্তরীণ তদন্তে ভরসা করল সুপ্রিম কোর্ট।
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বুধবার জানায়, কোনও অসমর্থিত রিপোর্ট (পড়ুন হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট)-এ ভরসা করে জাতীয় স্তরের নিয়ন্ত্রক সংস্থার তদন্তে সন্দেহ করা যথাযথ নয়। ওই রিপোর্টকে বড় জোর এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হিসাবে দেখা যেতে পারে। প্রামাণ্য নথি হিসাবে নয়। এই মর্মে হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের ভিত্তিতে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তে যে সিট গঠনের দাবি উঠেছিল, বুধবার তা-ও খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
দেশের শেয়ার বাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি। এই সেবিরই বেঁধে দেওয়া আইন ভাঙার অভিযোগ উঠেছিল শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে। গত জানুয়ারিতে আমেরিকার শেয়ার বিশ্লেষক সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ তাদের রিপোর্টে দাবি করেছিল, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কারচুপি করে নিজেদের নথিভুক্ত সংস্থাগুলির শেয়ার দর বাড়িয়েছে আদানি গোষ্ঠী। সেবির বিধিকে ফাঁকি দিতে ভুঁইফোঁড় বিদেশি সংস্থার মাধ্যমে নিজেদের সংস্থার শেয়ার কিনিয়েছে তারা। সেই রিপোর্টেরই ভিত্তিতে দু’টি মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। তার মধ্যে একটিতে সিট গঠনের আর্জি জানানো হয়। বুধবার সেই মামলারই রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, আদানি-হিন্ডেনবার্গ মামলায় সিট গঠন করা হবে না। এ ব্যাপারে সেবির তদন্তেই আস্থা রাখছে তারা।
বুধবার দেশের প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই মামলায় রায় ঘোষণা করে। সুপ্রিম কোর্ট বলে, ‘‘নিয়ন্ত্রক সংস্থার আওতায় যে খানে তদন্ত চলছে, সেখানে শীর্ষ আদালত দখলদারী করতে পারে না। সেবি যে ভাবে তদন্ত করছিল, সে ভাবেই এই সংক্রান্ত বাকি দু’টি মামলার তদন্তও এগিয়ে নিয়ে যাবে।’’
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ত্রয় জানিয়েছেন, সেবি আইনানুগ তদন্ত করবে। আগামী তিন মাসের মধ্যে আদানি-হিন্ডেনবার্গ মামলায় রিপোর্ট পেশ করবে। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্ট এ ব্যাপারে নজরদারির জন্য যে প্যানেল তৈরি করেছিল, কেন্দ্রীয় সরকার বা সেবি চাইলে সেই প্যানেলের সুপারিশের ভিত্তিতে পদক্ষেপ করতে পারে। একই সঙ্গে হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টে কোনও রকম আইন ভাঙা হয়েছে কি না তা-ও কেন্দ্রীয় সরকার এবং সেবিকে খতিয়ে দেখতে বলেছে আদালত।
একই সঙ্গে আবেদনকারীদের উদ্দেশে আদালতের মন্তব্য, ‘‘সেবি-র তদন্ত ব্যাতিরেকে আলাদা তদন্তের বা সিট গঠনের যে দাবি করা হচ্ছে, তা হিন্ডেনবার্গ বা ওই ধরনের যেকোনও রিপোর্টের ভিত্তিতে করা যায় না। এই ধরনের রিপোর্টের ভিত্তিতে মামলা করা হলে তাতে কাজের কাজ কিছু তো হয়ই না। উল্টে অকাজ হয় বেশি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy