সুপ্রিম কোর্ট জানাল, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার পদে ‘কঠিন চরিত্র’-এর কাউকে নিয়োগ করা খুব জরুরি। — ফাইল ছবি।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) পদে নিয়োগ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। জানাল, এই পদে ‘কঠিন চরিত্র’-এর কাউকে নিয়োগ করা খুব জরুরি। এত কাল মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের ‘ভঙ্গুর কাঁধে’ বিশাল ক্ষমতা চাপিয়ে তা অপব্যয় করা হয়েছে। শীর্ষ আদালতের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে টিএন সেশানের মতো কাউকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার পদে বসানো জরুরি। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার পদে ছিলেন সেশান।
নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সংস্কার আনার দাবি জানিয়ে পিটিশন জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে। তাতে দাবি করা হয়, যে ভাবে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগ করা হয়, সে রকমই কলেজিয়ামের মাধ্যমে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করা হোক। তাতে স্বচ্ছতা বজায় থাকবে। সেই পিটিশন শুনছে বিচারপতি কেএম জোসেফের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ। বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি অনিরুদ্ধ বোস, অজয় রস্তোগী, হৃষিকেশ রায়, সিটি রবিকুমার। পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার পদে ‘সেরা ব্যক্তি’কে নিয়োগই তাদের লক্ষ্য।
মঙ্গলবারের শুনানির পর বেঞ্চ বলেছে, ‘‘এ যাবৎ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার পদে বহু জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। টিএন সেশানের মতো ব্যক্তিত্ব সচরাচরই আসেন। মু্খ্য নির্বাচন কমিশনার এবং দুই নির্বাচন কমিশনারের ভঙ্গুর কাঁধে বিশাল ক্ষমতা দিয়ে নষ্ট করা হয়েছে। তাই মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের পদে সেরা কাউকে নিয়োগ করতে হবে আমাদের।’’
এই বিষয়ে শীর্ষ আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, ২০০৪ সাল থেকে এক জন মুখ্য নির্বাচন কমিশনারও ছ’বছরের মেয়াদ পূরণ করতে পারেননি। ইউপিএ সরকারের ১০ বছরের শাসনকালে এই পদে বসেছেন ছ’জন। এনডিএ সরকারের আট বছরের শাসনকালে এই পদে বসেছেন আট জন। এই নিয়ে কেন্দ্র সরকারকে একহাত নিতে ছাড়েনি সুপ্রিম কোর্ট। বলেছে, ‘‘মু্খ্য নির্বাচন কমিশনারকে এতটাই স্বল্প মেয়াদে বসার সুযোগ দিয়েছে সরকার, যে মনে হচ্ছে নিলাম ডাকা হয়েছে।’’
কেন্দ্রীয় সরকারের হয়ে এই শুনানিতে সওয়াল করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানি। তাঁর যু্ক্তি, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার পদে সেরা কাউকে নিয়োগের বিষয়ে কোনও আপত্তি নেই সরকারের। কিন্তু প্রশ্ন হল, তা কী ভাবে করা হবে? তাঁর কথায়, ‘‘সংবিধানে কোনও ফাঁক নেই। বর্তমানে মন্ত্রী পরিষদের পরামর্শের ভিত্তিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করেন রাষ্ট্রপতি।’’ যদিও কলেজিয়াম প্রথার মাধ্যমে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের বিরোধিতা করেছে কেন্দ্র। তার যুক্তি, এর ফলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy