ভারত পাকিস্তান কূটনৈতিক সংঘাতের বৃহত্তর রঙ্গমঞ্চে জুলাই মাসটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে বলে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর। জুলাই দ্বৈরথের সূচনা হবে মাসের প্রথম দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকেই। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর উন্মুক্ত এবং স্বাধীন ভারত-প্রশান্ত মহাসাগর নিয়ে আলোচনার লক্ষ্যে চতুর্দেশীয় অক্ষ কোয়াডের বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে ওয়াশিংটনে রওনা হয়েছেন। মঙ্গলবার গভীর রাতে (ভারতীয় সময়) বৈঠক। সূত্রের খবর, আমেরিকা যাত্রার এই সুযোগে জয়শঙ্কর পাকিস্তানের সীমান্ত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভাষ্য তৈরি করবেন অস্ট্রেলিয়া, জাপানের বিদেশমন্ত্রীদের সামনে। পাশাপাশি আমেরিকার বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়োর সঙ্গেও কথা হবে তাঁর।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই সফরেই নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সদর দফতরে একটি আলোকচিত্রের প্রদর্শনী উদ্বোধন করবেন ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী। যার বিষয়, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ এবং তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের লড়াই। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানানো হচ্ছে, এই প্রদর্শনীটি অপারেশন সিঁদুরের পরে আন্তঃরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রচার গড়ে তোলার জন্য ভারতের কর্মসূচির অন্তর্গত। জানা গিয়েছে, এই প্রদর্শনীকে কাজে লাগিয়ে নয়াদিল্লি সীমান্ত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অভিযানে বিশ্বব্যাপী সিলমোহর সংগ্রহ করার চেষ্টা করবে। এই প্রদর্শনীর উদ্বোধনী বক্তৃতাতেও বিশদে অপারেশন সিঁদুর প্রসঙ্গ তুলে ধরবেন জয়শঙ্কর।
প্রসঙ্গত এই নিউ ইয়র্কেই রয়েছে আরও দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক, যার দু’টিতেই ছড়ি ঘোরাতে চাইবে পাকিস্তান। এই দুইয়ের মধ্যে একটিতে ভারত মোকাবিলা করার সুযোগ পাবে, অন্যটিতে নয়। জুলাইয়ের ২২ তারিখ রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ একটি মুক্তদ্বার বিতর্কসভার আয়োজন করছে, যার বিষয় ‘বহুপাক্ষিকতার মাধ্যমে শান্তি এবং নিরাপত্তার সন্ধান এবং সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধান খোঁজা’। নিরাপত্তা পরিষদের সন্ত্রাসবাদ বিষয়ক কমিটিতে অস্থায়ী সদস্য হিসেবে পাকিস্তান প্রেসিডেন্টের কাজ শুরু করছে ১ জুলাই থেকেই। ফলে ওই বিতর্কসভাকে কাজে লাগিয়ে কাশ্মীরকে আলোচনার টেবিলে এনে তার আন্তর্জাতিকীকরণের জন্য চেষ্টার ত্রুটি করবে না তারা। ওই বিতর্কে অংশ নিয়ে ভারতও চেষ্টা করবে পাকিস্তানের ভূমিকাকে সামনে নিয়ে আসতে। সেই সঙ্গে নিজের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি, সন্ত্রাসে সাধারণ মানুষের ক্ষয়ক্ষতির দিকটিকে তুলে ধরার জন্যও সাউথ ব্লক প্রস্তুতি শুরু করেছে বলে খবর। কিন্তু তার দু’দিন পরেই, ৪ জুলাই ওআইসি-ভুক্ত রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের মধ্যে বৈঠকের কথা রয়েছে। সেখানে পাকিস্তান একতরফা নিজেদের ভাষ্য তৈরি করার সুযোগ পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)