আমদাবাদের বিমান দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘মে-ডে’ শব্দটি মুখে মুখে ঘুরছে। উড়ান ক্ষেত্রে এই শব্দের অর্থ, ‘সাহায্য করো’, ‘হেল্প’!
১৯২০ সালে লন্ডনের ক্রয়ডন থেকে ফ্রান্সের লে বোর্জে বিমানবন্দরে উড়ান পরিবহণের সময়ে পরীক্ষামূলক ভাবে এই কথাটি প্রথম ব্যবহার করা হয়। ফরাসি ভাষায় পুরো কথাটি হল ‘ভেনে মেদে’। ব্রিটিশরা সেটাকেই ‘মে-ডে’ করে দেন। কোনও বিপদ হলে দ্রুত এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের কাছে বিপদবার্তা পাঠানোই এর উদ্দেশ্য।
আমি দেশ-বিদেশের আকাশে বিমান চালিয়েছি। বহু দেশের বিমানচালকের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমাদের দেশের বিমানচালক এবং বিমান কর্মীদের দক্ষতা প্রশ্নাতীত। এমনকি, প্রথম বিশ্বের সঙ্গে তুলনা টানলেও। এখানকার উড়ানকর্মীরা বিভিন্ন ধরনের অঞ্চলে এবং বিরূপ আবহাওয়ায় কাজ করতে সক্ষম। নিরাপত্তার প্রশ্নেও আমাদের দেশের নিয়ন্ত্রণ বিধি এবং কড়াকড়ি যথেষ্ট। বৃহস্পতিবারের ঘটনায় বোয়িংয়ের যে ড্রিমলাইনার বিমানটি জড়িত, তার প্রযুক্তিও আধুনিক। বিমানচালকেরাও যথেষ্ট অভিজ্ঞ। ইদানীং বিমান দুর্ঘটনা খুব কম ঘটে। কারণ, সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ফলে মৃত্যুর সংখ্যাও অন্যান্য দুর্ঘটনার তুলনায় অনেক কম। তা সত্ত্বেও এই ভয়ঙ্কর বিপর্যয় ঘটে গেল। এর ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব নয়। শোকপ্রকাশেরও কোনও ভাষা নেই। তার উপরে বিমানটি একটি মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলের উপরে পড়েছে। সেখানেও কত জন হতাহত হয়েছেন কে জানে! মনে রাখতে হবে, একটি বিমানে প্রায় ৯০-১০০ টন জ্বালানি থাকে। সেখানে সামান্য স্ফুলিঙ্গই বড় বিস্ফোরণের পক্ষে যথেষ্ট। এ ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটেছে। এখন ক’জনকে বাঁচানো সম্ভব হয় সেটাই আসল।
প্রাথমিক ভাবে পাখির ধাক্কায় বিমানের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে। আমদাবাদে পাখির সমস্যা আছে। আমার সেই অভিজ্ঞতা আছে। তবে এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। তদন্তের ফলাফলের দিকে নজর রাখতে হবে।
বিমান চালক
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)