শ্রীলঙ্কাবাসী শশীকলা। বিন্দু, কনকদুর্গার পর তিনি এ বার শবরীমালার মন্দিরে প্রবেশ করলেন।
বিন্দু, কনকদুর্গার পর এ বার শশীকলা। বৃহস্পতিবার রাতে শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করেন শ্রীলঙ্কার বছর ছেচল্লিশের এই মহিলা পূজারিনি। রাজ্য পুলিশের তরফে তার একটি সিসিটিভি ফুটেজও প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে মাথায় পুজোর সামগ্রী নিয়ে মন্দিরে ঢুকছেন শশীকলা।
মন্দিরে ঢোকার আগে শশীকলা সাংবাদিকদের কাছে জানিয়েছিলেন, মূল মন্দির থেকে মাত্র ১৮ পা দূর থেকেই তাঁকে আটকে দেয় পুলিশ। যদিও পুলিশ পরে জানিয়েছে, শশীকলা মন্দিরে ঢুকেছেন। তিনি এও জানিয়েছিলেন, মন্দিরে ঢুকতে গেলে যা যা নিয়ম দরকার সবই তিনি পালন করেছেন। ৪৮ দিন উপবাস করেছেন। তাঁর সঙ্গে থাকা মেডিক্যাল সার্টিফিকেটও দেখান শশীকলা। জানান, সার্টিফিকেটে পরিষ্কার লেখা আছে তাঁর শরীর থেকে ইউটেরাস বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল সব বয়সের মহিলারাই আয়াপ্পা স্বামীর মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে প্রবল ভাবে সরব হন আয়াপ্পা স্বামীর ভক্তরা। বিরোধিতা করে বিজেপি-সহ রাজ্যের হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো। বেশ কয়েক বার শবরীমালায় মহিলারা প্রবেশের চেষ্টা করেন। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের রোষের মুখে পড়ে ফিরে আসেন। এক মহিলা সাংবাদিকও মন্দিরে প্রবেশের চেষ্টা করতে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের হাতে হেনস্থা হন। পুলিশি পাহারায় মহিলা ভক্তদের মন্দিরে ঢোকানোর সব রকম ব্যবস্থা করে রাজ্য সরকার। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। মন্দির নিয়ে উত্তেজনার পারদ দিন দিন চড়ছিল। সেই উত্তেজনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছয় বুধবার।
আরও পড়ুন: পিঠে কিল-চড়, যন্ত্রণায় চোখে জল নিয়েও ক্যামেরা থেকে দৃষ্টি সরাননি চিত্র সাংবাদিক শাজিলা!
ওই দিন ভোরে পুলিশের বিন্দু ও কনকদুর্গা নামে দুই মহিলা মন্দিরে প্রবেশ করেন গোপনে। আর তাঁদের মন্দিরে গোপনে ঢুকিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে রাজ্য প্রশাসন। জঙ্গলের রাস্তা ধরে এসে অন্ধকার থাকতেই মন্দিরে ঢুকে পড়েই বিন্দু ও কনকদুর্গা। মন্দির থেকে বেরিয়ে তাঁরা জানিয়েছিলেন, মন্দিরের ভিতরে কেউ তাঁদের বাধা দেয়নি। যত গণ্ডগোল মন্দিরের বাইরেই!
দুই মহিলার মন্দিরে প্রবেশের খবর চাউর হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন আয়াপ্পা স্বামীর ভক্তরা।রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তাণ্ডব চলে। গাড়িতে ভাঙচুর, দোকানে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া, পাথর ও বোমা ছোড়ার মতো ঘটনাও ঘটে। পরস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ নামে। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় বিক্ষোভকারীদের। ৭৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। আহত হন অনেকে।
আরও পড়ুন: শবরীমালায় দুই মহিলাকে ভিতরে ঢোকাতে গোপনে ছক সাজায় পুলিশই!
মন্দিরে বিন্দু ও কনকদুর্গার প্রবেশের ঘটনায় জ্বলে উঠেছে রাজ্য। এ বার শশীকলার প্রবেশ সেই বিক্ষোভের আগুনে আরও ঘি ঢালবে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। কী ভাবে ওই দুই ভক্ত মন্দিরের পিছন দরজা দিয়ে ঢুকল তার তদন্তের দাবি জানিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যসভায় বিজেপির সাংসদ ভি মুরলীধরন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে চিঠি লিখেছেন।যদিও কেরলের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনেই সম্পূর্ণ সুরক্ষা দিয়ে ওই দুই মহিলাকে মন্দিরে ঢোকানো হয়েছে।
(কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদেরদেশবিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy