সাদা কালো জীবনটাকে রং-তুলি দিয়ে রঙিন করতে চেয়েছিলেন বাবা। রঙিন আঁচড়ের সৌজন্যে তিন সন্তানের সংসারে ডাল-ভাত জুটে যেত কোনও রকমে। কিন্তু শিল্পীর পেশাটাও একদিন অতীত হয়ে গেল। সড়ক দুর্ঘটনায় হাঁটু ভেঙে সেই যে শয্যাশায়ী হলেন, আর উঠলেন না। পাঁচ জনের সংসারটা তখন অথৈ জলে।
বাধ্য হয়েই লোকের বাড়ি ঠিকে কাজ ধরলেন মা। তিন সন্তানকে নিজের পায়ে দাঁড় করাতেই হবে, জেদ চেপে গেল। মায়ের সাহায্যে বাড়ি বাড়ি কাজ ধরল বড় মেয়ে আফসানও। মুখ পোড়ায়নি সন্তানরা। বড় মেয়ে আফসান, আজ কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌকাঠে। গর্বে উজ্জ্বল খেটে খাওয়া মায়ের মুখ। ঘরের কড়িকাঠে আবার রঙিন স্বপ্ন দেখছেন পঙ্গু বাবা।
বেঙ্গালুরুর এলু আফসান। বছর সতেরোর মেয়েটার পড়াশুনা করার একমাত্র সময় রাতে বাড়ি ফিরে। দিনের বেলাটা কেটে যায় মা-কে সাহায্য করতেই। মায়েরও বয়স হয়েছে। তার উপর বাড়ির বড় মেয়ে। ঘরে শয্যাশায়ী বাবা। ছোট দুই ভাই-বোন। ভাই সবে দশম শ্রেণি পাশ করেছে। বোন অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। দায়িত্ব এড়াবে কী করে? তাই সে-ও ১০ বাড়ি কাজ নিয়ে নিল। বাসন মাজা, কাপড় কাচা, ঘর পরিষ্কার। হাড় ভাঙা খাটুনির পরেও মা-বাবার স্বপ্নটার কথা ভোলেনি।