Advertisement
E-Paper

মানুষকে বাঁচাতে একশো দিনের কাজে জোর দিন, কেন্দ্রকে আর্জি সনিয়ার

সনিয়ার মতে, এটা জাতীয় সঙ্কটের সময়। এখন রাজনীতি করার সময় নয়। এটা শুধুমাত্র বিজেপি বনাম কংগ্রেসের ইস্যুও নয়।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২০ ১৭:০৭
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

দেশ জোড়া লকডাউন থেকে বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়া সবে শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত অর্থনীতির চাকায় গতি আসেনি। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ সহ্য করতে হচ্ছে দেশের গরিব মানুষকেই। তাঁদের দিকে তাকিয়ে এ বার দেশে একশো দিনের কাজের মতো প্রকল্পের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সওয়াল করেছেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তিকালীন সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। দেশের বিপুল অংশের গরিব মানুষকে সাহায্যের জন্য ইউপিএ সরকারের আমলে তৈরি হওয়া মহাত্মা গাঁধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট (এমজিএনআরইজিএ)-কে বিপুল ভাবে ব্যবহার করার জন্য মোদী সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন সনিয়া। তবে ওই প্রকল্প সনিয়ে মোদী সরকারকে বিঁধতেও ছাড়েননি তিনি। যদিও তাঁর মতে, এটা কখনই বিজেপি বনাম কংগ্রেসের রাজনৈতিক লড়াই করার সময় নয়।

সোমবার একটি সংবাদপত্রে লেখা কলামে সনিয়া দাবি করেছেন, ‘‘মহাত্মা গাঁধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট ২০০৫ একটি ভিত্তিগত ও যুক্তিপূর্ণ পদ্ধতিগত পরিবর্তনের একটি উজ্জ্বল নমুনা।’’ ইউপিএ সরকারের আমলে তৈরি হওয়া ওই আইন এবং প্রকল্পের পক্ষে ব্যাট ধরে এ দিন সনিয়া লিখেছেন, ‘‘এই প্রকল্প দরিদ্রদের মধ্যে দরিদ্রতম মানুষকেও ক্ষুধা এবং বঞ্চনা এড়াতে সক্ষম সকরে তোলে।’’ তাঁর অভিযোগ, মোদী সরকার ওই প্রকল্পকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করেছে এবং ওই প্রকল্পকে ধ্বংস করার চেষ্টাও করেছে। তাঁর মতে, ওই প্রকল্পকে বর্তমান সরকার অনিচ্ছাকৃত ভাবে বিশ্বাস করেছে। তাঁর মতে, দেশ জোড়া করোনা সঙ্কটের মধ্যে ক্ষুধা এবং দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়ার প্রধান অবলম্বন হয়ে উঠতে পারে একশো দিনের কাজের মতো প্রকল্প।

মহাত্মা গাঁধীর ‘ফ্রিডমস ব্যাটল’ বই থেকে উক্তি তুলে ধরে সনিয়া লিখেছেন, ‘‘যখন একটা আন্দোলনকে শেষ করার অস্ত্র হিসাবে উপহাস করা ব্যর্থ হয়ে গেল তখন সেটা সম্মান আদায় করে নিতে শুরু করল।’’ ওই প্রকল্পের সঙ্গে মহাত্মা গাঁধীর উক্তি জুড়ে দিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই সনিয়া নিশানা করেছেন মোদী সরকারকে। তাঁর দাবি, স্বাধীনতার পর দেশে এই মাপের প্রকল্প আর আসেনি।

আরও পড়ুন: সবাই জানে সীমান্তে কী হচ্ছে, লাদাখের ইঙ্গিত করে অমিতকে কটাক্ষ রাহুলের

এই প্রসঙ্গেই বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সনিয়া। তাঁর অভিযোগ, গত ছ’বছর ধরে ওই প্রকল্পের টুঁটি টিপে ধরার চেষ্টা করেছে মোদী সরকার। কিন্তু কর্মীদের অনবরত চাপ, আদালতের হস্তক্ষেপ এবং সংসদে বিরোধীরা সরব হওয়ার দরুণ সরকার পিছু হাঁটতে বাধ্য হয়েছে। তাঁর আরও অভিযোগ, কংগ্রেসের আমলে করা নানা প্রকল্পকেই নিজেদের বলে চালিয়ে দিচ্ছে বিজেপি। কিন্তু তা সত্ত্বেও গ্রামীণ ভারতের জন্য একশো দিনের কাজের মতো প্রকল্পের উপর বিজেপি সরকার খড়গহস্ত বলেও অভিযোগ সনিয়ার। তাঁর মতে, ‘‘করোনার মতো অতিমারি এবং তার জেরে তৈরি হওয়া দুঃখদুর্দশা মোদী সরকারের বৃত্ত সম্পূর্ণ করে দিয়েছে।’’ তাঁর মতে, অভূতপূর্ব দুর্ভোগ এবং আর্থিক মন্দার হাল খুঁজতে ইউপিএ সরকারের ওই ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পে গতি আনতে বাধ্য হয়েছে বর্তমান সরকার। তাঁর মতে, এখন শহর থেকে কাজ হারিয়ে গ্রামমুখী হয়েছেন শ্রমিকরা। তিনি আরও বলছেন, মানবতার এই অভূতপূর্ব সঙ্কটেই একশো দিনের কাজের প্রকল্পের ভূমিকা আরও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: বাজার খুললেও ভবিষ্যত্‌ ভয়ের, কারণ লকডাউনটা সঙ্কটের শিকড় নয়​

সনিয়া লিখেছেন, শুধু মাত্র মে-তেই এই আইনের আওতায় ২.১৯ কোটি মানুষ কাজের দাবি করেছেন যা গত আট বছরে ওই মাসে সর্বোচ্চ। সরকারের কাছে তিনি আবেদন করেছেন, ‘‘এটা জাতীয় সঙ্কটের সময়। এখন রাজনীতির করার সময় নয়। এটা শুধুমাত্র বিজেপি বনাম কংগ্রেসের ইস্যুও নয়।’’ গরিব মানুষের হাতে টাকা দেওয়ার পক্ষে অনেক আগে থেকেই সওয়াল করে আসছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় ও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজনের মতো অর্থনীতিবিদরা। এ দিন সেই একই দাবি তুলেছেন সনিয়াও।

Sonia Gandhi BJP Congress Coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy