হাতির ঘরে বাঘের বাসা!
দলমায় সত্যিই রয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার? দলমার জঙ্গলে এখন এ নিয়েই শুরু হয়েছে আলোড়ন। একটি ‘ভিডিও ফুটেজ’ থেকেই বাঘের উপস্থিতির কথা জানা গিয়েছে বলে দলমার বন দফতরের আধিকারিকদের একাংশ দাবি করছেন।
ওই ফুটেজে দলমার পাহাড়ের গভীর জঙ্গলে এক বাঘিনীকে শাবক-সহ ঘুরতে দেখা গিয়েছে। রাঁচির ডিএফও (ওয়াইল্ড লাইফ) কমলেশ পাণ্ডে দলমার জঙ্গলের দায়িত্বে রয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘দলমার জঙ্গলে সত্যিই বাঘের উপস্থিতি রয়েছে কিনা তা আরও খতিয়ে দেখা দরকার। যে ভিডিও ফুটেজে বাঘ ধরা পড়েছে সেই ফুটেজটি পরীক্ষা করা হচ্ছে।’’
বন দফতরের কর্মীরা জানাচ্ছেন, ‘‘বাঘ ধরা পড়েছে একদল পর্যটকের ভিডিও ক্যামেরায়। দলমার এক প্রাক্তন মুখ্য বনপালের কয়েকজন আত্মীয়স্বজন দলমার জঙ্গলে ঘুরতে এসেছিলেন। তাঁদেরই দাবি, ভোরবেলা জঙ্গলে তাঁরা জিপ নিয়ে ঘুরছিলেন। জঙ্গলের ভিডিও ছবি তুলছিলেন তাঁরা। হঠাৎই ওই ভিডিও ক্যামেরায় শাবক-সহ বাঘিনীটি ধরা পড়ে। তাঁরা জঙ্গলের সুঁড়িপথ ধরে বাঘটিকে চলে যেতেও দেখেন।
অপ্রত্যাশিতভাবে বাঘের দেখা পেয়ে রীতিমতো ঘাবড়ে যান তাঁরা। তড়িঘড়ি জিপ নিয়ে জঙ্গল-বাংলোতে ফিরে আসেন। ভিডিও ফুটেজটি বন দফতরের আধিকারিকদের দেখান। দেড় মিনিটের ওই ফুটেজটি দেখে শুরু হয় আলোড়ন। দলমায় পৌঁছে যান রাজ্য ওয়াইল্ড লাইফ বোর্ডের সদস্য ও ব্যাঘ্র-বিশারদ ডি এস শ্রীবাস্তব। তিনি বন দফতরের কর্মীদের জানিয়েছেন, পূর্ণ বয়স্ক বাঘটির বয়স ১০ বছরের আশপাশে। ওড়িশার সিমলিপাল জঙ্গল থেকে বাঘটি এসে থাকতে পারে। দলমার জঙ্গলের সঙ্গে সিমলিপালের যোগ রয়েছে। কোনও ভাবে বাঘটি সিমলিপাল থেকে তার বাচ্চাকে নিয়ে চলে আসতে পারে বলেই মনে করছেন তিনি।
শুধু ভিডিও ফুটেজই নয়, ধরা পড়েছে বাঘের ও তার বাচ্চার পায়ের ছাপও। তবে দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, দলমার জঙ্গলের কয়েকটি জায়গায় বন দফতরের সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো রয়েছে। সেই সব ক্যামেরায় কিন্তু বাঘটির কোনও ছবি এখনও ধরা পড়েনি। দলমায় বাঘের উপস্থিতি ঘোষণা করার আগে তাঁরা একশো ভাগ নিশ্চিত হতে চান।
২০১৪ সালের বাঘ-সুমারি অনুযায়ী সরকারি ভাবে ঝাড়খণ্ডে শুধুমাত্র পলামু টাইগার রিজার্ভেই বাঘ রয়েছে। সুমারির হিসেবে, সেখানে রয়েছে মাত্র তিনটে বাঘ। এখন দলমায় বাঘের অস্তিত্ব নতুন করে বন দফতরে হইচই ফেলেছে। বন দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘জঙ্গলে বাঘ থাকা মানে সেই জঙ্গলের ইকোসিস্টেম খুব ভাল। তবে সেই সঙ্গে জঙ্গলে চোরাশিকারির হানা দেওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে। তাই এখনই হইচই না করে পুরো বিষয়টি নিয়ে খুব সাবধানেই এগোতে চায় বন দফতর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy