Advertisement
E-Paper

স্থলপথে ঝুঁকি এড়াতে আকাশে নজর জঙ্গিদের

কাঁটাতারের বেড়া থাক বা না-থাক, স্থল-সীমান্ত ব্যবহারে ঝুঁকি রয়েছে। এখন তাই আকাশপথেও নজর পড়েছে জঙ্গিদের।গোয়েন্দা সূত্রের খবর, পাকিস্তান, আফগানিস্তান বা বাংলাদেশ থেকে জঙ্গিরা এখন সরাসরি উড়ানপথে ভারতে ঢ়ুকছে। আবার অনেকে নেপাল হয়েও পৌঁছে যাচ্ছে ভারতে।

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৬ ০৪:০৭

কাঁটাতারের বেড়া থাক বা না-থাক, স্থল-সীমান্ত ব্যবহারে ঝুঁকি রয়েছে। এখন তাই আকাশপথেও নজর পড়েছে জঙ্গিদের।

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, পাকিস্তান, আফগানিস্তান বা বাংলাদেশ থেকে জঙ্গিরা এখন সরাসরি উড়ানপথে ভারতে ঢ়ুকছে। আবার অনেকে নেপাল হয়েও পৌঁছে যাচ্ছে ভারতে।

গত কয়েক বছরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধরা পড়া জঙ্গিদের গতিবিধির খবর নিয়ে এমনই ধারণা হয়েছে গোয়েন্দাদের। তাঁদের মতে, এই রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের অরক্ষিত সীমান্ত এখন মূলত গরু পাচার, মাদক চোরাচালান ও জাল নোট পাচারের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু জঙ্গিরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই পথ এড়িয়ে চলছে।

গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, কিছু দিন আগেও মগজ-ধোলাই করা ভারতীয় যুবকদের পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশের সীমান্ত পেরিয়ে কখনও বাংলাদেশে নিয়ে গিয়ে, কখনও সেখান থেকে পাকিস্তানে উড়িয়ে নিয়ে গিয়ে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তার পরে সীমান্তের অরক্ষিত এলাকা দিয়ে তাদের ফেরত পাঠানো হত ভারতে। কিন্তু জঙ্গিদের সেই ছকে বদল এসেছে।

সম্প্রতি ঢাকার গুলশন এলাকার রেস্তোরাঁয় হামলায় নিরস্ত্র, নিরীহ মানুষদের গলায় ধারালো অস্ত্রের পোঁচ দিয়ে হত্যা করেছে। বর্ধমানে ধৃত যুবকের কাছ থেকেও ধারালো অস্ত্র পাওয়ার পরে সেই তত্ত্বই জোরালো হচ্ছে। জবাই করে খুনের বিষয়টি আইএস নিজেদের বৈশিষ্ট হিসাবে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চাইছে। এ জন্যও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। গোয়েন্দাদের একটি সূত্র জানাচ্ছে, গুলশনের রেস্তোরাঁয় হামলাকারীদের এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানের বালুচিস্তানে নিয়ে গিয়ে। তার পরে তাদের বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়া হয়। বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তান যাতায়াতের পুরোটাই করা
হয়েছে উড়ানপথে।

গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, পাকিস্তান বা আফগানিস্তান থেকে যে জঙ্গিরা এ দেশে যাতায়াত করছে, তারাও মূলত বিমানই ব্যবহার করছে এখন। পাকিস্তান বা আফগানিস্তান থেকে ঢাকায় উড়ান রয়েছে সরাসরি। বৈধ পাসপোর্ট নিয়ে তারা বাংলাদেশে ঢুকছে। সেখানে নতুন করে বাংলাদেশি পাসপোর্ট বানানো হচ্ছে। তার ভিত্তিতে ভিসার জন্য আবেদন করা হচ্ছে। সেই বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা নিয়ে ঢাকা থেকে সহজেই কলকাতায় পৌঁছে যাচ্ছে তারা। বৈধ টিকিট, বৈধ পাসপোর্ট-ভিসা দেখে অভিবাসন দফতরের সন্দেহের কারণ থাকছে না।

বাংলাদেশে দায়িত্বশীল এক ভারতীয় কূটনীতিক জানাচ্ছেন, মৌলবাদী সংগঠনের সঙ্গে যুক্তদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে বরাবরই বাড়তি কড়াকড়ি করা হয়। কিন্তু বহু সন্দেহজনক লোক এখন শাসক দলে যোগ দিয়ে তাদের নেতা বা জনপ্রতিনিধি হচ্ছেন। ফলে নজরদারি ফাঁক গলে সন্দেহভাজনদের ভিসা পেয়ে যাওয়ার একটা আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। ওই কূটনীতিকের কথায়, বাংলাদেশের মতো দেশে অনলাইন ভিসা ব্যবস্থা চালুর বিষয়টি কতটা যুক্তিযুক্ত, সেটাও ভাবার সময় এসেছে। কারণ বহু ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে দালালরাই অনলাইনে ভিসার আবেদন করে দেয়। কাগজপত্র ঠিক থাকায় ভিসা পেতেও অসুবিধা হয় না। ওই কূটনীতিক জানাচ্ছেন, কয়েক মাস আগে জাল নোট পাচারের মাথা হিসেবে ধরা পড়া এক বাংলাদেশির কাছে বৈধ চিকিৎসা ভিসা পাওয়া গিয়েছিল। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, প্রয়োজনীয় সব কাগজ পত্র ঠিকঠাক দেওয়াতেই তাকে ভিসা দেওয়া হয়েছিল।

ভারতে ঢোকার জন্য জঙ্গিরা আরও একটি রুট ব্যবহার করছে বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন। বিমানে নেপালে পৌঁছে একই কায়দায় পাসপোর্ট জমা রেখে তারা ঢুকে আসছে ভারতে। এক অফিসারের কথায়, ‘‘নেপাল সীমান্ত নিয়েও যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ রয়েছে। ওই সীমান্তের বিস্তীর্ণ এলাকা পাহাড়ি এবং অরক্ষিত। চেক পোস্টে কড়াকড়িও কম।’’ পাশাপাশি, ত্রিপুরা-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে আগরতলায় পৌঁছে সেখান থেকেও সহজেই বিমানে কলকাতায় পৌঁছে যেতে পারে জঙ্গিরা। বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা হচ্ছে সেখানেও।

Air-route terrrorist
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy