নাগরিক পঞ্জি উন্নয়নের ক্ষেত্রে রাজ্যের উপজাতিদের ক্ষেত্রে কোনও ভিত্তিবর্ষ না রাখার দাবি জানালো রাজ্যের আটটি ভাষার সাহিত্য সভা।
গুয়াহাটির বড়ো সাহিত্য সভা প্রেক্ষাগৃহে বড়ো, কার্বি, টিয়া, গারো, রাভা, ডিমাসা, দেউড়ি ও মিসিং সাহিত্য সভার প্রতিনিধিরা গত কাল এই সংক্রান্ত এক কর্মশালায় মিলিত হন। প্রায় ৪০০ সদস্য এই আলোচনায় অংশ নেন। সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়: উপজাতিরা অসমের আদি বাসিন্দা। কয়েক শতক ধরে এই উপজাতিরা রাজ্যের পাহাড়-জঙ্গলে বসবাস করায় ও তাঁদের জমির পাট্টা না থাকায় কোনও সরকারই তাঁদের ন্যায্য প্রাপ্য দেওয়ায় উদ্যোগী হয়নি। উপজাতিরাও সরকারি নথিপত্র সংগ্রহের ব্যাপারে অন্ধকারে ছিলেন। প্রশাসনের সঙ্গেই তাঁদের যোগাযোগ ক্ষীণ।
কিন্তু এখন, এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পর্যাপ্ত সরকারি নথি না থাকায় যদি রাজ্যের আসল ভূমিপুত্রদের নামই জাতীয় নাগরিক পঞ্জিতে না ওঠে তা চরম অন্যায় হবে। তাঁদের বক্তব্য, বহু সংগঠন নাগরিক পঞ্জির ভিত্তিবর্ষ ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ করার প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু স্থানীয় ভাষার সাহিত্যসভার প্রতিনিধিরা মনে করেন, অসমিয়া উপজাতিদের ক্ষেত্রে এই ভিত্তিবর্ষ রাখার প্রয়োজন নেই।
অসম পাবলিক ওয়ার্কস শীর্ষক সংগঠনটি অনেক দিন থেকেই দাবি করছে, যে পদবিগুলি কেবল অসমেই পাওয়া যায়, তাদের নাম সরাসরি নাগরিক পঞ্জিতে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। কারণ তাদের বহিরাগত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। অসম চুক্তি রূপায়ণের ক্ষেত্রে অসমীয়া কারা, সেই সংজ্ঞা নিয়েও রাজ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। আসু-সহ ২৫টি সংগঠন বিধানসভার স্পিকার প্রণব গগৈকে জানিয়েছে, ১৯৫১ সালের আগে অসমে আসা ব্যক্তিরাই অসমীয়া। অসম সাহিত্য সভার মত ছিল, অসমীয়াকে মাতৃভাষা হিসেবে বা প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ভাষা হিসেবে গ্রহণ করা ও অসমীয় সংস্কৃতিতে আপন করে নেওয়া ব্যক্তিরাই অসমীয়া। এই প্রসঙ্গেও আপত্তি জানান অন্যান্য ভাষার সাহিত্য সভার প্রতিনিধিরা। তাঁরা বলেন অসমের ভূমিপুত্র হলেই অসমীয়া ভাষা বা সংস্কৃতি গ্রহণ করতে হবে তার কী অর্থ? অসম চুক্তির ছ’নম্বর ধারা সংশোধন করে অসমীয়া শব্দ সরিয়ে অসমের ভূমিপুত্র শব্দটি অন্তর্ভুক্ত করা হোক। অসমীয়ার সংজ্ঞা এবং নাগরিক পঞ্জির ভিত্তিবর্ষ নিয়ে তাঁদের সিদ্ধান্ত স্মারকলিপি আকারে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে বলে সংগঠনের তরফে জানানো হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy