সংসদের বিভিন্ন রাজনৈতিক যুদ্ধে নীরবে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে সমর্থন করে এসেছে কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি (টিআরএস)। —ফাইল চিত্র।
২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের পর থেকে সংসদের বিভিন্ন রাজনৈতিক যুদ্ধে নীরবে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে সমর্থন করে এসেছে কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি (টিআরএস)। নানা বিষয়ে ভোটাভুটির সময়েও গত কয়েক বছর বিজেপির পাশেই থেকেছে টিআরএস। চলতি শীতকালীন অধিবেশনের দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার, দীর্ঘদিন পরে বিজেপি-বিরোধী বৈঠকে সক্রিয় হতে দেখা গেল টিআরএস-কে। মঙ্গলবার সকালে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সাংসদ মল্লিকার্জুন খড়্গের ঘরে গেলেন টিআরএস সাংসদ কে কেশব রাও। বুধবার লোকসভায় কৃষকদের দাবিদাওয়া নিয়ে প্ল্যাকার্ড নিয়ে ওয়েলে নেমে স্লোগানও দিতেও দেখা গেল টিআরএস সাংসদদের। বিরোধীদের যৌথ বিবৃতিতে সই করলেন কেশব রাও।
রাজনৈতিক শিবিরে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এই হাওয়া বদল কেন? এক সময়ে তো চন্দ্রশেখর রাও তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেডি-র মতো দলগুলিকে নিয়ে একটি অকংগ্রেসি ব্লকের কথা বলতেন। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, চন্দ্রশেখর রাওয়ের রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। ইউপিএ-র জোটসঙ্গী হিসেবে অন্ধ্রপ্রদেশের দ্বিখণ্ডণে বড় ভূমিকা নেওয়ার পরে কিছুটা নাটকীয় ভাবেই ২০১৪ সালে তিনি কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ভোটে লড়েন। লোকসভা এবং বিধানসভার ভোটে তেলেঙ্গনা কংগ্রেসকে নিশ্চিহ্ন করে দেন।
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, এ হেন নেতা যিনি মোদী সরকারের কাছ থেকে বিবিধ সুবিধে আদায় করেছেন, আবার দু’দিন পরে গেরুয়া শিবিরেই ঝুঁকে যেতে পারেন। তবে সূত্রের মতে, কিন্তু আজ যে চন্দ্রশেখর রাও সনিয়া গাঁধীর দলের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন তার কারণ তেলেঙ্গনার রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা। চন্দ্রশেখর রাওয়ের সরকারের সঙ্গে তেলেঙ্গনায় সংঘাত বাড়ছে বিজেপি-র। সে রাজ্যে ক্রমশ বৃহৎ শক্তি হিসাবে আত্মপ্রকাশ করছে মোদীর দল। সেখানে বিজেপি-র যত শক্তি বাড়বে নয়াদিল্লিতে টিআরএস-কে মোদীর বিরুদ্ধে ততটাই আক্রমণাত্মক হতে দেখা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর এই পরিস্থিতির সুযোগ নেওয়ার জন্য কংগ্রেসও সক্রিয় বলেই জানা গিয়েছে। সম্প্রতি হুজুরাবাদ বিধানসভা উপনির্বাচনে বিরাট ব্যবধানে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী ইটালা রাজিন্দর। এই রাজিন্দর টিআরএস-এর মন্ত্রিসভা ত্যাগ করে বিজেপি-র দিকে যান। তা ছাড়া যে ভাবে বিজেপি তেলেঙ্গনা থেকে ৪টি লোকসভা আসন ছিনিয়ে নিয়েছে এবং সাম্প্রতিক গ্রেটার হায়দরাবাদের পুরভোটে টিআরএস-কে চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে, তাতে চন্দ্রশেখর রাওয়ের অস্বস্তির যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy