E-Paper

চাবাহারে ভারতের উপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা তুলল আমেরিকা

ইরানের দক্ষিণ উপকূলে সিস্তান-বালুচিস্তান অঞ্চলে অবস্থিত চাবাহার বন্দর ভারত আর ইরান যৌথভাবে গড়ে তুলছে। বন্দরের একটি টার্মিনাল সম্পূর্ণভাবে ভারত পরিচালনা করে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ০৫:৩৩

ভারতের উপরে চাপানো আমেরিকার একরাশ শুল্ককাঁটার মধ্যে খানিক হলেও স্বস্তির হাওয়া মিলল।

গত মাসে ইরানের চাবাহার বন্দর ব্যবহারে ভারতের উপরে যে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিল আমেরিকার ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন, আগামী ৬ মাসের জন্য সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হল। আজ বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এই খবর জানিয়ে বলা হয়েছে, গতকাল অর্থাৎ ২৯ অক্টোবর থেকে ওই ছাড় চালু হয়েছে।

ইরানের দক্ষিণ উপকূলে সিস্তান-বালুচিস্তান অঞ্চলে অবস্থিত চাবাহার বন্দর ভারত আর ইরান যৌথভাবে গড়ে তুলছে। বন্দরের একটি টার্মিনাল সম্পূর্ণভাবে ভারত পরিচালনা করে। এখানে ভারতের কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। পাকিস্তানকে এড়িয়ে ভারত মহাসাগরের মাধ্যমে আফগানিস্তান-সহ মধ্য এশিয়া, ইউরোপ ও রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এই বন্দর ভারতের কাছে কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে আফগানিস্তানে ভারতের সাহায্য এবং পণ্য পৌঁছতে এই বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ২০২৪ সালের ১৩ই মে ইরানের সঙ্গে চাবাহার নিয়ে দশ বছরের জন্য একটি চুক্তি সই করেছিল ভারত। তাতে ওই বন্দরের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এ দিকে পরমাণু চুক্তি নিয়ে ইরানের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক ক্রমাগত অবনতি হওয়ায়, ইরানের উপরে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা চাপাতে শুরু করে আমেরিকা। সেই পথে হেঁটে গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে চাবাহার পরিচালনাকারী সংস্থাগুলির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারির কথা ঘোষণা করে ট্রাম্প সরকার। সেই সময়ে আমেরিকার বিদেশ দফতরের সহকারী মুখপাত্র টমাস পিগাট জানান, চাবাহারে কাজ চালানোর জন্য ২০১৮ সালে কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছিল, যা এখন প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে। ইরানকে একঘরে করার যে কৌশল ডোনাল্ড ট্রাম্প নিয়েছেন, এই ঘোষণা তারই অংশ। তিনি আরও বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্ত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে চালু হবে। এর পরে যারা চাবাহার বন্দর পরিচালনায় যুক্ত থাকবে বা অন্যান্য কাজকর্মে শামিল হবে, তারা আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবে।’’

গত এক মাস ধরে ভারত চাবাহারের উপরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে লাগাতার ‘ট্র্যাক-টু’ দৌত্য চালিয়ে গিয়েছে। তাই আজকের এই নিষেধাজ্ঞা রদের ঘোষণা শুধু চাবাহারের জন্য নয়, ভারতের কূটনৈতিক দৌত্যের সাফল্য বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।

তবে নরেন্দ্র মোদী সরকারের সামনে এখনও বিস্তর চ্যালেঞ্জ রয়েছে। রাশিয়া থেকে তেল কেনার ‘শাস্তি’ হিসেবে ভারতের উপরে জরিমানা-সহ বিপুল বাণিজ্য-শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা। লাগাতার আলোচনার মাধ্যমে সেই বোঝা কমানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নয়াদিল্লি। এই মুহূর্তে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক চুক্তি নিয়ে চূড়ান্ত রফা চলছে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল আজ বলেছেন, ‘‘বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করতে আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। আরও কিছু সিদ্ধান্ত হলেই আমরা বাণিজ্য মন্ত্রককে সে বিষয়ে অবগত করব।’’ তবে বিভিন্ন কূটনৈতিক শিবিরের প্রশ্ন, সাময়িক ভাবে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য সরাসরি না হলেও ভারতকে এর বিনিময়ে কী মূল্য চোকাতে হবে হবে, তা ক্রমশ প্রকাশ্য।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

India UK Trade India USA

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy