Advertisement
E-Paper

‘আমার সন্তানকে বাঁচিয়ে তুলুন’! সদ্যোজাতের দেহ ব্যাগে ভরে জেলাশাসকের কাছে হাজির উত্তরপ্রদেশের যুবক

যুবকের নাম বিপিন গুপ্ত। এক হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন তিনি। প্রসবযন্ত্রণা ওঠায় তাঁর স্ত্রীকে ভর্তি করিয়েছিলেন লখিমপুর খেড়ির একটি হাসপাতালে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২৫ ১৪:১১
(বাঁ দিকে) সন্তানহারা পিতা বিপিন যাদব। (ডান দিকে) ব্যাগে সন্তানের দেহ ভরে জেলাশাসকের দফতরে বিপিন। ছবি: সংগৃহীত।

(বাঁ দিকে) সন্তানহারা পিতা বিপিন যাদব। (ডান দিকে) ব্যাগে সন্তানের দেহ ভরে জেলাশাসকের দফতরে বিপিন। ছবি: সংগৃহীত।

বাঁ হাতে ধরা কাঁধে ঝোলানোর একটি ব্যাগ। ডান হাতে দরখাস্ত লেখা একটি কাগজ। কাঁদতে কাঁদতে জেলাশাসকের দফতরে ঢুকলেন এক সন্তানহারা পিতা। জেলাশাসককে দেখেই তাঁর করুণ আর্তি, ‘‘স্যর, আমার বাচ্চাটাকে বাঁচিয়ে তুলুন। স্ত্রীকে আমি কী জবাব দেব। ও বার বার সন্তানের খোঁজ করছে।’’

এক যুবকের এমন আর্তি শুনে প্রথমে কিছুটা স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন জেলাশাসক। একটু ধাতস্থ হয়ে জিজ্ঞাসা করেন কী হয়েছে। তখন ওই যুবক হাতে ধরা ব্যাগ দেখিয়ে বলেন, ‘‘আমার সন্তানকে ওরা মেরে ফেলেছে।’’ জেলাশাসক আবার জিজ্ঞাসা করেন, ব্যাগে কী আছে? পরের জবাব শুনে হতচকিত হয়ে যান জেলাশাসক। যুবক বলেন, ‘‘স্যর, এর মধ্যে আমার সদ্যোজাত সন্তানের দেহ রয়েছে।’’ এই বলে ব্যাগ খুলে দেখানোর চেষ্টা করেন। শুক্রবার এমনই এক দৃশ্যের সাক্ষী থাকল উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেড়ি।

যুবকের নাম বিপিন গুপ্ত। এক হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন তিনি। প্রসবযন্ত্রণা ওঠায় তাঁর স্ত্রীকে ভর্তি করিয়েছিলেন লখিমপুর খেড়ির একটি হাসপাতালে। বিপিনের অভিযোগ, স্ত্রীকে ভুল ওষুধ খাওয়ানোয় তাঁর সন্তানের মৃত্যু হয়েছে গর্ভেই। বিপিন বলেন, ‘‘জ্ঞান ফেরার পর থেকে স্ত্রী বার বার একটা কথাই জানতে চাইছে, সন্তান কোথায়? কোন মুখে ওকে আমি বলব যে, আমাদের সন্তান আর বেঁচে নেই।’’ ন্যায়বিচার পেতে তাই সন্তানের দেহ ব্যাগে ভরে জেলাশাসকের দফতরে ছুটে আসেন বিপিন। তাঁকে সমস্ত কথা খুলে বলেন।

জেলাশাসক দুর্গাশক্তি নাগপাল জানিয়েছেন, বিপিনের স্ত্রীর চিকিৎসার সমস্ত খরচের ব্যবস্থা করে দেবেন তিনি। শিশু উন্নয়ন আধিকারিক অভিষেক সিংহ টাইমস অফ ইন্ডিয়া-কে বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তের পর ওই হাসপাতালটিকে সিল করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু গাফিলতির প্রমাণ মিলেছে। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে। আপাতত হাসপাতালের সমস্ত রোগীকে জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। সন্তানহারা ওই পরিবারের পাশে রয়েছে জেলা প্রশাসন।’’

বিপিন জানিয়েছেন, তিনি কাজের সূত্রে হরিদ্বারে ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রী রুবিকে হাসপাতালে ভর্তি করায় তাঁর পরিবার। মাঝরাতে তাঁর ভাই ফোন করে জানান, রুবির শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। হাসপাতাল থেকে জানানো হয় নর্ম্যাল ডেলিভারির জন্য ১০ হাজার টাকা দিতে হবে। আট হাজার টাকা জমা করা হয়েছিল। চিকিৎসকদের কাছে অনুরোধ জানান, দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা হোক। অভিযোগ, টাকা জমা দেওয়ার পরেও চিকিৎসা শুরু হয়নি। বিপিনের দাবি, ‘‘অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার জন্য অনুরোধ করি। কিন্তু বাকি টাকা জমা দিতে বলেন। স্ত্রীর অবস্থা আরও খারাপ হওয়ায় আমাদের জানানো হয় ওকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে। পাশেরই একটি হাসপাতালে নিয়ে যাই রুবিকে। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, গর্ভেই মৃত্যু হয়েছে শিশুর।’’ বিপিনের অভিযোগ, স্ত্রীর শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাঁকে একটি ওষুধ খাওয়ানো হয়েছিল হাসপাতাল থেকে। তার পরেই শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়ে। হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।

Uttar Pradesh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy