উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের বার করে আনার জন্য চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: পিটিআই।
উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটক শ্রমিকদের খিচুড়ির পর এ বার রাতের খাবারে দেওয়া হল পোলাও, মটর পনির এবং দু’টি করে রুটি। শ্রমিকদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই খাবারের ধরনে বদল আনা হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে পাইপের ভিতর দিয়ে প্রায় দেড়শোটি খাবারের প্যাকেট শ্রমিকদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে ৬ ইঞ্চির খাবার সরবরাহকারী একটি পাইপের মাধ্যমে সুড়ঙ্গের ভিতরে খাবারের প্যাকেট পাঠানোর পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে ফলও। সঞ্জিত রানা নামে এক রাঁধুনি বলেন, ‘‘চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানেই সমস্ত রান্না করেছি। হজম করতে অসুবিধা হবে না এমন খাবারই রান্নার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কম তেলমশলা দিয়ে তাই ভেজ পোলাও এবং মটর পনির রান্না করেছি। মাখন দিয়ে রুটিও বানিয়েছি।’’
উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে যুক্ত অন্য এক রাঁধুনি এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘দেড়শোর কাছাকাছি প্যাকেট পাঠানো হয়েছে সুড়ঙ্গের ভিতর। প্রতিটি প্যাকেটে নির্দিষ্ট পরিমাণ পোলাও, পনির এবং দু’টি করে রুটি রয়েছে।’’ অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে খাবারের পাশাপাশি ৫ থেকে ১০ কেজি ওজনের ফল পাঠানো হয়েছে। আপেল, লেবু থেকে শুরু করে পাঁচ ডজন কলাও শ্রমিকদের জন্য পাঠানো হয়েছে। সোমবার অবশ্য পাইপের মধ্য দিয়ে বোতলের মাধ্যমে গরম খিচুড়ি পাঠানো হয়েছিল। শ্রমিকদের যেন মানসিক অবসাদ গ্রাস না করে সে কারণে পাঠানো হচ্ছে অ্যান্টি ডিপ্রেসান্ট ওষুধও।
জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) তরফে জানানো হয়েছে, সুড়ঙ্গের ভিতর থেকে শ্রমিকদের বার করে আনার প্রক্রিয়া সহজ নয়। সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে, কিন্তু উদ্ধারকাজ সম্পন্ন করতে ঠিক কত দিন লাগবে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না বলেই জানিয়েছেন এনডিআরএফ মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল সইদ আটা হাসনাইন। তিনি বলেন, ‘‘সুড়ঙ্গের ভিতর পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন এবং জল রয়েছে। খাবারদাবারের কোনও অসুবিধা হচ্ছে না। শ্রমিকরাও সুরক্ষিত রয়েছেন।’’ তিনি জানান, শ্রমিকেরা যেন মানসিক দিক দিয়ে ভেঙে না পড়েন তাই কয়েক জন শ্রমিকের পরিজনকে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসা হয়েছে। নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গের কাছাকাছি হোটেলে তাঁদের থাকার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সইদের বক্তব্য, পরিবার-পরিজনের সঙ্গে যত বেশি যোগাযোগ থাকবে, শ্রমিকদের মনের জোর তত বেশি বাড়বে।
গত ১২ নভেম্বর উত্তরকাশী জেলার ব্রহ্মকাল-যমুনোত্রী জাতীয় সড়কের উপর সিল্কিয়ারা এবং ডন্ডালহগাঁওের মধ্যে নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গের একাংশ ধসে পড়ে। সেই থেকে সাড়ে আট মিটার উঁচু এবং প্রায় দু’কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গে আটকে রয়েছেন শ্রমিকেরা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের তিন জন। সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের পাইপের সাহায্যে খাবার, অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। জোরকদমে চলছে উদ্ধারকাজ। তবে এখনও কাউকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy