Advertisement
২১ মে ২০২৪

রাজবাড়িতে বসুন্ধরা, সুর নরম মহারাজার

ত্রিপুরার মহারাজা প্রদ্যোত কিশোর মানিক্য কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তিনিই এখন রাজ্যে কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী সভাপতি। এ বার বিধানসভা ভোটের আগে তাঁকে দলে টানার চেষ্টা করেছিল বিজেপি।

প্রদ্যোত কিশোর মানিক্য।

প্রদ্যোত কিশোর মানিক্য।

সন্দীপন চক্রবর্তী
আগরতলা শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৮ ০৩:৩৩
Share: Save:

উজ্জ্বয়ন্ত প্রাসাদ মানেই কংগ্রেস! পর পর তিন চালে ত্রিপুরার সেই প্রাসাদেরই মন জয় করে নিল সদ্য ক্ষমতায় আসা বিজেপি সরকার।

ত্রিপুরার মহারাজা প্রদ্যোত কিশোর মানিক্য কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তিনিই এখন রাজ্যে কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী সভাপতি। এ বার বিধানসভা ভোটের আগে তাঁকে দলে টানার চেষ্টা করেছিল বিজেপি। ভোটের পরে সেই বিজেপি সরকারের পদক্ষেপ দেখে আপাতত গেরুয়া বিরোধিতায় রাশ টেনে রাখবেন বলে মনস্থ করেছেন মহারাজ প্রদ্যোত। রাহুল-সঙ্গী প্রদ্যোতের এই অবস্থান নিঃসন্দেহে বিপ্লব কুমার দেবের সরকারকে বাড়তি স্বস্তি দিচ্ছে!

ভোটের আগে আগরতলার রাজবাড়িতে গিয়ে প্রদ্যোতের সঙ্গে দেখা করেছিলেন বিজেপির দুই নেতা সুনীল দেওধর ও হিমন্তবিশ্ব শর্মা। ভোটের ফলে এমনিই গুঁড়িয়ে গিয়েছে কংগ্রেস! তার পরে প্রদ্যোতের কাকা জিষ্ণু দেববর্মাকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী করেছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব আলাদা করে কথা বলেছেন প্রদ্যোতের সঙ্গে। আবার বিপ্লবের মন্ত্রিসভা প্রথম বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্যের নামে আগরতলা বিমানবন্দরের নতুন নামকরণের প্রস্তাব কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হবে। যা ছিল রাজ পরিবারের বহু দিনের দাবি। শুধু এখানেই শেয নয়! প্রদ্যোতের ঠাকুরদার হাতে তৈরি বিমানবন্দর শেষমেশ নির্মাতার নামেই নামাঙ্কিত হতে চলেছে, এই খবর পৌঁছে দিতে শনিবার উজ্জ্বয়ন্ত প্রাসাদে হাজির হয়েছিলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে। সঙ্গে তাঁর সাংসদ-পুত্র দুষ্মন্ত।

এর পরে যা হওয়ার ছিল, তা-ই হচ্ছে! প্রদ্যোত বলছেন, ‘‘সিপিএমের অপশাসন থেকে রাজ্যটার মুক্তি দরকার ছিল। সেই মুক্তি এসেছে। সিপিএম কখনও রাজ পরিবারকে প্রাপ্য মর্যাদা দেয়নি। বিজেপি সরকার সিপিএমের চেয়ে ভাল কাজ করবে বলে আমি আশাবাদী।’’ তিনিও কি তা হলে বিজেপির পথেই এ বার পা বাড়াবেন? তরুণ কংগ্রেস নেতার জবাব, ‘‘বিজেপি ২০১৩ সালে ত্রিপুরায় যে জায়গায় (১.৩% ভোট) ছিল, কংগ্রেস এখন সেখানে (১.৮% ভোট) এসে দাঁড়িয়েছে। নতুনদের নিয়ে নতুন করে শুরু করতে হবে কংগ্রেসকে। আমি অন্তত চার মাস বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বলব না। গঠনমূলক বিরোধী ভূমিকা থেকে দেখব, সরকার কী কাজ করে।’’ তাঁর এমন মন্তব্যে জল্পনার গতি স্বাভাবিক ভাবেই বেড়ে গিয়েছে ত্রিপুরা এবং দিল্লির রাজনৈতিক শিবিরে!

বসুন্ধরা অবশ্য উজ্জ্বয়ন্ত প্রাসাদে যাওয়াকে তাঁর ‘ব্যক্তিগত কর্মসূচি’ হিসেবেই রাখতে বলছেন। পারিবারিক সম্পর্কে বসুন্ধরা প্রদ্যোতের মাসি। মাসতুতো দাদা দুষ্মন্তের সঙ্গে প্রদ্যোতের সমীকরণ ভাল। প্রদ্যোতের কথায়, ‘‘সম্পূর্ণ বিপরীত রাজনৈতিক অবস্থানের মধ্যেও পারিবারিক সম্পর্ক রাখতে পারা তো ভাল ব্যাপার!’’

তবে রাজনৈতিক অবস্থান কত দিন বিপরীত থাকবে, জল্পনা এখন সেটাই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE