সাংসদ মহুয়া মৈত্র (বাঁ দিকে) এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
রাজনৈতিক বিতর্ক রাজ্যের উন্নয়নে ধাক্কা দিক, তা চাইছে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। মহুয়া মৈত্রকে নিয়ে বিতর্ক ও রাজ্যে আদানি গোষ্ঠীর মতো শিল্পসংস্থার লগ্নি—এই দু’টিকে রাজ্য সরকার আলাদা বিষয় হিসেবেই দেখতে চাইছে।
তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র নিয়মিত ভাবেই আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নানা বেনিয়মের অভিযোগ তুলছেন। তাঁর দাবি, সে কারণেই তাঁকে বিপদে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। অন্য দিকে রাজ্যে তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্পে আদানি গোষ্ঠীকে লগ্নিতে আহ্বান জানানো হয়েছে। আজ দিল্লিতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় পশ্চিমবঙ্গের প্যাভিলিয়ন উদ্বোধন করতে এসে রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী শশী পাঁজাকে এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র সংক্রান্ত বিতর্কের ফলে কি রাজ্য সরকারের সঙ্গে শিল্পপতিদের সম্পর্ক বা রাজ্যে আদানিদের লগ্নিতে প্রভাব পড়তে পারে?
রাজ্যের মন্ত্রী তার জবাবে বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টিকে সে ভাবে দেখছি না।’’ শশীর কথায়, ‘‘তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দরের বড় প্রকল্প রয়েছে। যার আগ্রহপত্র (লেটার অব ইনটেন্ট) আদানি গোষ্ঠীকে দেওয়া হয়েছে। আমরা ওদের জবাবের জন্য অপেক্ষা করছি। কেন্দ্রীয় সরকারের জাহাজ মন্ত্রক, পরিবেশ মন্ত্রকের ছাড়পত্রেরও প্রয়োজন রয়েছে। গত বছরই শিল্পপতি গৌতম আদানির ছেলে করণ আদানির হাতে লেটার অব ইনটেন্ট তুলে দেওয়া হয়েছিল। আমরা চাই না, রাজনীতি উন্নয়নকে ছাপিয়ে যাক। কিছু লোকের উদ্দেশ্য হল, পশ্চিমবঙ্গে কিছুই যাতে না হয়। আমরা তার মোকাবিলা করছি। আমরা রাজ্যের উন্নয়নের কাজ করছি। মানুষের রায় আমাদের নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে রয়েছে।’’
আগামী সপ্তাহেই কলকাতায় বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। সেখানে প্রথম সারির সমস্ত শিল্পপতিকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন শশী পাঁজা।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি মহুয়াকে নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গে বলেছিলেন, যাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে লড়তে চান, সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, আদানিদের নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তাঁদের নিশানা করা হচ্ছে। আজ শশী বলেছেন, ‘‘নির্বাচিত সরকারের বদনাম করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যেখানে তৃণমূল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে, সেই বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ তৈরির পরে, তার পরে তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে হেনস্থাকরা হচ্ছে।’’
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় পশ্চিমবঙ্গের প্যাভিলিয়নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কী ভাবে রাজ্যের নিজস্ব পণ্য, পর্যটন ক্ষেত্রকে বিশ্বের বাজারে মেলে ধরতে চাইছে, তা তুলে ধরা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের প্যাভিলিয়নে যেখানে রামমন্দিরের আদলে মূল মঞ্চ সাজানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গেরপ্যাভিলিয়নে সেখানে দুর্গাপুজোর মণ্ডপ থেকে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল থেকে রাজভবনের প্রধান ফটক তুলে ধরা হয়েছে। রাজ্যের ছোট-মাঝারি শিল্প, স্বনির্ভর গোষ্ঠী, খাদি, বস্ত্র, রেশম শিল্পী, মহিলা সমবায় মহাসঙ্ঘ, কৃষিপণ্য বিপণন, আদিবাসী উন্নয়ন দফতরের পণ্যও তুলে ধরা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার এ বার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার থিম ঠিক করেছে ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’। শশী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বিশ্ব বাংলার লোগো তৈরি করেছেন, তার মধ্যেই তো বসুধৈব কুটুম্বকম-এর ভাবনা সুন্দর ফুটে উঠেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy